লক্ষ্যবস্তুতে সফল হামলা, দাবি পেন্টাগনের

লক্ষ্যবস্তুতে সফল হামলা, দাবি পেন্টাগনের

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের নিয়ন্ত্রণাধীন যেসব জায়গায় রাসায়নিক অস্ত্র মজুত ছিল- সেসব লক্ষ্যবস্তুতে সফল হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে পেন্টাগন।

গত সপ্তাহে সিরিয়ার দুমা শহরে কথিত রাসায়নিক হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন আর ফ্রান্স শুক্রবার ভোরে এ হামলা চালায়।

পেন্টাগন জানিয়েছে- সিরিয়ার তিনটি জায়গায় তারা হামলা চালিয়েছে -

• দামেস্ক-এর একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র। এই গবেষণাগারটি রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্র উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

• হোমস শহরের পশ্চিমে একটি এলাকা - যেখানে রাসায়নিক অস্ত্র মজুত করে রাখা হতো বলে দাবী করা হচ্ছে।

• হোমস শহরেই একটি গুরুত্বপূর্ণ সেনা ঘাটি। এখানে রাসায়নিক অস্ত্রের নানা উপাদান মজুত রাখা হত বলে দাবী করা হয়েছে।

সাত বছর ধরে সিরিয়ায় যে গৃহযুদ্ধ চলছে, তার মধ্যে আজ সকালের হামলাগুলিকে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আশাদের সরকারের ওপরে পশ্চিমা দেশগুলির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।

জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক যৌথ অপারেশন চলছে।

ব্রিটেন-ভিত্তিক সংগঠন 'সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউমান রাইটস' অবশ্য দাবী করেছে পেন্টাগন যে তিনটি স্থানে হামলার কথা বলেছে, তার থেকে অনেক বেশী জায়গায় হামলা হয়েছে।

“বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র, বেশ কয়েকটি সেনা ঘাঁটি ছাড়াও রাজধানী দামেস্ক-এ অবস্থানরত রিপাবলিকান গার্ড আর চতুর্থ ডিভিশনের ঘাঁটিগুলির ওপরেও হামলা হয়েছে।”

রাজধানী দামেস্ক-এর এক বাসিন্দা বিবিসিকে জানিয়েছেন, “আমাদের মাথার ওপরেই যেন যুদ্ধ চলছিল । আমি নিজেই অন্তত ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র গুনতে পেরেছি। অনেক উঁচু দিয়ে যাচ্ছিল ওগুলো - তারপর ঘুরপাক খাচ্ছিল - যেন টার্গেট খুঁজে বেড়াচ্ছিল ওগুলো।”

হামলার বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে নিশ্চিত করে বলেছেন যে “শক্তি প্রয়োগ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই”।

এ অভিযানে ফ্রান্সের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাখোঁ।

এদিকে হামলার বিষয়ে টেলিভিশনে প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটেনের প্রদানমন্ত্রী তেরেসা মে বলেছেন যে এই সমন্বিত আক্রমণের উদ্দেশ্য সে খানে সরকার পরিবর্তন ঘটানো নয় বরঞ্চ আসাদ সরকারকে রাসায়নিক অস্ত্র থেকে বিরত রাখা। তিনি আরো বলেন যে সিরিয়ার শাসকরা যখন নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারে না।

প্যারিসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ এক বিবৃতিতে বলেছেন আমরা রাসায়নিক অস্ত্রের এই ব্যবহারকে স্বাভাবিক ভাবে দেখতে পারিনা। তিনি আরো বলেন যে সিরীয় সরকারের ব্যাপারে বাস্তবতা এবং তাদের দায় নিয়ে কোন সংশয় নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন যে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে এই আভিযান শুরু হয় ওয়াশিংটন সময়ে শুক্রবার রাত ৯টায়। রাজধানী দামেস্ক এবং হমস শহরে , সিরিয়ার রাসয়নিক অস্ত্রের স্থাপনার উপর শত শত ক্রুজ ক্ষেপসনাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জিম ম্যাটিস পেন্টাগন সংবাদদাতাদের বলেছেন যে এখন একটিবার অভিযান চালানো হয়েছে, কিন্তু হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে ভবিষ্যতে আরো অভিযান চলতে পারে।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২০৪৪ঘ.)