বিমান বন্দর সড়ক ছেড়ে কাকরাইল-ইজতেমায় অবস্থানের ঘোষণা

বিমান বন্দর সড়ক ছেড়ে কাকরাইল-ইজতেমায় অবস্থানের ঘোষণা

ঢাকা, ১০ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : বিশ্ব তাবলিগ জামাতের আমির ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ সাদকে ঠেকানোর দাবিতে বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নেওয়া তাবলিগ কর্মী ও কওমিপন্থী আলেমদের একাংশ সেখান থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের আশপাশে অবস্থান করার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাওলানা মোহাম্মদ সাদ তাবলিগ জামাতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন- এমন বক্তব্য দিয়ে আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গোলচত্বরের পূর্ব পাশে বিক্ষোভ-সমাবেশ শুরু করে বিক্ষুব্ধরা। তারা দাবি করে, মাওলানা সাদ বিমানবন্দরে রয়েছেন। তাঁকে দিল্লিতে ফেরত পাঠাতে হবে।

বিক্ষোভ-সমাবেশ ও অবরোধের ফলে ওই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়তে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে সাধারণ যাত্রী ছাড়াও দেশের বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। অনেকে বাধ্য হয়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা হয়।

যেখানে আলেমরা বিক্ষোভ করছে, তার পেছনে একটি ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘মাওলানা সাদ সাহেবের সরকারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিশ্ব ইজতেমায় আসার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বস্তরের ইমানদারদের তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ-সমাবেশ’।

বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মাহফুজুল হক বলেন, আমরা জানতে পেরেছি মাওলানা সাদ বিমানবন্দর থেকে কাকরাইল মসজিদে চলে গেছেন। তাই এখানের জনগণের দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে এখানকার বিক্ষোভ-সমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করছি। ‘পাশাপাশি আমরা মাওলানা সাদকে ঠেকাতে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমাএলাকায় অবস্থান করব।’

এসময় বেফাক নেতা মহাখালী থেকে কাকরাইল পর্যন্ত সব মাদ্রাসার ছাত্রদের অবস্থান কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বিশ্ব ইজতেমা এলাকায়ও একইভাবে অবস্থানের ডাক দেন। বিমানবন্দর থেকে কাকরাইল অভিমুখে মিছিলের ঘোষণাও দেওয়া হয়।

সভায় শেষ বক্তব্য দেন তাবলিগ সুরক্ষা কমিটিও বেফাকের জ্যেষ্ঠসহ-সভাপতি আল্লামাআশরাফ আলী। তিনি বলেন, মাওলানা সাদ কোরআন শরিফের ভুল ব্যাখা করেছেন এবং হযরত মুসা (আ.) সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন। তিনি যে পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে না যাবেন সেই পর্যন্ত এই অবস্থান চলবে।

বিমানবন্দর সড়কে সভা শেষে সেখানে দোয়া করা হয়। এরপর সমবেত মুসুল্লিরা সেখানে সড়কেই আছরের নামাজ আদায় করে।

এরই মধ্যে ভারতের তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা মুহাম্মদ সাদের বাংলাদেশে আসা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ দুই গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। মাওলানা সাদ আজ বাংলাদেশে আসছেন—এমন খবরে তাঁকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেওয়ার দাবিতে বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় বিক্ষোভ হয়।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সাদের ‘বিতর্কিত’বক্তব্যের কারণে তারা বিরোধিতা করছে। তারা শুনেছেন, সাদ এরই মধ্যে ঢাকা বিমানবন্দরে এসেছেন। তাকে সেখান থেকেই দিল্লি পাঠানোর দাবি করেন তারা।

অন্যদিকে বিশ্ব ইজতেমায় সাদের অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে গত সোমবার আবেদন জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ তাবলিগ জামাতের ছয় শূরা সদস্য।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯২৭ঘ.)