লন্ডনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে আলোচনা সভা

সেনাবাহিনীকে জনগণের পক্ষে, প্রশাসনকে নির্ভয় থাকার আহবান তারেক রহমানের

সেনাবাহিনীকে জনগণের পক্ষে, প্রশাসনকে নির্ভয় থাকার আহবান তারেক রহমানের

লন্ডন, ১৩ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ): বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে জনগণের পক্ষে ও প্রশাসনকে নির্ভয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহবান জানান।

সহস্রাধিক প্রবাসী বাংলাদেশির উপস্থিতিতে মঙ্গলবার পূর্ব লন্ডনের হাইস্ট্রীট নর্থ এর দি রয়্যাল রেজেন্সী হোটেলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সেনাবাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, "আপনারা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, আপনাদের প্রতি জনগণের সম্মান রয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রধানের একজন সন্তান হিসেবে আমি আপনাদের আহবান জানাবো এই অবৈধ সরকারের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে আপনারা কাজ করবেননা। নির্বাচনে ভোট ডাকাতির যে উদ্যেগ সরকার গ্রহণ করছে তাতে আপনারা সামিল হবেননা। ইভিএম ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার হরণের যে নীল নকশা সরকার প্রণয়ন করছে তাতে আপনারা জড়াবেননা। গণতন্ত্র প্রিয় মানুষের পক্ষে থাকুন। জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হোন।"

বেসামরিক প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, "সরকার পরিকল্পিতভাবে একটি অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বিগত দশ বছরে চাকরি পাওয়া কারোরিই চাকরি থাকবেনা-এটি মিথ্যা প্রচারণা। কারো কোনো ভয় নেই, আপনারা নির্ভয়ে, নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন, বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আপনাদের পাশে থাকবে।"

তারেক রহমান বলেন, "আমরা জানি অবৈধ সরকারের হুকুম তামিল করতে গিয়ে অনেক অনৈতিক কাজ কাউকে কাউকে করতে হয়েছে। যার জন্য আপনারা প্রস্তুত ছিলেননা। এবং এর দায়ভারও আপনাদের নয়।"

ছাত্র, যুবকসহ সকলের উদ্দেশ্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "আসন্ন নির্বাচন নিছক একটি নির্বাচন নয়। এটি একটি আন্দোলন। এ আন্দোলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের, মানুষের মৌলিক, মানবিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার, গুম-খুনের জবাব, বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা অফিসার ও সাগর-রুনিসহ অসংখ্য হত্যার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, লুটপাট-দুর্নীতি, আর লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের জবাব, নিরাপদ সড়ক শুধু নয় নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার বৃহত্তর আন্দোলন।"

আগামী নির্বাচনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তোলনা করে মজুলম এই জননেতা বলেন, "যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাননি তাদের জন্য আজ সামনে সুযোগ এসেছে।"

তিনি দশ কোটি ভোটারকে এই মুক্তিযুদ্ধের যোদ্ধা আখ্যায়িত করে বলেন, "এই যুদ্ধের অস্ত্র হবে ব্যালট। প্রতিটি কেন্দ্রে বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দশ কোটি ভোটারে সঙ্গে থাকবে।"

দেশে সরকারের চলমান অপশাসনের চিত্র তোলে ধরে তারেক রহমান বলেন, "আজকে গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। বিএনপির হাজার-হাজার, লক্ষ নেতা-কর্মীকে গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলা দিয়ে বন্দি করে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। যখনি সুযোগ পাচ্ছে, এ সরকার চেষ্টা করেছে, কিভাবে গুম-খুনের মাধ্যমে বিএনপির হাজারো নেতা-কর্মীদের গায়েব করে দিতে। কারণ এই একটি দল (আওয়ামী লীগ), যারা বাংলাদেশে ক্ষমতাকে ধরে রেখেছ অবৈধভাবে।সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ পেছেন ফিরে তাকালেই দেখতে পাবেন যত বারই তারা দেশের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পেয়েছে প্রত্যেক বারের পরিস্থিতি একিরকম।"

তিনি বলেন, "ক্ষমতাসীন সরকার জানে কিভাবে সংবাদপত্রের টুঁটি চেপে ধরতে হবে, একিভাবে তারা চেষ্টা করেছে কিভাবে গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরতে হবে, তারা চেষ্টা করেছে কিভাবে জনগণের উপর অত্যাচার, নির্যাতনের স্টীম-রোলার চালাতে হবে।"

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের প্রেক্ষপট তোলে ধরে তারেক রহমান বলেন, " ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পূর্ববর্তী সময়ে দেশ কি অবস্থায় ছিলো কম-বেশি আপনাদের অনেকেরি ধারণা রয়েছে। যে লক্ষ্য আর উদ্দেশ্য নিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলেন, লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখের সাথে কষ্টের সাথে সাত কোটি মানুষ দেখেছে যেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে, উদ্দেশ্য নিয়ে, লক্ষ্য নিয়ে যুদ্ধ হয়েছিল, তার কোনটিই বাস্তবায়িত হয়নি। বরং প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তৎকালীন পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। ব্যাংক লুুট, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে গুম, খুন, হত্যা, কারাবরণ, গায়েবী মামলা, মিথ্যা মামলা, পাটের গুদামে আগুন, পত্র-পত্রিকা বন্ধ, ব্যাংকের টাকা তসরুপ, হেন কোনো ঘটনা ছিলো না যা ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর পূববর্তী সময়টাতে ঘটেনি। এবং ঘটতে ঘটতে যখন পরিস্থিতি এমন একটি পর্যায়ে আসলো তখন সিপাহি এবং জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমেই এই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। পরবর্তী ঘটনাও আপনারা জানেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতিজিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।"

তিনি আরো বলেন, "শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশ ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলো। যে ষড়যন্ত্র, যে অত্যাচার-নির্যাতন শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ এর আগে, দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র, দেশের মানুষের বিরুদ্ধ যে ষড়যন্ত্র ক্ষণিকের জন্য তা থেমে থাকলেও আবার ১৯৮১ সালের দিকে শুরু হলো সেই ষড়যন্ত্র। বিভিন্ন সময়ে তা থামিয়ে দিয়েছে, রুখে দিয়েছে দেশের মানুষ। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে থাকেনি, তারাও তাদের চেষ্টা চালিয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই আজকের বর্তমান পরিস্থিতির অাবির্ভাব হয়েছে বাংলাদেশে। আজ থেকে ১০ বছর আগে ১৯৭৫ পূর্ববর্তী যে পরিস্থিতি ছিলো বাংলাদেশে, যে অবস্থাটা ছিলো, অর্থনীতি, সমাজ, শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রে যে অবস্থাটা ছিলো, আজকে আপনারা সেটা মিলিয়ে দেখুন। এটা তথ্য প্রবাহের যুগ, কোনো তথ্যই গোপন করা সম্ভব নয়। কেউ যদি চান সে সময়ে কি ঘটেছিল তা জানতে, বিদেশি, দেশি সকলরকম পত্র-পত্রিকা, বইয়ে সবকিছুতে তা উল্লেখ করা আছে। কেউ যদি তা মিলাতে চান তাহলে দেখা যাবে তখন অ্যানলগ পদ্ধতি ছিলো, সবকিছু অ্যানলগ পদ্ধতিতে হতো। এখন ডিজিটাল পদ্ধতি। দেশে ব্যাংক ডাকাতি বলেন, দেশের তথাকথিত উন্নয়ন বলেন, গুম বা হত্যার কথা বলেন, ডিজিটাল আইনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের কন্ঠরোধের কথাই বলেন, সবকিছুই বর্তমানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হচ্ছে।"

দেশের মানুষ অপশাসন থেকে মুক্তি চায় উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "আজকে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ যখন একদিকে, সমগ্র মানুষ যখন চায় এই পরিস্থিতির পরিবর্তন, এ অবস্থা থেকে দেশকে বের করে নিয়ে আসতে, তখন শুরু হয়েছে আরেকটি নতুন ষড়যন্ত্র। কী সেই ষড়যন্ত্র? কিছুদিন আগেই এখানে অনুষ্ঠিত একসভায় আমি বলেছিলাম- সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ যারা এই অনুষ্ঠান দেখেছিলেন তাদের সবার সামনে আমি বলেছিলাম- বিএনপি বিশ্বাস করে শহীদ জিয়ার একটি আদর্শে, একটি কথায়, একটি বাক্যে। বিএনপি বিশ্বাস করে জনগণি হলো সকল ক্ষমতার উৎস। এবং বরাবরই বিশ্বাস করে যে আন্দোলনের সঙ্গে জনগণ সম্পর্কিত, সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যুবক, তরুণ সকলে যে আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত-বিএনপি সে আন্দোলনে বিশ্বাস করে। বিএনপি বিশ্বাস করে এরকম একটি আন্দােলনের মাধ‌্যমে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। গত দুই দিন ধরে আপনারা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, টিভি, ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখেছেন হাজারো লক্ষ মানুষ আমাদের পল্টন অফিসের সামনে জড়ো হয়েছে। এই যে মানুষগুলো অফিসের সামনে এসেছে এখানে কি শুধু আমাদের নেতা-কর্মীরাই রয়েছে? না আমাদের নেতা-কর্মীরাই এখানে শুধু নয়, এখানে এসে জড়ো হয়েছেন সাধারণ মানুষেরাও। সাধারণ মানুষের এই উপস্থিতিই বলে দিচ্ছে যে দেশের মানুষ কি চায়। এই উপস্থিতিই আজকে বলে দিচ্ছে দেশের মানুষ এই অবস্থার পরিবর্তন চায়।"

দেশের মানুষ পরিবর্তন চায় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, "ইতিমধ্যেই আপনারা দেখেছেন বা শুনেছেন, পত্র-পত্রিকায় এসেছে-বর্তমানের এই খয়ের খাঁ নির্বাচন কমিশন একটি চিঠি ইস্যু করেছে। পুলিশের আইজিকে তারা একটি চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠির সংক্ষেপটা এরকম- কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের অফিসের সামনে দেখা যাচ্ছে যে, নেতা-কর্মীদের ঢল নামাতে শোডাউন করা হচ্ছে। এটার উদ্দেশ্য হলো তারা ভয় পেয়ে গিয়েছে, এবং তাদের বিরুদ্ধে যে জনগণ একত্রিত হচ্ছে, এটিকে বন্ধ করার জন্যই খয়ের খাঁ নির্বাচন কমিশন এই চিঠিটি ইস্যু করেছে। কিন্তু জনগণ গত দুই দিনে, রাজশাহীর জনসভা, চট্টগ্রামের জনসভা, ঢাকার জনসভা, সিলেটের জনসভা-প্রত্যেকটি জনসভায় দেশের মানুষ বলে দিয়েছে তারা পরিবর্তন চায়।"

জনগণ অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, "আপনারা দেখেছেন এই কারণেই অবৈধ সরকার আমাদের প্রত্যেকটি জনসভায় চেষ্টা করেছে সভার গতিকে রোধ করে দেবার জন্য। চেষ্টা করেছে জনসভায় আগত নেতা-কর্মী, সাধারণ মানুষসহ সবার আসার গতি রোধ করে দিতে। কিন্তু তারা তা করতে সক্ষম হয়নি। এই জনসভার গতি রোধ করার জন্য সরকার দুই দিন, তিন দিন, একসপ্তাহ পূর্ব থেকে ঢাকার সভার আগে এর আশেপাশের জেলাগুলো, চট্টগ্রামের সভার আগে এর আশপাশের জেলাগুলো, রাজশাহীর সভার পূর্বে রাজশাহী মহানগরীসহ আশপাশের জেলাগুলো, সিলেটে সভা হবার পূর্বে তার আশপাশের জেলাগুলো থেকে আমাদের বহু নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু গ্রেফতার করেও তারা বিএনপি নেতা-কর্মী, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষদেরকে সরকার দমিয়ে রাখতে পারেনি।"

আসন্ন নির্বাচনকে জনগণের জন্য একটি বিপ্লব উল্লেখ করে বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, "আজকে আমরা আন্দোলনের নতুন মাত্রা, আর যাত্রার শুরু করেছি। নির্বাচন নামক যেই আন্দোলন এবং বিপ্লবের আমরা শুরু করেছি, এই আন্দোলন বা বিপ্লবের কর্মী শুধু আমার দলের নেতা-কর্মীরা নন। এই নির্বাচন নামক আন্দোলন, সংগ্রামের কর্মী আর নেতা হলো বাংলাদেশের দশ কোটি ভোটার। যে আন্দোলনের নেতা, কর্মী দশ কোটি সংখ্যক মানুষ হতে পারে সেই আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হতে পারেনা। আজকে এই অবৈধ সরকার খুব সূক্ষ্মভাবে, তারা ভালো করেই জানে যে আন্দোলনের শুরু হয়েছে, নির্বাচন নামের যে বিপ্লবে শুরু হয়েছে, যে আন্দোলনের শুরু হয়েছে- বিএনপি, ২০ দলীয় জোট, ঐক্যফ্রন্ট মিলে যে আন্দোলন শুরু করেছে তাতে কোটি কোটি মানুষ অংশগ্রহণ করবে। এবং সেই আন্দোলন সফল হতে বাধ্য। আর সেই আন্দোলনের মধ্যে তারা (সরকার) নতুন করে এক ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। "

উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য প্রশ্ন রেখে তারেক রহমান জিজ্ঞাসা করেন- কী সেই ষড়যন্ত্রের নাম, আপনারা বলতে পারেন? তিনি বলেন, ইভিএম।

তিনি আরো বলেন, "আজকে ইভিএম দিয়ে সরকার আন্দোলনকে দমাতে চায়, যড়যন্ত্র করতে চায়। যুক্তরাজ্য হচ্ছে পৃথিবীতে গণতন্ত্রের একটি পাদপীঠ। এই দেশেই তারা ইভিএম ব্যবহার করেনা। যুক্তরাষ্ট্রে সেটা ব্যবহার করা হয়েছিলো সেখানেও প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও ব্যবহার করা হয়েছিলো সেখানেও প্রতিবাদ হয়েছে, দেশটির পার্লামেন্টে একজন সংসদ সদস্য দেখিয়েও দিয়েছেন কিভাবে ইভিএমএ ভোট কারচুপি হয়। এতদিন ব্যাংক ডাকাতি করে জনগণের অর্থ, সম্পদ লুটপাঠ করেছে। এতদিন ধরে ভোট চুরি করতো, এই আওয়ামী লীগ নামক দলটির ইতিহাস হচ্ছে ভোট চুরির ইতিহাস। এখন তারা ইতিহাস করতে চাচ্ছে- ভোট ডাকাতির ইতিহাস।"

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "চার হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম কেনা হয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণের অর্থ যেরকম লুটপাট করছে, আরেক দিক দিয়ে তারা পরিকল্পনা নিয়েছে জনগণের ভোট ডাকাতির। আজকে তারা শুধু ভোট ডাকাতি করার চেষ্টা করেই ক্ষান্ত থাকতে চাইছেনা, তারা চেষ্টা করছে জনগণ এবং আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে মুখোমুখি করিয়ে দেবার।"

তিনি বলেন, "বিতর্কিত খয়ের খাঁ নির্বাচন কমিশন বলছে যেখানে যেখানে ইভিএম থাকছে সেখানে সেখানে সেনাবাহিনী থাকবে। আজকে আমি দেশপ্রেমিক সকল সেনাবাহিনীর সদস্যদের আহবান করবো দয়া করে আপনারা এই অবৈধ সরকারের সাথে গিয়ে জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিবেননা।"

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, "টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত প্রত্যেকটি বিএনপি নেতা-কর্মীর কাছে আমার আহবান থাকবে একতা ধরে রাখতে হবে। এরা (সরকার) চরের মতো বিভিন্নভাবে দলের মধ্যে ভয়-ভীতি দেখানোর চেষ্টা করবে, যাতে করে একতা ভেঙে যায়। আমাদেরকে যেকোনো মূল্যে এই একতা ধরে রাখতে হবে। আজ এই নভেম্বর মাস পর্যন্ত আমাদের নেতা-কর্মীরা যেভাবে একতা ধরে রেখেছে, আমাদের যেকোনো মূল্যে ত্যাগ স্বীকার করে এই একতাকে নির্বাচন পর্যন্ত, সেই মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ধরে নিয়ে যেতে হবে। শুধু সেইদিন পর্যন্ত নিয়ে গেলেই হবেনা, এই নির্বাচন নামক মুক্তিযুদ্ধে যে দশ কোটি যোদ্ধা রয়েছে, ভোটার নামক যে যোদ্ধারা রয়েছেন, প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে যেতে হবে মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রে অর্থাৎ ভোট কেন্দ্রে। ভোটকেন্দ্র হবে ভোটের দিন যুদ্ধ কেন্দ্র। সেই যুদ্ধের সৈনিক হবেন দশ কোটি ভোটার। এই যুদ্ধে উৎসাহিত করবে, উজ্জীবিত করবে আমার নেতা-কর্মীরা আর নেতৃত্ব দেবে দশ কোটি ভোটার, যারা দশ কোটি মুক্তিযোদ্ধা। এই দশ কোটি মুক্তিযোদ্ধার হাতিয়ার কোনো বন্দুক হবেনা, তাদের অস্ত্র হবে, হাতিয়ার হবে ব্যালট। কাজেই আমার ভোট আমি দেবা, যাকে ইচ্ছা তাকে দিবো।"

তিনি বলেন, "আমার নেতা-কর্মীদের দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিমে একটি পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করতে চাই। সেই পবিত্র দায়িত্বটি হচ্ছে - গত দশ বছর ধরে আপনারা অত্যাচার, নির্যাতন, কেস, খুন-জুলুম, নির্যাতন, গুমসহ সবকিছুর বিনিময়ে ত্যাগ স্বীকার করে এই প্রিয় দলকে ধরে রেখেছেন। আগামী দিনে আপনাদের দায়িত্ব এই দশ কোটি মুক্তিযোদ্ধাকে একত্র করা, সংঘবদ্ধ করা এবং ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেকটি নেতা-কর্মী এই দায়িত্ব পালন করার যোগ্য।"

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ এর পরিচালনায় বিশাল এই সমাবেশে কয়েকটি শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

(জাস্ট নিউজ/জিএস/০২২৫ঘ)