আইয়ুব বাচ্চু সম্পর্কে যা বললেন জেমস

আইয়ুব বাচ্চু সম্পর্কে যা বললেন জেমস

ঢাকা, ১৮ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : কনসার্টে অংশ নিতে এখন বরগুনায় অবস্থান করছেন জেমস। আইয়ুব বাচ্চু আর নেই সেখানেই খবরটা পান তিনি। বন্ধ করে দেন অনুষ্ঠানের সাউন্ডচেক আর প্র্যাকটিস পর্ব। বিমর্ষ হয়ে পড়েন। ঘটে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ।

স্বাভাবিক, কারণ বাংলাদেশে রক ইতিহাসের দ্বৈরথ বলা হয় আইয়ুব বাচ্চু-জেমসকে। প্রায় তিন দশক তারা দুজনে মিলে শাসন করেছেন দুই বাংলার রক কিংবা ব্যান্ড সংগীত। দুজনার শুরুটাও চট্টগ্রাম থেকেই। চার দশকে একসঙ্গে অসংখ্য শো আর অ্যালবাম করেছেন তারা।

জেমস বলেন, ‘তিনি বাংলা সংগীতের কিংবদন্তি। ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে আমাদের পরিচয়। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর আমরা একে অপরের সুখে-দুঃখে মানে-অভিমানে কাটিয়েছি। একসঙ্গে প্রচুর শো করেছি, গান করেছি, দেশ-বিদেশে ঘুরেছি। উনি অকস্মাৎ এভাবে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যাবেন, খবরটা শুনে মানতে পারছি না। রক সংগীতে তার যে অবদান সেটা এই জাতি চিরদিন মনে রাখবে বলেই বিশ্বাস করি।’

একটু থেমে আর্দ্রকণ্ঠে জেমস বলেন, ‘উনি অত্যন্ত উদার মনের মানুষ ছিলেন। প্রচণ্ড রসাত্মবোধ ছিল তার মধ্যে। ওনার সাথে আমার যে সম্পর্কটা সেটা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। বিভিন্ন সময়ে কারণে-অকারণে আমরা একজন আরেকজনের পাশে ছিলাম। সম্পর্কের এই গভীরতার কথা কখনও বোঝাতে পারবো না। কেউ হয়তো জানবেও না আমাদের হৃদয়ে একে অপরের জন্য কতটা জায়গা।’

এ পর্যায়ে মাহফুজ আনাম জেমসের প্রতি জিজ্ঞাসা ছিল, মিডিয়ায় কিন্তু আপনাদের দুজনকে প্রতিযোগী হিসেবেই দেখে আসছে সবসময়। জবাবে জেমস বললেন, ‘মিডিয়া আমাদের সম্পর্কের বিচার কীভাবে করছে সেটা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। তবে আমি মনে করি আমাদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল। এটা ভালো গান তৈরির প্রতিযোগিতা। এখানে ব্যক্তিগত কোনও জেলাসি ছিল না। আপনারা হয়তো অনেকেই দেখেছেন, আমাদের যখন যেখানে দেখা হয়েছে চারপাশ অগ্রাহ্য করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছি পরম ভালোবাসায়। আড্ডায় মেতেছি। এসব টান কিংবা হিডেন সম্পর্কের বিষয়গুলো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। করতেও চাই না।’

এরপর জেমস বললেন, ‘আমি এখন বরগুনা আছি। এটা আমার জন্য দুর্ভাগ্যজনক। ঢাকায় থাকলে ছুটে যেতে পারতাম। বরগুনা স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যায় একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে গাইতে হচ্ছে। আমি খবরটি পেয়েই মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের (আসাদুজ্জামান নূর) সঙ্গে কথা বলেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজকের কনসার্টটি উনাকে (আইয়ুব বাচ্চু) ডেডিকেটেড করে করবো। কতটা প্রাণখুলে গাইতে পারবো জানি না।’

(জাস্ট নিউজ/এমজে/১৭৩০ঘ.)