শিশুর ইমারজেন্সি চিকিৎসা

শিশুর ইমারজেন্সি চিকিৎসা

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবা-মা উদ্বিগ্ন হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক বাবা-মা’ই বুঝতে পারেন না শিশু অসুস্থ হলে তাকে ঘরে রেখে চিকিৎসা করাবেন নাকি হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় হাসপাতালের ইমারজেন্সি বা জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য যেসব শিশুকে নেয়া হয় প্রকৃতপক্ষে তাদের অবস্থা গুরুতর কিছু নয়। বাবা-মাকে বুঝতে হবে সত্যিকার অর্থে কখন তারা শিশুকে ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাবেন। যেসব শিশুর ইমারজেন্সি বা তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন সেসব শিশুর ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রয়োগে দেরি হলে জীবননাশের সম্ভাবনা থাকে; কিন্তু শিশুর ইমারজেন্সি চিকিৎসা প্রয়োজন কিনা তা কিভাবে বুঝবেন। নিচের তথ্যগুলো মনে রাখুন। তা হলেই বুঝবেন দেরি না করে শিশুর দ্রুত ইমারজেন্সি চিকিৎসা প্রয়োজন।

আপনার শিশু যদি শ্বাস না নেয় কিংবা তার পালস (নাড়ির গতি) না থাকে: এক্ষেত্রে দেরি করবেন না মোটেই। আপনার কাছে যদি টেলিফোন থাকে তা হলে আগে শিশুকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদপিণ্ডে চাপ দিয়ে তার শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদক্রিয়া ফিরিয়ে আনতে থাকুন। তারপর সহায্যের জন্য হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে ফোন করুন। যদি বাসায় আরো লোকজন থাকে তা হলে আপনি শিশুকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে থাকুন, অন্য কেউ ফোনে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনবে।

শিশু যদি অজ্ঞান হয়ে যায়: শিশু অজ্ঞান হয়ে পড়লে শিশুর আশপাশে লোকজনের ভিড় বন্ধ করুন। ব্যবস্থা করুন দ্রুত শিশুকে হাসপাতালে নিতে। মনে রাখবেন, জ্ঞান ফেরানোর জন্য শিশুর শরীর ধরে অযথা ঝাঁকাঝাঁকি করবেন না, তাতে শিশুর ক্ষতি হবে।

শিশু শক-এ গেলে: শিশুর শরীরে রক্ত সঞ্চালন ও অক্সিজেন কমে গেলে শিশু শক-এ চলে যায়। সাধারণত মারাত্মক সংক্রমণ, তীব্র পানিশূন্যতা, রক্তক্ষরণ, প্রচণ্ড গরম প্রভৃতি কারণে শিশু শক-এ চলে যায়। শক-এর উপসর্গ হলো নাড়ির গতি দ্রুত ও দুর্বল হওয়া, ত্বক ফ্যাকাসে অথবা ছাইয়ের মতো রঙ হওয়া, চেতনা লোপ পাওয়া, হাত-পা ঠাণ্ডা হওয়া প্রভৃতি।

শ্বাস নিতে প্রচণ্ড কষ্ট হওয়া: তীব্র এলার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া, হাঁপানির আক্রমণ, শ্বাস পথের মারাত্মক সংক্রামণ কিংবা শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। দেরি না করে শিশুর ইমারজেন্সি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

গলায় কিছু আটকে যাওয়া: শিশু অনেক সময় হাতের কাছে যা পায় তাই মুখে দেয়। এ রকম কোনো বস্তু গিলে ফেলার কারণে যদি তা শিশুর গলায় আটকে যায় এবং সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগ করেও আপনি তা বের করতে সক্ষম না হন তা হলে দ্রুত শিশুকে হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাবেন।

যদি স্নায়ুরজ্জুতে আঘাত পায়: যদি আপনার মনে হয় যে, শিশু ঘাড়ে কিংবা পিঠে বেশ আঘাত পেয়েছে তা হলে তাকে নাড়াচাড়া করবেন না। এই আঘাতে তার স্নায়ুরুজ্জু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না আপনি জানেন না। অতএব, যত দ্রুত সম্ভব শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

যদি মারাত্মক রক্তরক্ষণ হয়: যদি পুরো ১০ মিনিট ক্ষতস্থান চেপে রাখার পরও শিশুর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হয় তা হলে তার ইমারজেন্সি চিকিৎসা প্রয়োজন।

* যদি শিশুর প্রথমবারের খিঁচুনি হয়।
* শিশুর বয়স যদি মাসের কম হয় এবং তার ১০০.৪ ডিগ্রি জ্বর থাকে।
* যদি শিশুর তীব্র বমি বা ডায়রিয়া থাকে।
* যদি শিশুর বিষক্রিয়া ঘটে।
* যদি শিশু মারাত্মক আঘাত পায় তার কোনো হাড় ভেঙে যায়, মাথায় আঘাত লাগে কিংবা শরীর পুড়ে যায়।
* শিশুর পেটে যদি তীব্র ব্যথা হয়।

সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
চেম্বার: পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ, ২ ইংলিশ রোড, ঢাকা।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৬২৩ঘ.)