মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: আইএফজে

মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: আইএফজে

ঢাকা, ৩১ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক নতুন খসড়া আইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে বলে মনে করে সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে) ও বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম। এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি আইএফজে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নতুন আইন অনুমোদনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার সংগঠনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন আইনের বিষয়ে আইএফজে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এতে স্বাধীনভাবে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছে।

খসড়া আইনটি বাস্তবায়ন করা হলে শুধু মত প্রকাশের স্বাধীনতাই খর্ব হবে না, বরং স্বাধীনভাবে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকেও বাধাগ্রস্ত করবে। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা হরণ ও বাক-স্বাধীনতা খর্ব করার জন্যই ৫৭ ধারাকে ব্যবহার করা হয়েছে।

আইএফজে মনে করে, নতুন আইনে সাংবাদিকদের হয়রানি করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তাই বাস্তবায়ন করার আগে আইনটি সংস্কার করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

উল্লেখ্য, সোমবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর সাইবার অপরাধ কমানোর জন্য এই খসড়া আইন প্রণয়ন করা হয়। মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ায় এখন এটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পেলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

নতুন আইনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাতিল করা হয়েছে। এতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধ বা জাতির পিতা সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে অপপ্রচার চালানো হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হতে পারে।

এছাড়া, মিথ্যা বা অপমানজনক সংবাদ প্রকাশ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর; ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার ও আইন অবমাননাকর সংবাদ প্রকাশ করলে ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সংবাদ সংগ্রহের জন্য কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্য সংগ্রহের জন্য বিনা অনুমতিতে প্রবেশ ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস দিয়ে কোনো কিছু রেকর্ড করাসহ গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার বা তল্লাশি করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এতে করে কোনো পুলিশ কর্মী যদি মনে করেন যে, এই আইনের আওতায় কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বা হচ্ছে বা হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাহলে তিনি ওই অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারবেন

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১০৪৫ঘ.)