ব্যক্তিগত শত্রুতা: ঢাবি শিক্ষার্থীকে কয়েক দফা মেরে থানায় দিলো ছাত্রলীগ

ব্যক্তিগত শত্রুতা: ঢাবি শিক্ষার্থীকে কয়েক দফা মেরে থানায় দিলো ছাত্রলীগ

ঢাকা, ৭ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক ছাত্রকে কয়েক দফায় মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে জানা যায়।

ভুক্তভোগীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে। যদিও মারধরকারীদের পক্ষ থেকে সে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী আহম্মেদ উল্লাহ সাদ্দাম ইন্সটিটিউটের সান্ধ্যকালীন কোর্সে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। বুধবার দিবাগত রাত ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত বেশ কয়েক দফায় প্রথমে ঢাকা কলেজের ভিতরে নিয়ে এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন এনে মারধর করা হয়। মারধর শেষে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।

জানা গেছে, বুধবার রাত ৯ টার দিকে সমাজ কল্যাণ ইনস্টিটিউট থেকে ক্লাস করে বেরোনোর পর আহমেদ উল্লাহ সাদ্দামকে বিশ্ববিদ্যালয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউসার আল আমিনসহ অন্তত ১০-১৫ জন ধরে নিয়ে যায়। প্রথমে তারা তাকে ঢাকা কলেজের পুকুরের পাড়ে নিয়ে মারধর করে।

মারধরের এক পর্যায়ে তাকে গাঁজা ও ফেন্সিডিল নিয়ে ঘুরে এমন স্বীকারোক্তি দিতে বলা হয়। কিন্তু সে স্বীকারোক্তি না দেয়ায় তাকে আরও মারধর করে। এরপর তাকে তার বাসা থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতাদের দিতে বলা হয়। কিন্তু সেটাও না করায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কয়েক দফা মারধরের পর সে বিএনপি করে এই মর্মে স্বীকারোক্তি আদায় করে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। এসময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে জানা গেছে, মারধরের শিকার আহমেদ উল্লাহ সাদ্দাম ও ছাত্রলীগ নেতা কাউসার আল আমিন উভয়ের গ্রামের বাড়ি পাবনাতে। কাউসার আল আমিনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা। সেই সূত্রে তিনি একজন কোটাধারী। আহমেদ উল্লাহ সাদ্দাম তার ফেসবুকে কোটার বিপক্ষে লেখালেখি করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কাউসার তাকে মারধর করে। মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কাওসার আল আমিন অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, আপনি ভুল জায়গায় কল করেছেন। পরে অভিযুক্তির বিষয়ে জানালে তিনি বলেন আপনি দেখা করেন।

চাঁদা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার কাছে কে অভিযোগ করেছে? যে অভিযুক্ত (সাদ্দাম) সে তো অলরেডি থানায় আছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে কল দিয়ে ও খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, তাকে পুলিশে দেয়া হয়েছে কিছু তথ্য জানার জন্য। কি তথ্য জানার জন্য এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

জিজ্ঞাসাবাদ করে আমাকে জানাবে কেন ওকে দেয়া হয়েছে এবং কি করেছে। তাকে (প্রক্টরকে) কি কারণে পুলিশে দেয়া হচ্ছে তা জানানো হয়নি বলে বলেন তিনি।

পুলিশে সোপর্দের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তা জাফর আলী বিশ্বাস জানান, ওই ছাত্র তাদের কাছে আছে। তার ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। কেন তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ বলে বিএনপি করে, কেউ বলে জামায়াত করে। ঘটনাটি তারা তদন্ত করছেন বলে জানান তিনি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/০৯২৫ঘ.)