গণমাধ্যম এখন লাইফ সাপোর্টে : মাহমুদুর রহমান

গণমাধ্যম এখন লাইফ সাপোর্টে : মাহমুদুর রহমান

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নির্বাচন শুক্রবার। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে মুহাম্মদ বাকের হোসাইন-খুরশীদ আলম এবং কাদের গণি চৌধুরী-শহিদুল ইসলাম পরিষদ ছাড়াও স্বতন্ত্রভাবে জাহাঙ্গীর আলম প্রধান সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন।

নির্বাচনে মোট ভোটার রয়েছেন এক হাজার ৬৩৯ জন। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, দেশের গণমাধ্যম এখন লাইফ সাপোর্টে কোমায় রয়েছে। এ সরকার থাকতে জ্ঞান ফিরবে না। গণমাধ্যমে স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে হলে গণমাধ্যমকর্মীদের আন্দোলনে নামতে হবে। এ আন্দোলনে অনেকে বাধা দেবেন, অনেকে সুবিধাবাদী অবস্থান নেবেন, তারপরও ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামতে হবে।

সভায় ডিইউজে সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন, বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আব্দুস শহীদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান ও যুগ্ম-সম্পাদক শাহীন হাসনাত।

মাহমুদুর রহমান বলেন, দেশের আইন-আদালত ও গণমাধ্যম ভিন্নমত দমনে ব্যবহার হচ্ছে। ৫৭ ধারার কালা কানুনের পর এবার ৩২ ধারা করা হয়েছে। ৩২ ধারার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আইনমন্ত্রী বলেছেন, ৫৭ ধারায় কিছু হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। তার মানে তিনি এ আইন অপব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন। যে আইনে প্রথম স্বীকার হই আমি। যে মামলায় এখনো কোন চার্জশীটই হয়নি সে মামলায় আমাকে চার বছর জেলে বন্দি রাখা হয়েছিল এবং এ আইনের অপব্যবহার করে এখনো আমার দেশ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এর ক্ষতিপূরণ একদিন সরকারকে দিতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। টেলিফোন করে গণমাধ্যমের সংবাদ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। দেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। ব্যাংকে লুটপাট চলছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভারতই দেশের নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করে। যার প্রমান গত নির্বাচনে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং এদেশে এসে এরশাদকে সরকারের সাথে নির্বাচনে যেতে চাপ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তার নামে মিথ্যচার করা হচ্ছে।

রুহুল আমিন গাজী বলেন, মাহমুদুর রহমান হলো অন্যায় ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মূর্তপ্রতিক। তিনি বিশ্বে একমাত্র সম্পাদক যিনি সংবাদপত্রের অধিকার আদায়ের জন্য অকথ্য নির্যাতন সহ্য করেছেন। তবুও অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি। বর্তমানে দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই। নির্যাতন মামলা-হামলা, গুম-খুনে দেশ ছেয়ে গেছে। তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে কারাগারে যে খারাপ অবস্থায় রাখা হয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের সরকারও এমন খারাপ জায়গায় রাখেনি।

তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে আমাদের অবস্থা কোথায়। এ নির্যাতন থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সে কঠিন লড়াইয়ে শরীক হতে হবে। সম্মিলিত দূর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এ ফ্যাসিবাদি সরকারের পতন হবে ইনশাল্লাহ।

শওকত মাহমুদ বলেন, বর্তমান নতজানু সরকার দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। মামলা-হামলা, গুম-খুনের এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। এ অবস্থায় বেগম খালেদা খালেদা জিয়া পাঁচ দফা দাবি দিয়েছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম হলো দেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা।

এ দাবির আন্দোলন এখন জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, বেগম জিয়া বলেছেন, বেঈমানদের সাথে কোনো রকম ঐক্য হবে না। ঐক্য হতে হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে। ঐক্য হতে হবে ইস্পাত কঠিন। সেই ঐক্যের মাধ্যমে গড়ে উঠবে অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্লাটফর্ম। গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার আন্দোলন। শপথ নিতে হবে সে আন্দোলনে আগামী দিনে আমরা সবাই শামিল হবো।

(জাস্ট নিউজ/একে/২২২৫ঘ.)