নির্বাচনী মিছিলে আত্মঘাতী হামলা

পাকিস্তানে আওয়ামী পার্টির প্রার্থীসহ নিহত ৮৯

পাকিস্তানে আওয়ামী পার্টির প্রার্থীসহ নিহত ৮৯

ঢাকা, ১৩ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : পাকিস্তানে পৃথক দুইটি নির্বাচনী সমাবেশে বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ৮৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো প্রায় দেড়শ’ জন। শুক্রবার দেশটির বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুন প্রদেশে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি)প্রার্থী নবাবজাদা সিরাজও নিহত হয়েছেন। এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের দৈনিক ডন।

খবরে বলা হয়, ২৫শে জুলাই পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে এক সপ্তাহে এ নিয়ে তৃতীয় বারের মত নির্বাচনী জনসভায় হামলার ঘটনা ঘটল।

শুক্রবার বিএপি নেতা সিরাজকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তিনি বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার বড় ভাই ছিলেন বেলুচিস্তানের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নবাব আসলাম রাইসানি। হামলার পরে আহতদের নিকটস্থ মাস্তুং ডিস্ট্রিক্ট হেড কোয়াটার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সিরাজ রাইসানিকে কোয়েটাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি এ বছরের মার্চ মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জুনে সিরাজ তার দল বেলুচিস্তান মুত্তাহিদা মাহাজকে বিএপির সাথে যুক্ত করেন। তার ছেলে আকমল রাইসানি ও ২০১১ সালে এক হামলায় নিহত হয়েছিল।

এদিকে, পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের শহর বান্নুতে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় বোমা হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ জন ও আহত হয়েছেন ১৯ জন।

শুক্রবার পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক দল জেইউআই-এফ আয়োজিত এক জনসভা শেষে এ হামলা চালানো হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জনসভাটি করা হয়েছিল হুয়াইদ অঞ্চলে। প্রচন্ড বিস্ফোরণে সমাবেশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করছিল।

তিনি জানান, সমাবেশস্থলে একটি মোটরসাইকেলে স্বয়ংক্রিয় বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে দূর থেকে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। সমাবেশটি আয়োজন করেছিলেন খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আকরাম খান দুরানি। তিনি জেইউআই-এফ পার্টির হয়ে পাকিস্তানের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি অক্ষত রয়েছেন।

এর আগে মঙ্গলবার, পেশওয়ারে এক জনসভায় আত্মঘাতি বোমা হামলার ঘটনায় বিখ্যাত রাজনীতিবিদ হারুন বিলৌর নিহত হন। এতে আরো ২০ জন নিহত ও ৬৯ জন আহত হয়। ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবানের পাকিস্তান শাখা। ২০১২ সালে জঙ্গিবাদবিরোধী মনোভাবের কারণে বিলৌরের বাবাকেও হত্যা করেছিল তালেবান জঙ্গিরা। তবে এখন পর্যন্ত শুক্রবারের বোমা হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।

২০১৩ সালে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনপূর্ব সময়ে বিভিন্ন সহিংসতায় প্রায় ১৫৮ জন নিহত হয়েছিল। পাকিস্তান ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীগোষ্ঠি তেহরিক-ই-তালিবান ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ করে আসছে। ২০০৭ সাল থেকে সংগঠনগুলো পাকিস্তানে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হামলা চালিয়ে আসছে।

২০১৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জঙ্গিগোষ্ঠিগুলোকে তাদের ঘাটি উত্তর ওয়াজিরিস্তান থেকে উতখাতের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করে। এর ফলে এ অঞ্চলে সহিংসতার পরিমাণ কমে আসে। তবে, এখনো সাধারণ মানুষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপরে বিক্ষিপ্তভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২০০৫ঘ.)