কৌশল বদলাচ্ছে সাইবার দুর্বৃত্তরা, ভুয়া পেজ ধরা খুবই কঠিন

কৌশল বদলাচ্ছে সাইবার দুর্বৃত্তরা, ভুয়া পেজ ধরা খুবই কঠিন

ঢাকা, ৬ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজ তৈরিতে আরো কৌশলী হচ্ছে নির্মাতারা। আগে যেসব বৈশিষ্ট্যের কারণে ফেসবুক ভুয়া পেজ আটকে দিত, সেসব ভুল থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। এতে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজ শনাক্ত করা এবং তা নজরদারির মধ্যে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। এতে ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশে প্রচার করা ও ভুয়া তথ্য প্রতিরোধ করার মতো বিষয় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানায়, নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন উপলক্ষে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে ফেসবুক। এর মধ্যে সমন্বিত স্বয়ংক্রিয় আচরণের কারণে ৩২টি ভুয়া পেজ ও অ্যাকাউন্ট বাতিল করেছে তারা।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যে ভুয়া পেজ তৈরি ও অনধিকার চর্চা পর্যবেক্ষণ করার ও এর মূল উৎস খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাইবার দুর্বৃত্তরা তাদের কৌশলেও পরিবর্তন এনেছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ফরেনসিক রিসার্চ ল্যাবের বিশেষজ্ঞ বেন নিমো বলেন, এখন ফেসবুকে যেসব ভুয়া পেজ তৈরি হচ্ছে, এতে প্রকৃত ভাষা কম ব্যবহার করার বিষয়টি তিনি পর্যবেক্ষণ করেছেন। এসব পেজে অনলাইনে থাকা বিভিন্ন তথ্য চুরি করে প্রকাশ করা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিমো বলেন, আগে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভাষাগত ভুল দেখে অনেক ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করা যেত, কিন্তু এখন তারা কোনো বিষয় পোস্ট করার সময় নিজেরা কম লিখে চুরি করা কনটেন্ট পোস্ট করে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে নকল করে পোস্ট করা কনটেন্ট থাকায় এবং পাইরেসি হওয়ার ফলে এসব কনটেন্ট সন্দেহ তৈরি করে কম।

নতুন করে ভুয়া পেজ বাতিল করা প্রসঙ্গে ফেসবুক বলেছে, এসব পেজে ভুয়া তথ্যের উৎস শনাক্ত করতে পারেনি ফেসবুক। এসব অ্যাকাউন্ট যারা সেট করেছে, তারা সত্যিকার পরিচয় ঢাকতে অনেক গভীর পর্যন্ত গেছে। এর আগে রাশিয়াভিত্তিক ইন্টারনেট রিসার্চ এজেন্সি (আইআরএ) যেভাবে পেজ সেট করেছিল, তার চেয়েও গভীরে গিয়েছিল এসব পেজ নির্মাতার। আইআরএর বিরুদ্ধে মার্কিন নির্বাচনে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে প্রভাব ফেলার অভিযোগ রয়েছে।

গত মঙ্গলবার ফেসবুক তাদের এক ব্লগ পোস্টে বলেছে, ‘আমাদের কারিগরি দল এসব পেজে পোস্ট করা তথ্যের উৎস ধরতে পারেনি। যেসব পোস্টে ব্যবহারকারীরা ফ্ল্যাগ দেখিয়েছেন, সেগুলো কয়েকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের গবেষকেদের দেখানো হয়।’

ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার, ইন্টারনেট ফোন সার্ভিস, স্থানীয় মুদ্রায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগে ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্টের তথ্য যতটা সম্ভব অস্বচ্ছ করার সুবিধা নিচ্ছে পেজ নির্মাতারা। এ ছাড়া দুর্বৃত্তরা থার্ড পার্টির সাহায্যও নিচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন ঘনিষ্ঠ জাতীয় নিরাপত্তা সহযোগী গত বৃহস্পতিবার বলেন, নভেম্বরের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের বিস্তৃত প্রচেষ্টা করছে রাশিয়া ও অন্যরা। ২০২০ সালের নির্বাচন পর্যন্ত তারা এটা চালিয়ে যাবে। বিষয়টি তাদের উদ্বেগে ফেলেছে। কারণ, এটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াবে এবং তাদের রাগিয়ে দেবে।

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা এ ধরনের কর্মসূচির সঙ্গে সরাসরি রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা পাননি বলে জানিয়েছেন। তবে প্রচেষ্টার ধরন রাশিয়ার মতো বলে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৫৩ঘ)