ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের উদ্বেগ

ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের উদ্বেগ

ঢাকা, ৩১ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সীমান্তবর্তী এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। শুক্রবার ওই হামলার ঘটনায় ১৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। আহত হয়েছে ১ হাজার ২০০-এর বেশি।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের অধিকার ও ভূমি দিবস (ল্যান্ড ডে) উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী এলাকায় ছয় সপ্তাহব্যাপী বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়েছে শুক্রবার। সকাল থেকে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হতে থাকে নারী, শিশুসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। সীমান্তের কাছাকাছি চলে যায় অনেকে। তাদের ফেরাতে গুলি করতে শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফেলা হয় ড্রোন থেকে।

এ ঘটনার পর শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদ এক জরুরি বৈঠক করে।

জাতিসংঘের এক মুখপাত্র বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস একটি ‘নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের’ আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি শান্তি প্রচেষ্টা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য জাতিসংঘ ‘প্রস্তুত’ বলেও জানিয়েছেন।

গাজা পরিস্থিতির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপায় বের করতে কুয়েতের অনুরোধে জরুরি বৈঠকটি ডাকা হয়।

সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব টায়ে ব্রুক জেরিহুন বলেন, আগামী দিনগুলোতে গাজা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

ভোররাতে জরুরি বৈঠক ডাকায় ইসরায়েলি কর্মকর্তারা উপস্থিত হতে না পারায় যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র হতাশা ব্যক্ত করেছেন। শীর্ষ কূটনীতিকেরা তাদের পরিবর্তে ডেপুটিদের পাঠিয়েছেন।

মার্কিন কূটনীতিক বলেন, সব পক্ষের জন্য নিরপেক্ষ হওয়া নিরাপত্তা পরিষদের জন্য জরুরি। তিনি আরো বলেন, আজকের প্রাণহানির ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত।

ফরাসি প্রতিনিধি বলেন, গাজায় সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, গাজা ভূখণ্ডে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বৈঠকের আগে এক লিখিত বিবৃতিতে এই সহিংসতার জন্য হামাসকে দায়ী করেছেন।

ইসরায়েলি দখলদারির প্রতিবাদে ১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হন। দিনটির স্মরণে পালিত হয় ‘ল্যান্ড ডে’। দিবসটির স্মরণে আয়োজিত ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ নামের বিক্ষোভ সামনে রেখে ইসরায়েলের সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া নিরপেক্ষ অঞ্চলের (বাফার জোন) প্রান্তে পাঁচটি ক্যাম্প তৈরি করেছেন ফিলিস্তিনিরা। এই বিক্ষোভ শেষ হওয়ার কথা ফিলিস্তিনি জনগণের মহাবিপর্যয়ের বার্ষিকী বা নাকবা দিবসে, অর্থাৎ ১৫ মে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হামাস।

ইসরায়েল ১৯৪৮ সালের ১৫ মে ব্রিটিশদের সহযোগিতায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় এবং অস্ত্রের মুখে সাড়ে ৭ লাখ মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ দিনটির স্মরণে প্রতিবছর নাকবা দিবস পালন করা হয়।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/১৯৪৪ঘ.)