চাঁদপুর-২ আসনে গণসংযোগকালে বিএনপি প্রার্থীর উপর দফায় দফায় হামলা, আহত ১০, আটক ৯

চাঁদপুর-২ আসনে গণসংযোগকালে বিএনপি প্রার্থীর উপর দফায় দফায় হামলা, আহত ১০, আটক ৯

চাঁদপুর, ১৫ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : চাঁদপুর-২ আসনের বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগকালে দফায় দফায় হামলা করা হয়েছে। এতে আহত হয়েছে ১০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। পরে কয়েক ঘন্টা বিএনপি প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। আটক করা হয় ৯ জনকে।

শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত মতলব উত্তর উপজেলার লুধুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রার্থীর নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মতলব দক্ষিণের সাবেক পৌরমেয়র ও জালাল উদ্দিনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী এনামূল হক বাদল। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, চাঁদপুর-২ আসনের আমাদের বিএনপি প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিন নির্বাচনী প্রচারণা করতে তার নিজ এলাকায় যান। দুপুর ১টার দিকে তিনি তার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করতে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগ-পুলিশ মিলে জালাল উদ্দিনের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে সরকারদলের নেতাকর্মীরা পুলিশের সহযোগিতায় নিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। ভাংচুর করা হয় প্রার্থীর গাড়ি। এ সময় বিএনপির বহু নেতাকর্মী আহত হন। এক পর্যায়ে পুলিশও ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে।

পরবর্তীতে দুপুর ৩টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক লোক লাটিসোটা হাতে নিয়ে মিছিল নিয়ে এসে ড. জালালের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে বিএনপি প্রার্থী বাড়ি থেকে বের হলেই পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা করে তারা। এ সময় প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিন ও কয়েকজন নেতাকর্মীকে বেদম মারধর করা হয় বলে তারা অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আমাদের প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ বাহিনী অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমাদের প্রার্থী ড. জালালসহ আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে রিটার্নিক কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কিন্তু কোন সমাধান পাইনি। আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।

এ বিষয়ে বিএনপির প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, তারা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। তারা তান্ডবলীলা চালিয়েছে। আমার নেতাকর্মীরা মার খেয়েছে। আমার সাথে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ছিল। আমি চাইলে তাদের প্রতিরোধ করতে পারতাম। কিন্তু আমি বিশৃঙ্খলা করতে চাই না। আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম, কিভাবে আমার গাড়িটা একজন পুলিশ ভাংলো।

তিনি বলেন, জোহরের নামাজের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। জেলা রিটার্নিং অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েছি। পুলিশ সুপারকেও জানাতে ফোন করলেও তাকে পাইনি। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি। আমি নিরাপত্তা চাই।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেন, এখন মাঠে আছি বিস্তারিত কিছু বলতে পারবো না। এ পর্যন্ত ৯ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির বলেন, ওই এলাকার বিএনপির দু’ গ্রুপের মধ্যে সংঘাত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করেছে। তাছাড়া ড. জালাল উদ্দিন তার নিজের বাড়িতেই আছেন বলে আমার কাছে ম্যাসেজ আছে। যেটি আজকে হয়েছে সেটি বিএনপিরই দু’ গ্রুপের সংঘর্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুনির চৌধুরী, ফেরদৌস আলম বাবু, জেলা যুব দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার, মতলব উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি সফিকুল ইসলাম সাগর, সাধারণ সম্পাদক এমরান হোসেন মিলন, মতলব পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. সোয়েব আহমেদ, পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি মনির ফরাজী, মতলব সদর বিএনপির সভাপতি ওয়ালি উল্যা ঢালী, উপজেলা যুবদলের সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম কিরণ ও জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

(জাস্ট নিউজ/একে/২১৫১ঘ.)