সংসদে সরকার দলীয় এমপি

‘ব্যাংকিং খাতে ব্যর্থতায় আর্থিক সেক্টর বিপর্যয়ের মুখে’

‘ব্যাংকিং খাতে ব্যর্থতায় আর্থিক সেক্টর বিপর্যয়ের মুখে’

ঢাকা, ১৮ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : ব্যাংক খাতের কিছু বিশৃঙ্খলার কারণে সরকারের অর্থনৈতিক সাফল্য অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ইসরাফিল আলম বলেন, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে রাষ্ট্র পরিচালনার সংকট দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। ২০১৭ সালে ব্যাংক খাত নড়বড়ে অবস্থায় পড়েছে। ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ২০ টিতে আর্থিক অবস্থা ছিল দৃশ্যমানভাবে খারাপ। অন্য ব্যাংকগুলোতেও কমবেশি সুশাসনের অভাব ছিল।

ইসরাফিল বলেন, খেলাপি ঋণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে। নামে-বেনামে ইচ্ছামতো ঋণ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালক, নির্বাহী, বড় কর্মকর্তারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এটার জন্য তদন্ত করার দরকার নেই। খোলা চোখে মানুষ দেখেছে, জেনেছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়, সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ব্যাংক খাতের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি বৃদ্ধি পাওয়ার বদলে দুর্বল হয়েছে। কিছু কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যা জোড়াতালি দেওয়ার মতো। যা প্রয়োজনের তুলনায় যথার্থ ছিল না।

নওগাঁ থেকে নির্বাচিত সরকারদলীয় এমপি ইসরাফিল বলেন, সরকারের প্রচেষ্টা নেই, আইন নেই, জনবল নেই—এ কথা বলতে পারি না। কিন্তু যারা এসব আইন প্রয়োগের দায়িত্বে আছে, প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে আছে তাদের ব্যর্থতার জন্য আর্থিক সেক্টর বিপর্যয়ের মুখে বিপন্নতার মুখে পতিত হয়েছে তার দায়িত্ব সরকার ও সংসদকে গ্রহণ করতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগকেও বহন করতে হচ্ছে।’ তিনি ঋণ খেলাপিদের নাম ঘোষণা করা, কুঋণ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করার দাবি জানান।

ইসরাফিল বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। লুটপাটের পরেও সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা মূলধনের জোগান দিতে হচ্ছে। যে টাকা জনগণের করের টাকা, সাধারণ মানুষের ঘাম ঝরানো টাকা। নতুন ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। তারপরও নতুন নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে।

ইসরাফিল আরো বলেন, এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাংক নিয়ে চরম সন্দেহ-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। সরকারে এত সফলতা-গৌরব ম্লান করে দিয়েছে ব্যাংকিং খাতের ব্যর্থতা। যেসব ব্যাংক টাকা আত্মসাৎ করে, সেসব ব্যাংক টিকিয়ে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/২২০৬ঘ.)