শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ছাত্রলীগের ইন্টারনেট বাণিজ্য!

শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ছাত্রলীগের ইন্টারনেট বাণিজ্য!

ঢাবি, ১৯ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হলের চড়া মূল্যে ইন্টারনেট বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। আর এর খেসারত দিতে হচ্ছে হলটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের। তারা উপযুক্ত ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন।

হল সূত্রে জানা যায়, গত মাসে হলে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইনোবিন’কে হলটিতে ফ্রি সংযোগ (ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষে) বৃদ্ধি ও মাসিক চাঁদা দেওয়ার দাবি করে শাখা ছাত্রলীগের নেতারা। এ নিয়ে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাদের মনোমালিন্য হয়।

একপর্যায়ে গত ১৮ জানুয়ারি রাতে হল ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় রফিক ভবনের চতুর্থ তলায় থাকা সংযোগটির স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়। এর ফলে ২০ দিন বন্ধ থাকে হলের ইন্টারনেট সেবা। এ নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলটির একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ইনোবিনের সংযোগটি পুনরায় চালু করতে ছাত্রলীগ পরোক্ষভাবে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। আগের সংযোগটিকেই পুনরায় পেতে এখন রেজিস্ট্রেশনের নামে শিক্ষার্থীদের গচ্চা দিতে হচ্ছে বাড়তি পাঁচশ টাকা এবং সংযোগ প্রতি আগের থেকে মাসিক বিল দুইশ টাকা বেশি।

অভিযোগ আছে, গত বছর ছাত্রলীগের হল কমিটি ঘোষণার পর সাধারণ সম্পাদক এহসান পিয়ালের অনুসারীরা হলটিতে থাকা স্বল্প মূল্যের ও ভালো স্পিডের কে এস নেটওয়ার্ককে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে বিতাড়িত করে। পরে অধিকমূল্যের অত্যন্ত নিম্নমানের সার্ভিসের (ইনোবিন) সংযোগটি চালু করা হয়। এর পর থেকে এ নিয়ে ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এহসান পিয়াল বলেন, তারা পুনরায় সংযোগ স্থাপনের জন্য শিক্ষার্থীদের থেকে বিভিন্ন খরচ বাবদ পাঁচশ টাকা করে বেশি নিচ্ছে। এতে ছাত্রলীগের কোনো হাত নেই।

হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার রাজি বলেন, ‘সংযোগ স্থাপনাটি কারা ভাঙচুর করেছে, জানি না। আর ইন্টারনেট বাণিজ্যের অভিযোগটি ঠিক নয়।’

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি হলের মধ্যে ফ্রি ইন্টারনেট কানেকশন করে দিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে কিছু দুষ্কৃতকারী সংযোগ স্থাপনাটি বারবার ভেঙে ফেলে দিচ্ছে।’

‘তারা এটার মধ্য দিয়ে কোনো ব্যবসা করছে কি না, জানি না। তবে ছাত্ররা চাইলে আমি পুরো হলে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা দিয়ে দেবো। তাদের বাইরের কোনো কোম্পানি থেকে ইন্টারনেট নেওয়ার দরকার হবে না,’ যোগ করে প্রাধ্যক্ষ।

তবে দুষ্কৃতকারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের পরিচয় বলতে রাজি হননি ঢাবির এই শিক্ষক।

অভিযোগের সত্যতা শিকার করেন ইনোবিনের কর্মচারী সুমন। তবে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১০৫০ঘ.)