জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকা, ৬ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছেন বলে দেশটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বুধবারই ট্রাম্পের এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি প্রতিবেদনে আরো জানিয়েছে, তবে এখনই হয়তো যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেবে না।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতনিয়াহু, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন।

জেরুজালেম পবিত্র ভূমি হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়ের কাছেই গণ্য। এর দখল ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই দেশের দ্বন্দ্বও বহু পুরোনো।

ইসরায়েল সব সময়ই জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে দাবি করে আসছে, পাশাপাশি পূর্ব জেরুজালেম ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে বলে দেশটির নেতারা বলে আসছেন।

তবে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে বেশ শঙ্কিত সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা। এ বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।

জেরুজালেম ইস্যুতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরোঁ বলেছেন, ট্রাম্পের ‘একতরফা’ সিদ্ধান্তে তিনি উদ্বিগ্ন। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন—দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই জেরুজালেম বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

স্থানীয় সময় সোমবার সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ট্রাম্পের এ ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্য শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মার্কিনি এ সিদ্ধান্তে দুদেশের মধ্যে চলমান শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। আর জেরুজালেমে ইসরায়েলের রাজধানী স্থানান্তর ‘ভয়াবহ পরিণতি’ ডেকে আনবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জর্ডান। একই ধরনের প্রতিক্রিয়া তুরস্কেরও।

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্তটি কিন্তু বেশ পুরোনো। ১৯৯৫ সালেই মার্কিন কংগ্রেস অনুমোদিত এক আইনে ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সাবেক সব প্রেসিডেন্টই ক্ষমতায় থাকাকালীন ওই প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার জন্য স্বাক্ষর করেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর একই পথে হেঁটেছিলেন ট্রাম্পও। তবে এবার বেঁকে বসেছেন তিনি। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্থানীয় সময় সোমবার ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস স্থানাস্তর বিলম্বের জন্য প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের শেষ দিন। আর এদিন স্বাক্ষর করবেন না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

ফলে যেকোনো সময়ে ১৯৯৫ সালের ওই আইন বাস্তবায়ন হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র।

১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল। পরে ১৯৮০ সালে তারা পূর্ব জেরুজালেমকে অধিগ্রহণ করে নেয় এবং ইসরায়েলের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে। তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ওই অঞ্চলকে দখলকৃত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১০৩০ঘ.)