‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, সরাসরি কর্মসূচিতে যেতে হবে’

‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, সরাসরি কর্মসূচিতে যেতে হবে’

ঢাকা, ৪ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমরা গর্ব করি। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পিটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর তাকে বিনা অপরাধে রিমান্ডে নিয়ে যাচ্ছে। আজ এখানে অনেকের ইচ্ছা থাকলেও আসতে পারেননি। এটা এখন একটা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এই মৃত্যুপুরীর অবসান কে ঘটাবে? এখন আর কোনো সময় নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। যে কয়জন আসুক তাদের নিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। আমরা এখন বিপর্যয়ের মুখে। এখন আর মানববন্ধন, বিবৃতি এগুলোর সময় নেই। এখন আমাদের সরাসরি কর্মসূচিতে যেতে হবে। একজন হোক দুইজন হোক তাদের নিয়ে মাঠে থাকতে হবে।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হককে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মানবন্ধনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের ঢোকার মুখে একটা তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে, যার নাম মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ। এই তোরণ দিয়ে এই ইতিহাসের বুকে পা ফেলে যখন আপনারা এইখানে ঢুকবেন, এখানে অপরাজেয় বাংলা দেখবেন, শহীদ মিনার দেখবেন প্রত্যেকটি জায়গা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি সদস্যের সংগ্রামের চিহ্ন নিয়ে আছে। অথচ আমরা আশ্চার্য হয়ে দেখি, একটি আন্দোলন, একটি দাবি এবং যে দাবির যৌক্তিকতা শুধু আজকে নয়, বহুদিন ধরে। আমরা দেখেছি, সরকারি পর্যায় থেকে একটা কমিটিও গঠন করা হয়েছে দ্রুত ফলাফল দেয়ার জন্য।

তিনি বলেন, অভিভাবকদের কষ্টার্জিত অর্থে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলে। তাদের সন্তানদের দায়িত্ব নিশ্চিত করা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। সবাই দেখেছেন বিভিন্ন মিডিয়াতে। যে ধরনের নৃশংসতা চালানো হলো। এর কোনো ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। হতভম্ব হয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই ধরনের একটি নির্যাতন সবার চোখের সামনে কীভাবে ঘটে? শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। চোখের সামনে এই ধরনের বর্বর আক্রমণ চলছে, তাতে উদ্বিগ্ন হয়েই অভিভাবক কিছু মানুষ গতকাল প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের কনসার্ন সেখানে জানাতে গিয়েছেন। তাদের সেখানে বলা হয়েছে, আপনারা সেখানে দাঁড়াতেই পারবেন না।

গীতি আরা নাসরীন বলেন, শুধু তাই না, শিক্ষক ফাহমিদুল হকের কথা বলছি না। প্রত্যেকটি নাগরিকের এই অধিকার রয়েছে। উদ্বেগ প্রকাশ করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু এই উদ্বেগ প্রকাশ করতে গেলে তাদের কীভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে, লাঞ্ছিত করা হয়েছে। অত্যাচার-নির্যাতনের তদন্ত চাই, বিচার চাই।

অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী বলেন, আমি গত কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করছি যে, এই ঘটনাগুলো ঘটছে। এটা কেমন বিশ্ববিদ্যালয়, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমরা গর্ব করি। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পিটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর তাকে বিনা অপরাধে রিমান্ডে নিয়ে যাচ্ছে। এগুলোর বিচার দাবি করছি।

এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানযীম উদ্দিন খান, সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৫৫০ঘ.)