পাকিস্তানে নির্বাচনী জনসভায় হামলা, নিহত ১৩২

পাকিস্তানে নির্বাচনী জনসভায় হামলা, নিহত ১৩২

ঢাকা, ১৪ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : পাকিস্তানে পৃথক দুইটি নির্বাচনী সমাবেশে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ১৩২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো প্রায় দেড়শ’ জন। শুক্রবার দেশটির বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুন প্রদেশে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) প্রার্থী নবাবজাদা সিরাজ রাইসানিও নিহত হয়েছেন। তিনি এবারের নির্বাচনে পিবি-৩৫ (মাস্তুং) আসনের প্রার্থী ছিলেন। হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, ২৫শে জুলাই পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এক সপ্তাহে এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো নির্বাচনী জনসভায় হামলার ঘটনা ঘটলো।

বেলুচিস্তানের ডিসি কাইম লাসারি হামলায় ১২৮ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া আরো ১২০ জন আহত হয়েছে বলে জানান তিনি। পুলিশ বলছে, বেলুচিস্তানে বিএপি নেতা সিরাজকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তিনি বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির পক্ষে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

বেলুচিস্তানের বোম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড জানিয়েছে, সেখানে আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। হামলায় প্রায় ২০ কেজি ওজনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়। বিস্ফোরণে বিএপি নেতা রাইসানি গুরুতর আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কোয়েটার হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

এ বছরের জুন পর্যন্ত সিরাজ রাইসানি আরেক রাজনৈতিক দল বেলুচিস্তান মুত্তাহিদা মাহাজের (বিএমএম) প্রধান ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি বিএপি’র সঙ্গে জোট গঠন করেন। আসন্ন নির্বাচনে বিএপি’র পক্ষে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তার বড় ভাই নওয়াব আসলাম রাইসানিও একই আসনে প্রার্থী হয়েছেন। তবে, তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন। প্রসঙ্গত, নওয়াব আসলাম রাইসানি বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

বোমা বিস্ফোরণের পরপরই বেলুচিস্তানের হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। আহতদের নিকটস্থ মাস্তুং ডিস্ট্রিক্ট হেড কোয়ার্টার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, সিরাজ রাইসানির ছেলে আকমল রাইসানিও ২০১১ সালে এক হামলায় নিহত হয়।

এদিকে, পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের শহর বান্নুতে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় বোমা হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো ১৯ জন। শুক্রবার পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক দল জেইউআই-এফ আয়োজিত এক জনসভা শেষে এ হামলা চালানো হয়। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জনসভাটি করা হয়েছিল হুয়াইদ অঞ্চলে। প্রচ- বিস্ফোরণে সমাবেশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তিনি জানান, সমাবেশস্থলে একটি মোটরসাইকেলে স্বয়ংক্রিয় বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে দূর থেকে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। সমাবেশটি আয়োজন করেছিলেন খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আকরাম খান দুরানি। তিনি জেইউআই-এফ পার্টির হয়ে পাকিস্তানের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। তবে, হামলায় তিনি অক্ষত রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার, পেশওয়ারে এক জনসভায় আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় বিখ্যাত রাজনীতীবিদ হারুন বিলৌর নিহত হন। এতে আরো ২০ জন নিহত ও ৬৯ জন আহত হয়। ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবানের পাকিস্তান শাখা। ২০১২ সালে জঙ্গিবাদবিরোধী মনোভাবের কারণে বিলৌরের বাবাকেও হত্যা করেছিল তালেবান জঙ্গিরা। তবে, এখন পর্যন্ত শুক্রবারের বোমা হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১০০০ঘ.)