রোহিঙ্গা নারীর সাত সন্তানসহ ৬০ আত্মীয় খুন

রোহিঙ্গা নারীর সাত সন্তানসহ ৬০ আত্মীয় খুন

ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যাকালে এক রোহিঙ্গা নারীর ৭ সন্তান ও স্বামীসহ তার পরিবারের অন্তত ৬০ সদস্যকে হত্যা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। আলমাস খাতুন নামের এই রোহিঙ্গা নারী নিজের চোখের সামনে তাদের খুন হতে দেখেছেন। তাকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়। স্বামী-সন্তান ও আত্মীয়স্বজন হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব এই নারীর মতো বহু রোহিঙ্গা নারী পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।

সম্প্রতি খ্যাতনামা সংবাদমাধ্যম স্টাফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রাখাইনের তুলাতলি গ্রামের বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী আলমাস খাতুন তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।

আলমাস বলেন, আমার চোখের সামনেই হত্যা করা হয়েছে আমার পরিবারের সবাইকে। তিনি আরো জানান, সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যার অংশ হিসেবে তাদের গ্রামে চালানো হয় নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও গণধর্ষণ, রোহিঙ্গা মুসলিমদের টার্গেট করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে ঘরবাড়ি।

আলমাস জানান, ৩০ আগস্ট সেনারা গোলাগুলি ও হইচই করতে করতে তাদের গ্রামে প্রবেশ করে। এখনো প্রতিরাতে সেই দিনের সেই ভয়াবহ দৃশ্য দুঃস্বপ্ন হয়ে ফিরে আসে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, একজন সেনা তার তিন মাসের বাচ্চাকে তার কোল থেকে কেড়ে নেয় এবং ছুরি দিয়ে তার পেট চিড়ে ফেলে। এরপরই তাদের বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় সেনারা।

অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি আরো বলেন, তারা আমার বৃদ্ধ বাবাকে গুলি করে। তার মুখের মধ্যে একটা লাঠি ঢুকিয়ে দেয় এবং গলা চিড়ে ফেলে। সন্তানদের কথা আমার সবসময় মনে পড়ে। তারা আমার অন্য সন্তানদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। আমি তাদের বাঁচাতে পারিনি। আমার হৃদয় ভেঙে যায়। তারা একে একে আমার সাত সন্তান, আমার স্বামী ও তার দুই ভাইকে হত্যা করে।

আলমাস জানান, তার আত্মীয়স্বজনও একই গ্রামে পাশাপাশি বাড়িতে বাস করতেন। তাদেরও একইভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাদের অনেককে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা জবাই করে হত্যা করেছে।’ শরণার্থী শিবিরের আরও বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা গণহত্যার সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা প্রায় সবাই বলেছেন, হামলাকারীদের মধ্যে বহু বৌদ্ধ সন্ন্যাসীও ছিল।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/ওটি/১০১৩ঘ.)