প্রতিমন্ত্রীর সামনে মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিককে লাঞ্ছিত

প্রতিমন্ত্রীর সামনে মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিককে লাঞ্ছিত

রাজবাড়ী, ১৬ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : রাজবাড়ীতে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর সামনে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন জেলার প্রবীণ সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সানাউল্লাহ (৭২)। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি এবং রাজবাড়ী জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি।

রবিবার সকালে জেলা শহরের রেলগেট শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগের বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।

সাংবাদিক মোহাম্মদ সানাউল্লাহ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

সাংবাদিক মোহাম্মদ সানাউল্লাহ জানান, সকালে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যান। সকাল ৯টার দিকে প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পাশেই রেলগেট শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে বের হন। এই দৃশ্যের ছবি তুলছিলেন তিনি। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীর অফিসের কর্মচারী রিংকু তার সামনে এসে পড়েন। তিনি রিংকুকে বারবার সরে যেতে বললেও রিংকু সরে যাননি। একপর্যায়ে রিংকু তার জামার কলার ধরে স্মৃতিস্তম্ভের বেদীতে ফেলে দেন। এতে তিনি মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি হতভম্ব হয়ে পড়েন।

এই প্রবীণ সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা আরো বলেন, এমন ঘটনায় তিনি অপমানিত ও চরম বিব্রত বোধ করেছেন।

এদিকে ঘটনার পর শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, তার ভাই জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী ওই প্রবীণ সাংবাদিকের কাছে গিয়ে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

অপরদিকে এ ঘটনায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান কাভার করতে আসা দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি সৌমিত্র শীল চন্দন, দৈনিক কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেন, দৈনিক প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি এজাজ আহমেদ, চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের জেলা প্রতিনিধি সুমন বিশ্বাসসহ জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান বর্জন করে তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদ করেন এবং ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

রাজবাড়ী জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক করিম ইসহাক বলেন, ‘আমরা ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। মোহাম্মদ সানাউল্লাহ আমাদের সাংবাদিকদের অভিভাবক। তার লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক ও কষ্টের। আমরা শিগগিরই এ ব্যাপারে কর্মসূচি দেব।’

(জাস্ট নিউজ/একে/১৮২৮ঘ.)