ভুল চিকিৎসায় রাইফার মৃত্যু, গড়িমসির পর হত্যা মামলা নিলো পুলিশ

ভুল চিকিৎসায় রাইফার মৃত্যু, গড়িমসির পর হত্যা মামলা নিলো পুলিশ

চট্টগ্রাম, ২০ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা, অবহেলা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় আড়াই বছরের শিশু রাইফা খানের মৃত্যুর ঘটনায় বাবা রুবেল খানের দায়ের করা অভিযোগ অবশেষে আমলে নিয়েছে সিএমপি চকবাজার থানা। বুধবার বিকেল ৪টার সময় দেয়া অভিযোগটি দীর্ঘ গড়িমসির পর শুক্রবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মামলা হিসেবে আমলে নেয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ-সিএমপি চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ মামলা রুজু করার বিষটি নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, অভিযোগটি যাচাই-বাছাই করতে একটু সময় লেগেছে।

এদিকে, মামলা আমলে নিতে থানার গড়িমসির প্রতিবাদে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা। শুক্রবার দুপুরের মধ্যে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নিলে শনিবার আন্দোলনের লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিল সাংবাদিক নেতারা। তবে শুক্রবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে থানা মামলা গ্রহণ করায় সে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল বলেন, শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের দু’টি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং হাসপাতালের তিন চিকিৎসককে দায়ী করা হয়েছে। এরপর বাদী রুবেল খান এজাহারে তাদেরই আসামি করেছেন। কিন্তু, বুধবার বিকেলে এজাহারটি চকবাজার থানায় দাখিল করা হলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে গড়িমসি করে।

এর আগে রাইফার বাবা রুবেল খানের দায়েরকৃত অভিযোগ মামলা হিসেবে নেয়া না হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সিএমপি কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন। তবে সাংবাদিক নেতাদের অনুরোধে রুবেল খান অনশনে বসেননি। শুক্রবার দুপুরের মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে অনশন শুরু করবেন বলে তিনি জানিয়েছিলেন।

সাংবাদিক রুবেল খানের দায়ের করা এজাহারে কথিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিধান রায় চৌধুরী (৫০), ঘটনার সময়ে ম্যাক্স হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ সেনগুপ্ত (৩২), শুভ্র দেব (৩২) ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিকিৎসক লিয়াকত আলীর (৫৭) নাম রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুন দিনগত রাতে সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রাইফা খান ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। রাইফার মৃত্যুর পর তার পরিবার ও সাংবাদিকরা চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে এ ঘটনা তদন্তে গঠিত দুইটি কমিটির প্রতিবেদনেও ভুল চিকিৎসা এবং অবহেলার কারণে রাইফার মৃত্যু হয় বলে উল্লেখ করা হয়।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৮০৮ঘ.)