পরীক্ষায় ফেল করায় ৪ ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা, ২ জনের মৃত্যু

পরীক্ষায় ফেল করায় ৪ ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা, ২ জনের মৃত্যু

চাঁদপুর, ৩০ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : শনিবার প্রকাশিত জেএসসি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় পৃথক ঘটনায় গলায় ফাঁস, বিষপান ও কেরোসিন খেয়ে চার স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এদের মধ্যে চাঁদপুর শহরের পীর মহসীন পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা আক্তার (১৫) ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইক পাড়া ইউজিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ফেরদৌসী আক্তার (১৫) মৃত্যুবরণ করেছে।

অপরদিকে কেরোসিন খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা অপর দুই স্কুলছাত্রী হলো মতলব উত্তর ফরাজীকান্দি চরকালিয়া গ্রামের নসু মিয়ার মেয়ে নাছিমা (১৩) ও বাঘড়া বাজার এলাকার নাসরিন (১৬)। তারা বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর শনিবার এই পৃথক ঘটনাগুলো ঘটে।

নিহত ফেরদৌসী আক্তারের মা শামসুন্নাহার জোছনা বেগম জনায়, ফেরদৌসী ফরিদগঞ্জ পাইকপাড়া গ্রামের মানিক সরদারের মেয়ে এবং সে পাইকপাড়া ইউজিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী। শনিবার দুপুরে জেএসসির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হলে ফেরদৌসী আক্তার তার পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য স্কুলে যায়। যাওয়ার পথে তার সহপাঠিরা জানায় ফেরদৌসী ফেল করেছে।

এই খবর শুনে মা জোছনা বেগম নিজে ফলাফল দেখতে স্কুলে চলে যায়। স্কুলে গিয়ে তিনি টানানো রেজাল্ট সীটে মেয়ের বি গ্রেডে পাশ করেছে দেখতে পায়। সে মাত্র দুই বিষয়ে খারাপ করেছেন। বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে মেয়ের ফাঁস দেওয়া লাশ ঝুলছে।

তিনি আরো জানান, পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছে জেনেই বাড়িতে গিয়ে পরিবারের অগোচরে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে তারা ফারজানাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তারা আরো জানান, ফেরদৌসী আক্তার মূলত পরীক্ষায় রেজাল্ট ভালো করেছেন। রেজাল্ট সীট না দেখেই পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করেছে ভেবে আত্মহত্যা হরেছে। গত বছর ফেরদৌসী একই পরীক্ষায় ফেল করেছে বলে তিনি জানা। আর ফেরদৌসীর ছোট বোন সুইটি আক্তার এবারের পিএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে।

অপরদিকে শহরের পীর মহসীন পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা আক্তারের পরিবারের লোকজন জানায়, ফারজানা আক্তার পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় বাড়িতে সে বাড়িতে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তারা ধারণা করছেন তাদের মেয়ে বিষপান করেছে। তারপর তারা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। ফারজানা আক্তার প্রফেসর পাড়া মাঝি বাড়ির দুলাল গাজীর মেয়ে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই ছাত্রীর আত্মহননের বিষয়টি চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে অবগত করলে থানা পুলিশ লাশের সুরুতহাল তৈরি করে লাশ থানায় নিয়ে যায় বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ নুরুল আলম জানায়, তাদের দু’জনকেই হাসপাতালে মৃত আনা হয়েছে। এক ছাত্রীর পরিবার বলেছে সে কি খেয়েছে তারা কিছুই বলতে পারবে না। এ কারণে মৃত হওয়ায় তাকে কোনো ওয়াসকরা হয়নি। অপর ছাত্রীর পরিবার জানিয়েছেন সে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। এখন পোস্টমর্টেম রির্পোট ছাড়া আমরা নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারবোনা।

(জাস্ট নিউজ/প্রতিনিধি/একে/২১২৭ঘ.)