শুভর মাথায় লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করা হয়

দোকান কর্মচারীর মাথা ফাটালেন ঢাবির ছাত্রলীগ নেতা

দোকান কর্মচারীর মাথা ফাটালেন ঢাবির ছাত্রলীগ নেতা

ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এলাকায় এক ওষুধের দোকানে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধে। এতে দোকানের শুভ (৩২) নামের এক কর্মচারীর মাথা ফেটে যায়।

রবিবার রাতে ঢামেকের সেবা ফার্মেসিতে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় শুভকে ঢামেকে ভর্তি করা হয়।

দুই ছাত্রলীগ নেতার একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও অপরজন সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হাসান ঝন্টু।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই দুই ছাত্রলীগ নেতা রাতে সেবা ফার্মেসিতে কিছু ওষুধ কিনতে আসেন। ওই ওষুধগুলো দোকানে না থাকায় তাঁরা অন্য জায়গা থেকে নিয়ে আসতে বলেন। তখন দোকান কর্মচারী শুভ কাজের ব্যস্ততার কারণে তা আনতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষেপে যান দুই ছাত্রলীগ নেতা। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে শুভর মাথায় লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করা হয়। আঘাতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শুভকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে মাথায় আটটি সেলাই দেওয়া হয়।

এদিকে, ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাকে ফেরাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন ঢামেকের জরুরী বিভাগ সংলগ্ন সেবা ফার্মেসির মালিক ও আওয়ামী লীগ কর্মী মো. শহীদুর রব (পেনু)।

দোকানের মালিক মো. শহীদুর রব (পেনু) রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার সময় আমির হামজার সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের সিরজাদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কথা বলেন। তবু তিনি থামেননি।

তবে ছাত্রলীগ নেতা আমির হামজা দাবি করেছেন, তিনি ওষুধ কিনতে গেলে ওই দোকান কর্মচারী তার মাকে নিয়ে গালি দেয়। তারপর তার সঙ্গে হাতাহাতি হয়।

ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হামলা শেষে দোকানে তালা লাগিয়ে দেন ছাত্রলীগ নেতারা। আর এই তালার চাবি দেওয়া হয় এস এম হল ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মেহেদী হাসানের কাছে। এর আগে মেহেদীর বিরুদ্ধে নানা অপকর্মে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। তাঁরা গিয়ে দোকানের তালা খোলানোর ব্যবস্থা করেন এবং ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফোরকান মোল্লা জানান, তিনি গিয়ে এস এম হলের বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসানের কাছ থেকে দোকানের চাবি নিয়ে আসেন।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ছাত্রলীগ নেতারা জানান, সংগঠনের গতিশীলতা ও গঠনতান্ত্রিকতার স্বার্থে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও সলিমুল্লাহ মুসলিম (এস এম) হল ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হাসান ঝন্টুকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।

ছাত্রলীগের নেতারা আরো জানান, অভিযুক্ত এই দুই নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের অনুসারী।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/০৯৪৫ঘ.)