অস্ত্রের মুখে বিয়ে

অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা, ৭ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। যদি কিছু অন্যায় করে থাকেন, অনৈতিক কিছু করে থাকেন, তাহলে তো অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের উর্ধ্বে নাকি কেউ? কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়।

প্রথম বিয়ের খবর গোপন করে অস্ত্রের মুখে এক তরুণীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। ভাড়া ফ্ল্যাটে ৪ মাস সংসার করার পর পুলিশ কর্মকর্তার সাজানো মামলায় জেলও খাটতে হয় ওই তরুণীকে। এমনকি জোর করে বিয়ে আর নির্যাতনের খবর প্রকাশ করায় হত্যার হুমকিও দেন ডিআইজি মিজানুর। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা। এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন অভিযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে তার বিরুদ্ধে।

ব্যাংকে চাকরির জন্য পরিচিত এক বান্ধবীর মাধ্যমে মোবাইল ফোনে কথার মাধ্যমে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমানের সাথে প্রথম পরিচয় হয় মরিয়ম আক্তার ইকোর। এরপর থেকে প্রায়ই ফোন দিয়ে মরিয়মের খোঁজ খবর নিতের মিজান। কথা বলার কিছু দিনের মধ্যেই মিজান অশোভন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা এবং অশোভন আচরণ শুরু করে। এ অবস্থা দেখে পুলিশ কর্মকর্তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন মরিয়ম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ধরণের প্রতারণা ও জবরদস্তির আশ্রয় নেন মিজান।

ভুক্তভোগী মরিয়মের অভিযোগ, গত ১৪ জুলাই মিজান তাকে ফোন দিয়ে বলেন নিজের পূর্বের আচরণের জন্য তিনি খুবই দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। একথা শুনে মরিয়ম মিজানের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা করে দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মিজান দাবি করে, তিনি একবার সাক্ষাৎ করে সরাসরি দুঃখ প্রকাশ করতে চান। এতে মরিয়ম রাজি না হওয়ায় হুমকি দেয়া শুরু করেন পুলিশ কর্মকর্তা।

কিছুদিন পর বাধ্য হয়ে মরিয়ম পান্থপথের বাসা থেকে বের হয়ে স্কায়ার হাসপাতালের সামনে পুলিশ কর্মকর্তা মিজানের সাথে দেখা করতে গেলে কৌশলে তাকে প্রাইভেট কারে উঠিয়ে পূর্বাঞ্চলে নিয়ে যান মিজান। সেখানে সড়কের পাশে নামিয়ে সবার সামনে মারধর করা হয়। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মিজানের বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে।

মরিয়মের ভাষ্য, ‘আমি খুব রাফলি তার সঙ্গে কথা বলি। আমি তাকে বলি আপনি বাইফোর্স কেন আমাকে এখানে নিয়ে আসলেন? তখন সে নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে ও আমাকে মারপিট করা শুরু করে। তার কাছে আর্মস ছিলো, সেই আর্মস নিয়ে আমার মাথাতেই ঠেকায়।’

তিনি আরো জানান, ‘আমাকে ছ্যাচরায়ে তুলেছে লিফটে। এরপর বাসায় নিয়ে যে পরিমাণ নির্যাতন করা হয়েছে, মারপিট করা হয়েছে, আমি তাতে সেন্স হারিয়ে ফেলি।’

বিয়ের পর সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু হঠাৎ করে মরিয়ম ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। আর সে ছবি দেখেই ক্ষেপে যায় পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। এরপরই মরিয়মের উপর চলতে থাকে অকথ্য নির্যাতন। এ সময় তার নামে দেওয়া হয় মিথ্যা মামলা। মাত্র ১ মাসের মধ্যে মরিয়মকে অভিযুক্ত করে দেওয়া হয় চার্জশিটও। সে মামলা জেল খেটে বের হওয়ার পর দেওয়া হয়েছে আরেকটি মামলা।

তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘ওই মামলার বাদী কিন্তু আমি না। একটা বাদীও আমি না। এগুলো করার পরে, তার একটা মামলা হয়েছে, জামিন হয়েছে। এরপর আমার মামলা হয়েছে, আবার জামিন পেয়েছে। এর পরবর্তীতে তার বাবা ও তার মায়ের পক্ষ থেকে কমিশনার মহোদয় ও আইজির কাছে লিখিত দিয়েছে যে অন্যের প্ররোচনায় ও রাগের বশবর্তী হয়ে এটা করেছি।’ সূত্র : সময় টিভি

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২১১৫ঘ.)