ইয়াবা ডনকে অস্ত্র পাইয়ে দিতে বদির তদবির

ইয়াবা ডনকে অস্ত্র পাইয়ে দিতে বদির তদবির

ঢাকা, ২৭ মে (জাস্ট নিউজ) : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ ইতোমধ্যে একটি বন্দুকের লাইসেন্স পেয়েছেন। এখন তিনি একটি পিস্তলের লাইসেন্স চান। তার এই অস্ত্রের লাইসেন্স দিতে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বারবার তদবির করছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাফর আহমদকে পিস্তলের লাইসেন্স দিতে পারছে না। কারণ সব গোয়েন্দা সংস্থা তার বিপক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেছে মন্ত্রণালয়ে। যে কারণে এক বছর ধরে ঝুলে আছে জাফর আহমদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানে আমাদের যে নীতিমালা রয়েছে, সেই নীতিমালায় না পড়ায় তার (জাফর আহমদ) অস্ত্রের লাইসেন্সে অনাপত্তি ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেন জেলা প্রশাসক। তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি ছাড়পত্র ছাড়াই শটগান ও বন্দুকের লাইসেন্স দিতে পারেন। তবে ক্ষুদ্র অস্ত্রের লাইসেন্সের ক্ষেত্রে (পিস্তল ও রিভলবার) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি ছাড়পত্র নিতে হয়।

জাফর আহমদকে পিস্তলের লাইসেন্স দিতে সব ধরনের তদন্ত শেষে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অনাপত্তি ছাড়পত্র নিতে সংশ্লিষ্ট আবেদন প্রতিবেদনসহ পাঠিয়ে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব অস্ত্রের লাইসেন্সের অনাপত্তি ছাড়পত্র দিতে গিয়ে জানতে পারেন জাফর আহমদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। এরপর তিনি সব গোয়েন্দা সংস্থাকে জাফর আহমদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। তখন সব গোয়েন্দা সংস্থা মন্ত্রণালয়ে যে প্রতিবেদন দাখিল করে, তাতে জাফর আহমদকে শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এরপরই ঝুলে যায় জাফর আহমদের অস্ত্রের লাইসেন্সের ওপর অনাপত্তি ছাড়পত্র প্রদানের বিষয়। শনিবার পর্যন্ত মন্ত্রণালয় ছাড়পত্র দেয়নি।

ওদিকে জাফর আহমদের অস্ত্রের লাইসেন্সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যাতে অনাপত্তি ছাড়পত্র দেয় এজন্য এমপি আবদুর রহমান বদি কয়েক দফা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তবে বিরূপ গোয়েন্দা প্রতিবেদন থাকায় জাফর আহমদের অস্ত্রের লাইসেন্সের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি ছাড়পত্র মিলছে না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কক্সবাজারের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের যে তালিকা করেছে, সেই তালিকায় টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের নাম রয়েছে। এ ছাড়াও নাম আছে তার স্বজনদের।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এমপি আবদুর রহমান বদির ঘনিষ্ঠ সহচর হলেন জাফর আহমদ। জাফর আহমদের ছেলে শাহজাহানও শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম। যিনি টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

জাফর আহমদ বলেছেন, তিনি এবং তার ছেলেরা কখনো ইয়াবা বাণিজ্যে জড়িত নয়। এটা অপপ্রচার। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যই ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকায় তার নাম যুক্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে।

জাফর আহমদ আরো বলেছেন, তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। তারও জীবনের নিরাপত্তা রয়েছে। এজন্য অস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু সরকার কেন লাইসেন্স দিচ্ছে না এটা সরকারই ভালো বলতে পারবে। সুত্র: আমাদের সময়।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৩১৮ঘ.)