কয়লা কেলেঙ্কারি: ৩২ কর্মকর্তাকে তলব দুদকের

কয়লা কেলেঙ্কারি: ৩২ কর্মকর্তাকে তলব দুদকের

ঢাকা, ১২ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : বড়পুকুরিয়ার ১ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খোলাবাজারে বিক্রি করে প্রায় ২৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার তদন্তে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা)-এর ৩২ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার দুদকের উপপরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সামছুল আলমের সই করা পৃথক দুই চিঠি পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে এসব কর্মকর্তা বরাবর নোটিশ জারি করে নির্দিষ্ট তারিখে দুদকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য।

দুদকে যাদেরকে তলব করা হয়েছে তারা হলেন, উপমহাব্যবস্থাপক (মেনটেনেন্স অ্যান্ড কন্টাক্ট ম্যানেজমেন্ট) মো. নাজমুল হক, ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মো. শোয়েবুর রহমান, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) মো. সাইদ মাসুদ, উপব্যবস্থাপক (মেনেটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মো. মাহাবুব হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) মো. মনিরুজ্জামান; সহকারী ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মো. মাহাবুব রশিদ ও ব্যবস্থাপক (স্টোর) মো. দিদারুল কবিরকে ১৬ আগস্ট দুদকে হাজির হয়ে নিজ নিজ বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) আবু তাহের মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী, উপ-মহাব্যবস্থাপক এ কে এম খালেদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মোরশেদুজ্জামান; উপ-ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) হাবিবুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) জাহেদুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্র নাথ বর্মণ, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাইন প্যানিং অপারেশন) জোবায়ের আলীকে হাজির হতে বলা হয়েছে ২৮ আগস্ট।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমদ; প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক (এক্সপোরেশন), কোম্পানি সেক্রেটারি আবুল কাশেম প্রধানিয়া ও মোশারফ হোসেন সরকার, মহাব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) জাহিদুল ইসলাম এবং উপ-ব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হককে ২৯ আগস্ট হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

এছাড়া ৩০ আগস্ট দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে উপ-ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) মো. খলিলুর রহমান, প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারি ও গোপাল চন্দ্র সাহা, ব্যবস্থাপক (হিসাব) সারোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপক (সেলস ও রেভিনিউ কালেকশন) মো. কামরুল হাসান, উপব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ও কাস্টমার সার্ভিসেস) মোহাম্মদ নোমান প্রধানীয়া, প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এ কে এম সিরাজুল ইসলাম ও শরিফুল আলম এবং সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) আল আমিনকে।

এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ গণমাধ্যকে বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির দুর্নীতির তদন্ত দ্রুত শেষ হবে। প্রকৃত দোষীদেরই আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কোনো বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই।

এর আগে গত ১ আগস্ট বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম নুরুল আওরঙ্গজেব ও মহাব্যবস্থাপক (সারফেস অপারেশন) সাইফুল ইসলাম সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।

এক লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন কয়লা ঘাটতির অভিযোগে বিসিএমসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বাদী হয়ে কোম্পানির সদ্য প্রাক্তন এমডি হাবিব উদ্দিন আহমেদসহ ১৯ জনকে আসামি করে গত ২৪ জুলাই দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানায় একটি মামলা করেন। তফসিলভুক্ত হওয়ায় অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক।
মামলায় ১৯ আসামিসহ পেট্রোবাংলার ২১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার জন্য চিঠি দেয় দুদক।

এর আগে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাগজে-কলমে বেশি কয়লার মজুত দেখিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খতিয়ে দেখতে ২৩ জুলাই তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিল দুদক।

দুদকের উপপরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন ও উপসহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯৫৩ঘ.)