ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে ‘আপত্তি’ নেই মমতার

ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে ‘আপত্তি’ নেই মমতার

ভারত, ৭ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও সেই ইচ্ছের কথা মুখ ফুটে বলতে পারছেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বরং তার কৌশলী জবাব, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা খারিজ করার আমি কে?

ভারতের ‘ইন্ডিয়া টুডে’ পত্রিকাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে এভাবেই উত্তর দিয়েছেন মমতা। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার প্রতি তার কোন ইচ্ছা আছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে মমতা জানান, এটা খুবই বোকা প্রশ্ন। প্রথমত আমি বলবো যে আমার কোন ইচ্ছা নেই। আমি একজন সাধারণ ব্যক্তি এবং আমার কাজ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। কিন্তু একটি যৌথ পরিবারের সদস্য হিসেবে আমরা প্রত্যেককে সাহায্য করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী বাছাই করার পরিবর্তে আমাদের সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।

এর পরই তাকে প্রশ্ন করা হয় তবে কি প্রধানমন্ত্রীর দৌড় থেকে তিনি নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখছেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে মমতার পাল্টা জবাব, আমি দূরে সরিয়ে রাখার কে? আমি জানি যে অনেক লড়াইয়ের পরে আমি এখন দুঁদে রাজনীতিক, আমি একজন সিনিয়র রাজনীতিক। আমি ৭ বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছি, দুই বার বিধায়ক এবং দুই বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি। তাই আমি এমন কিছুই বলবো না, যেটা অন্যরা নাও পছন্দ করতে পারেন।

আগামী বছরই দেশটিতে লোকসভার নির্বাচন, কিন্তু তার আগে দেশটিতে একাধিক উপ-নির্বাচনে বিজেপির বিপর্যয়ের পর দল ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে বিরোধীদের ধারণা তারা যদি একজোট হয়ে প্রার্থী দেয় তবে বিজেপি’র ভোট ব্যাঙ্কে আঘাত হানতে পারবে এবং আগামী নির্বাচনে বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতায় ফিরে আশার স্বপ্নে পানি ঢেলে দিতে পারবে। আর কৌশলে এই কাজটিই করে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জি।

এই মুহূর্তে তিনি কেবলমাত্র তার নিজের রাজ্যের সেনাপতিই নন বরং সারা ভারত থেকেও আওয়াজ উঠছে তাকে প্রধানমন্ত্রী করার। তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবরা। এমন এক পরিস্থিতিতেই মমতার এই মন্তব্য।

প্রধানমন্ত্রী হতে তার কোন আপত্তি নেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর- এরকম এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মমতা জানান, এটা তার বিশেষ অধিকার। তার দল যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে তবে কেন নয়? এটা জনগণের ওপর নির্ভর করে।

তবে রাহুল প্রসঙ্গে মমতার অভিমত, আমি কোন দিনই রাহুলের সাথে কাজ করিনি, তাই আমাকে কিছুটা সময় দেওয়া হোক। ওঁ হল তরুণ প্রজন্মের নেতা, ওঁদের এখন নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী কাজ করতে দেওয়া হোক। তা ছাড়া ওঁ কংগ্রেস পরিবার থেকে উঠে এসেছে। তাদের প্রতি আমার সম্মান ও শ্রদ্ধা রয়েছে। তারা যেভাবে দেশের সেবা করতে চাইছেন, সেরকম ভাবেই করতে দেওয়া হোক।

যদিও রাহুলের মা ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া সম্পর্কে মমতার মন্তব্য, তার সাথে আমার সম্পর্ক খুবই ভাল। তিনি খুবই ভদ্র, নম্র। তিনি সব কথা মন দিয়ে শোনেন। তার সাথে আমার কোনদিন ঝগড়া হয়নি।

মমতা আরো বলেন, রাজীব গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধী সম্পর্কে আমি যেটা বলতে পারি রাহুল সম্পর্কে আমি সেটা বলতে পারি না কারণ ওঁ অনেক জুনিয়র।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৪০৯ঘ.)