যুক্তরাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল

প্রাইমমিনিস্টার ইন ওয়েটিং থেরেসা মে

প্রাইমমিনিস্টার ইন ওয়েটিং থেরেসা মে

১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, ১২ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : আর একদিন পরই ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের দখল নিতে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে। বৃটেনের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বুধবার রাতেই তার অভিষেক ঘটছে। অনেকটা নাটকীয়ভাবে কনজারভেটিব পার্টির নেত্রী আন্দ্রেয়া লিডসম লিডারশীপ দৌঁড় থেকে সরে দাঁড়ালে প্রধানমন্ত্রীর পদ নির্বিঘ্নে হাতে ধরা দেয় থেরেসা মে’র।

সোমবার দুপুর ১২টা পনের মিনিটে পার্লামেন্টের কাছেই কাউলি স্ট্রিটে বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক, এমপি ও দলীয় সমর্থকদের সামনে একটি চিঠি পড়লেন আন্দ্রেয়া লিডসম। তাতেই বিনা মেঘে বজ্রপাত! উপস্থিত অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না লিডসম আসলেই কি পড়ছেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে গ্রাহাম ব্রাডলিকে (নির্বাচন কমিশনার) উদ্দেশ্য করে লিখা চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার সাথে সাথেই নড়ে চড়ে বসেন থেরেসা মে। দেখা করেন আউট গোয়িং প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সাথে। কিছু সময়ের ব্যবধানে ডেভিড ক্যামেরন বুধবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী থেরেসা মে কে স্বাগত জানান।

আজ (সোমবার) সকালে সর্বশেষ মন্ত্রীপরিষদ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় মন্ত্রীরা একে একে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রীটের দরজায় কড়া নেড়ে বিদায়ী মন্ত্রী পরিষদ সভায় যোগ দিতে যান।

প্রাইমমিনিস্টার ইন ওয়েটিং ও ক্যামেরনের ক্যাবিনেটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে’ও স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে পায়ে হেঁটে ১০ নং ডাউনিং স্ট্রীটের দরজায় কড়া নেড়ে প্রবেশ করেন।

বুধবার শেষ বারের মতো পিএমকিউ অর্থাৎ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রশ্নোত্তরপর্বে অংশ নিবেন ডেভিড ক্যামেরন। বিকালে বাকিংহাম প্যালেসে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগ পত্র জমা দিবেন তিনি। সাথে সাথেই নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হবেন অক্সফোর্ড গ্র্যাজুয়েট থেরেসা মে।

ব্রেক্সিট ভোটে হেরে যাবার পর নতুন নেতৃত্বের কাছে বৃটেনের গন্তব্য তুলে দেয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রীর দৌঁড়ে উঠে আসে অনেকগুলো নাম। এর মধ্যে ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার নেতৃত্বদানকারি কনজারভেটিব নেতা লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসন, জর্জ অসবর্ন, মাইকেল গোব ও আন্দ্রে লিডসম। একে একে প্রধানমন্ত্রীর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার দৌঁড় থেকে ছিটকে পড়লে ভাগ্য সু-প্রসন্ন হয় ইমিগ্রেশন বিরোধী বলে খ্যাত বৃটিশ মন্ত্রী থেরেসা মে’র।

ব্রেক্সিটের কারণেই বলি হলেন বৃটেনের এ যাবত কালের চৌকস প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। প্রধানমন্ত্রী পদ নিশ্চিত হবার পর সোমবার সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া প্রথম প্রতিক্রিয়ায় থেরেসা মে অবশ্য বলেছেন, ‘ব্রেক্সিট মিনস ব্রেক্সিট’ অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার সব প্রক্রিয়াই চূড়ান্ত করবেন তিনি। এই ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় কিভাবে নেতৃত্ব দিবেন থেরেসা মে তা দেখার প্রতিক্ষায় বৃটিশ জনসাধারণ।

(জাস্ট নিউজ/প্রতিনিধি/জিইউএস/১৬৩০ঘ)