ঢাবি ভিসিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা

ঢাবি ভিসিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা

ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি ড. মো. আখতারুজ্জামানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সম্পন্ন করতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এ মামলা করা হয়।

বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। মামলার অন্য দুই বিবাদী হলেন- ঢাবির প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানি ও ট্রেজারার ড. কামাল উদ্দিন।

মনজিল মোরসেদ বলেন, গত ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের তার এক নির্দেশে ৬ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময়ের মধ্যে নির্বাচন না দেয়ায় সংশ্লিষ্টদেরকে একটি আইনি নোটিশ পাঠান। কিন্তু সে নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। আগামী রবিবার এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে।

এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ভিসিসহ তিনজনকে আইনি নোটিশ পাঠান তিনি।

এর আগে ডাকসু নির্বাচনে পদক্ষেপ নিতে ৩১ শিক্ষার্থীর পক্ষে ২০১২ সালের ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর ও ট্রেজারারকে লিগ্যাল নোটিশ দেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই নোটিশের কোনো জবাব না দেয়ায় ২০১২ সালে ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে রিট আবেদন করা হয়।

এরপর ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। বিবাদী ছিলেন শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর।

রিটকারীরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র আলী আসিফ সাওন, নাদিম মাহমুদ, এহসানুল হাসান, ফাহিম হোসেন মজনু, আলম ভূইয়া, আশিকুর রহমান, রিয়াদুল ইসলাম, শোয়েব রানা, রিয়াজউদ্দৌলা প্রধান, মো. রুহুল আমিন, সৌমিত্র দাস শুভ্র, আবদুল্লাহ আল হোসেন, আবদুর রহিম, ফরিদুল ইসলাম, এনামুল হক, সাইদুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, রিয়াজুল করিম, রাসেল কবির, আবু মুসা, নাসির উদ্দিন, হুমায়ূন কবির, সবিত ইবনে আনিস, আমির খসরু এবং রায়হান রাজু।

রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের ২৭ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি অধ্যাপক আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ডাকসু নির্বাচনের পর এর সময়সীমা হবে এক বছর। পরে ৩ মাস নির্বাচন না হলে বিদ্যমান কমিটি কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। এ সিদ্ধান্তের পর ডাকসু ভেঙে দেওয়া হয়।

পরে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এছাড়া ডাকসু নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

এ সংক্রান্ত এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। কিন্তু সে রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় তাদের নোটিশ প্রেরণ করেন রিটকারী আইনজীবী।

সাত দিনের মধ্যে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নোটিশপ্রাপ্ত তিনজনের বিরুদ্ধে হাইকার্টে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলেও ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবি ভিসিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বুধবার আদালত অবমাননার মামলা করা হয়।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ৬ জুলাই ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৭৪৫ঘ.)