মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের এলাকায় গড়ে উঠছে রাখাইনদের ঘর

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের এলাকায় গড়ে উঠছে রাখাইনদের ঘর

ঢাকা, ১৭ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : সেনা অভিযানের মুখে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের যে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, সেখানেই গড়ে তোলা হচ্ছে রাখাইনদের বসতি৷ বিশ্লেষকরা মনে করেন, মুসলিমমুক্ত এলাকা গড়তেই নেয়া হয়েছে এমন উদ্যোগ৷

এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনের কো তান কাউক গ্রামে ধীরে ধীরে বাড়ছে গরিব রাখাইনদের ভিড়৷ একদিকে বিশাল এলাকাজুড়ে বুলডোজারে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া রোহিঙ্গাদের পোড়া ঘর-বাড়ির ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চিহ্ন। অন্যদিকে গড়ে উঠছে ছোট ছোট সাজানো-গোছানো ঘর-বাড়ি৷ ঘরগুলো তৈরি হচ্ছে সেনাবাহিনীর সহায়তা এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে৷

প্রতিটি পরিবারের জন্য ঘর তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে মাত্র সাড়ে চারশ' মার্কিন ডলার৷ বোঝাই যায়, ঘরগুলো তৈরি করা হচ্ছে দরিদ্রদের জন্য৷ ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে ৬৪টি ঘর৷ ২৫০ জনের মতো দরিদ্র রাখাইন এসে ঠাঁই নিয়েছেন সেখানে৷

এতদিন কেন সেখানে আসেননি? এখন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বার্তা সংস্থা এএফপিকে চিট সাইন ইয়েইন বললেন, ‘আমরা আসলে ওই কালাদের (রোহিঙ্গা) ভয় পেতাম৷ তাই এতদিন এখানে আসার কথা ভাবতেই পারিনি৷ কিন্তু এখন তো ওরা নেই, তাই আমাদের আত্মীয়দের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেলাম৷’

বিশ্লেষকরা বলছেন, এক সময়ের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত লোকালয়ে ‘মুসলিমমুক্ত এলাকা’ গড়ে তোলার জন্যই এভাবে পরিকল্পনামাফিক রাখাইনদের জন্য আবাসন গড়ে তোলা হচ্ছে৷ এ আশঙ্কা যে ভুল নয় তার প্রমাণ পাওয়া গেল উহ্লাস-এর কথায়৷

রাখাইন রাজ্যের এই সংসদ সদস্য এএফপিকে জানালেন, ‘এই পুরো এলাকাটা মুসলিমদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল৷ সেনা অভিযানের পর তারা পালিয়ে গেছে৷ তাই এখন এখানে আমাদের রাখাইনদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে৷’

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ব্যাপক সেনা অভিযানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে৷ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হলেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি৷

গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রথম ধাপে ৮০৩২ জনকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য তাদের বিস্তারিত তথ্য মিয়ানমার সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছিল৷ কিন্তু মিয়ানমার জানিয়েছে, ৮০৩২ জনের মধ্যে মাত্র ৩৭৪ জনকে ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব৷

দেশটির দাবি, বাকিরা যে মিয়ানমারে ছিলেন তা প্রমাণের জন্য উপযুক্ত তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ৷ (ডিডব্লিউ ও এএফপি)

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১১৩৭ঘ.)