আরমানের খবর নেই, টুম্পা হয়ে গেলেন ‘অপরাধী’ তারকা!

আরমানের খবর নেই, টুম্পা হয়ে গেলেন ‘অপরাধী’ তারকা!

ঢাকা, ১৩ জুন (জাস্ট নিউজ) : ডিজিটাল সময়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তারকা তৈরি হওয়া যেন ডালভাতের মতোই। তারকা বনে যাওয়ার জন্যে কত্ত কি যে করছে এই প্রজন্ম,তার ইয়ত্তা নেই। একটু কিছু হলেই সবাই তা মুড়ি-মুড়কির মতো গিলে খায়। অনেকে তো রাতারাতি হয়ে যান তারকা!এত সহজে তারকা হওয়ার দৃষ্টান্ত বোধহয় এ দেশেই সম্ভব। সম্প্রতি আরমান আলিফের গাওয়া ‘অপরাধী’ গানের ক্ষেত্রেই আছে এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

গত ২৬ এপ্রিল ঈগল মিউজিকের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয় অঙ্কুর মাহমুদ ফিচারিং আরমান আলিফের ‘অপরাধী’ গানের ভিডিও। গানটি প্রকাশের পর থেকেই সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তোলে। ভাইরাল হতে থাকে বাতাসের মতোই। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে চোখের পলকে। গানটি বাংলা গানের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ে। এখন পর্যন্ত ইউটিউবে গানটি দেখা হয়েছে প্রায় সোয়া ৬ কোটি বার!

গ্লোবাল ইউটিউব মিউজিক টপচার্টে গানটি ২৫ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে ৬০তম স্থানও দখল করে। সঙ্গীতশিল্পী আরমান আলিফ ‘অপরাধী’ দিয়ে টেইলর সুইফটকেও পেছনে ফেলে দেন। এটি বাংলা গানে অনন্য এক রেকর্ড, যা কখনো ঘটেনি। গানটির মাধ্যমে সর্বজন পরিচিত হয় আরমান আলিফের নাম। কিন্তু মিডিয়া বা সংবাদ মাধ্যমগুলো আরমান আলিফের পাশে দাঁড়িয়েছে দায়সারাভাবে।

অথচ আরমান আলিফের অপরাধী গানটি কাভার করে লাইমলাইটে আসেন টুম্পা খান নামে এক তরুণী। ফেসবুকে অপরাধী গান কাভার করে আরমান আলিফের চেয়েও বেশি জনপ্রিয় হয়েছে তিনি। মিডিয়াও যেন হুমড়ি খেয়ে টুম্পা খানকে সাপোর্ট দিচ্ছে। প্রকৃতশিল্পীর খোঁজ না নিয়ে গান কাভার করা ভাইরালশিল্পীর পেছনে যদি মিডিয়া এমনভাবে ছুঁটে চলে তাহলে প্রকৃত মেধার মূল্যায়ন কোথায়? ভাইরালম্যানদের দৌঁড়ে প্রকৃত শিল্পীরা নত হচ্ছেন বারবার। এতে করে শিল্পীকে শুধু অবমাননা করা হচ্ছে না,নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে প্রকৃত মেধাকে।

এ সম্পর্কে খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিত বলেন, এরকম অনেক গানই হয়েছে। দীর্ঘস্থায়িত্বের ব্যাপার হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়। হেল্টিকপ্টারে হিমালয়ের চূড়ায় ওঠা আর পায়ে হেঁটে ওঠার মধ্যে পার্থক্য আছে। যদি কোয়ালিটি থাকে, তবে একটা সিড়ি ব্যবহার করে ওপরে ওঠতে পারে। সেটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। তারমধ্যে যদি ওইরকম যোগ্যতা থাকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। এটা কোনো খারাপের কথা নয়। কিন্তু নিজের গান দিয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া অনেক বেশি গর্বিত হওয়ার ব্যাপার থাকে। এরকম অনেক রিয়েলিটি শোতে আমার কাভার সং করে অনেকে অনেক লাইম লাইটে আসছে। সঙ্গীত এমন একটা জিনিস এটা সংযম, অনুশীলন, পরিশ্রম, সাধনা এই ব্যাপারগুলো ধরে রাখতে না পারলে দীর্ঘস্থায়িত্ব সহজেই আসে না। ধপ করে জ্বলে ওঠা আর ধপ করে নিভে যাওয়ার সময়ের ব্যাপারমাত্র।

এ সম্পর্কে জনপ্রিয় সঙ্গীত তারকা বাপ্পা মজুমদার বলেন, গানটার মধ্যে এমন কোনো ইলিমেন্ট আছে, যা মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। বিশেষ কিছুর জন্যই মানুষ এত বেশি গ্রহণ করেছে। তবে এখনকার সময়ে কে কখন ভাইরাল হয়ে যাবে এটা বলা যায় না। ভাইরাল হওয়াটা আটকে রাখাও যাবে না। অনেক সময় আমার গান কাভার করে অন্য কেউ জনপ্রিয় হয়ে যেতে পারে। কিন্তু মিডিয়ার দায়িত্ব হলো কাভার করা শিল্পীর পেছনে না ছুঁটে মুল শিল্পীর পাশে দাঁড়ানো। কারণ মূল শিল্পীর গানটাই যদি না থাকতো, তাহলে ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি আসতো না। তাই প্রকৃত শিল্পীর পাশে থাকা উচিত সবার। সুত্র: আমাদের সময়।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৩০ঘ.)