বাংলাদেশে নির্বাচনী জরিপ

নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ২৪৯ আসন পাবে বিএনপি

নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ২৪৯ আসন পাবে বিএনপি

ঢাকা, ২৫ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে ২৪৯ টি আসন লাভে সমর্থ হবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সম্প্রতি দেশব্যাপী পরিচালিত ইনসাইড সার্ভে অব বাংলাদেশ নামক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জনমত জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে দ্বিদলীয় শাসন ব্যবস্থা যেভাবে গড়ে উঠেছে, ঠিক তেমনিভাবে বাংলাদেশেও এরকম একটি শাসন ব্যবস্থার দুটি রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলের বাইরে ছোট-বড় কিছু রাজনৈতিক শক্তি থাকলেও জাতীয় নির্বাচনে প্রধান দুটি শক্তির সংস্পর্শে তারা আবির্ভূত হন। বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একদলীয় বিতর্কিত নির্বাচনের পর নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাপক প্রশ্নবিদ্ধ হলেও ক্ষমতার পালাবদলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের চাপ আভ্যন্তরীণ শক্তিগুলোর তরফ থেকে যেমন আছে, আবার বিদেশি শক্তিগুলোও সরকারকে ক্রমাগত চাপের মধ্যেই রেখেছেন। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সাথে বিশ্বব্যাংক, জাইকাসহ নানা দাতা সংস্থাগুলো সরকারকে নিরপেক্ষ নির্বাচনের চাপ দিচ্ছে। চাপে রেখেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মত প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তাই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে শপথ গ্রহণের পর শেখ হাসিনাকে তার আগের দুটি সরকারের মত বিদেশ সফরে যেতে খুব একটা দেখা যায়নি। এক ধরনের অসস্থি ও অস্থিরতা তার চোখে মুখে তিনি বছর জুড়ে লুকাতে পারেননি।

সর্বশেষ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণে-“নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না”, বলার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের এই চাপকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। সরকারের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি নির্বাচনে যাবার আগ্রহ প্রকাশ করলেও নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের দাবিতে তারা অটল রয়েছেন। তবে মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন প্রস্তুতির সাথে সাথে নির্বাচনী গণসংযোগ ও চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। সরকারের মামলা-হামলা, গুম-খুন ও জুলুম নির্যাতনকে উপেক্ষা করে মাঠে থাকার চেষ্টা করছে বিএনপি নেতারা। ইতোমধ্যে নেত্রকোনাসহ বেশ কিছু জায়গায় পুলিশসহ সরকারি বাহিনীকে রুখেও দিয়েছে বিএনপি নেতা কর্মীরা। তবে সাধারণ মানুষ না খেয়ে থাকলেও রাজনৈতিক আলাপ আলোচনা ও দলগুলোর ভবিষ্যৎ ভাগ্য নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলে থাকেন। বিশেষ করে গ্রামীণ জীবনে এটি সংস্কৃতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আগামী ২০১৯ সাল বা তৎপূর্ববর্তী নির্বাচনটি কেমন হতে পারে, কারা আসবেন ক্ষমতায়, ক্ষমতাসীন দলের আসন সংখ্যা কেমন হতে পারে, নির্বাচন কালীন সরকারের রূপরেখা কেমন হতে পারে, এই নিয়ে আলোচনার যেমন ঝড় আছে, আছে প্রত্যাশার দোলাচল, আশা-নিরাশা, স্বপ্ন আর সম্ভাবনায় অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছে প্রতিটি মানুষ।

সম্প্রতি “ইনসাইড সার্ভে অব বাংলাদেশ” নামক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশব্যাপী একটি জনমত জরিপ চালিয়েছেন। বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৮০০ শিক্ষার্থীকে দিয়ে এ জরিপ কাজ সম্পন্ন করে। ২২টি প্রশ্ন সম্বলিত একটি ফর্ম সাধারণ জনগণকে পূরণ করতে দেয়া হয়।

৩০০ নির্বাচনী আসনের প্রতিটিতে কমপক্ষে ৩৫০ জন করে ভোটারের প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎ ও ফরম পূরণ করেছে ইনসাইড সার্ভের নিয়োগকৃত সদস্যরা। কর্তব্য কর্মে অবহেলা রোধকল্পে ২ জনের টিমের ১ জন সার্বক্ষণিক মোবাইল ভিডিও কর্মে নিয়োজিত ছিলো। এই ভিডিওসহ ইনসাইড সার্ভের নিকট জরিপের কাগজপত্র জমা দিয়েছেন তাদের নিয়োজিত শিক্ষার্থী কর্মীরা। প্রতি ইউনিয়ন থেকে কমপক্ষে ২০ জনের সাক্ষাৎ গ্রহণের বাধ্যবাধকতায় অশিক্ষিত ভোটার জরিপে চলে আসলে তাদেরকে প্রশ্ন শুনিয়ে ফরম পূরণে সহায়তা করেছে সার্ভে শিক্ষার্থীরা। কেমন সরকারের অধীনে নির্বাচন চান, কোন দলকে ভোট দিবেন, কেন ভোট দিবেন, সরকারের সফলতার প্রধান দিক কি, প্রধান ব্যর্থতা কি, আপনি সরকার দ্বারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত কি না, হলে কিভাবে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন কি না, না দিয়ে থাকলে মনে কষ্ট আছে কি না। শেখ হাসিনা না বেগম খালেদা জিয়া কাকে বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়, না ভোটের বিধান রাখা যেতে পারে কি না, ইত্যাদি প্রশ্ন সম্বলিত প্রায় তিন মাসব্যাপী জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে প্রায় সাড়ে তিন মাস সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন ইনসাইড সার্ভে অব বাংলাদেশের কর্তাব্যক্তিরা। জরিপের চুম্বক অংশটুকু পাঠকের উদ্দেশ্যে তোলে ধরা হলো- ঢাকা বিভাগে ১৩ টি জেলায় ৭০ টি আসন রয়েছে।

জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, এখানে বিএনপি-৫৭ টি আসনে এগিয়ে রয়েছে আর মাত্র ১১টি আসনে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল থেকে নির্বাচিত হতে পারেন। আর ডঃ কামাল হোসেনের আসনে বিএনপি প্রার্থী না দিলে তার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জেলায় ২৪ টি আসন। বিএনপি ১৮ টি আসনে আর আওয়ামী লীগ ৬ টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। তবে রওশন এরশাদ এর মহাজোটে থেকে গেলে সে আসনটি ধরে রাখতে পারে জাতীয় পার্টি।

সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ১৯ টি আসন। বিএনপি-১৬ ও আওয়ামী লীগ-২ টি আসনে আর জাপা (এরশাদ) ১ টি আসনে এগিয়ে আছে।

চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জেলায় ৫৮ টি আসন। বিএনপি অধ্যুষিত এই বিভাগে বরাবরের মতোই একচেটিয়া ভাবে প্রায় সবগুলো আসন নিশ্চিত করার সম্ভাবনা রয়েছে বিএনপির। এখানে বিএনপি ৫৮ টি আসনে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। জাসদ নেতা আ.স.ম রবের সাথে বিএনপির বোঝাপড়া বা প্রাথমিক সখ্যতা হলে তাকে ১ টি আসন ছেড়ে দেয়া হতে পারে। আর এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ কে ১ টি আসন ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি।

বরিশাল বিভাগে ৬ জেলায় ২১ টি আসন রয়েছে। বিএনপি-১৫ আওয়ামী লীগ-৩, জামায়াত-১, জেপি (মন্জু)-১, আর বিজেপি (পার্থ)-১টি আসন পেতে পারে।

খুলনা বিভাগে ১০ জেলায় সর্বমোট ৩৬ টি আসন। বিএনপি-৩০, আওয়ামী লীগ-৩, জামায়াত-৩ আসনে এগিয়ে আছে।

রাজশাহী বিভাগে ৮ জেলায় ৩৯টি আসন। এখানে বিএনপি-৩৬, আওয়ামী লীগ-১ জামায়াত -২ টি আসন পেতে পারে। তবে নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নার জন্য বিএনপি একটি আসন ছেড়ে দিতে পারে।

রংপুর বিভাগে ৮ জেলায় মোট ৩৩ টি আসন। বিএনপি-২২, আওয়ামী লীগ-৩ জামায়াত-১ ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-৭ টি আসনে এগিয়ে আছে। তবে এগিয়ে থাকা আসনগুলোর ১ টি তে বিএনপি ও ১ টি তে আওয়ামী লীগ ভাগ বসালে অবাক করার মত কিছু ঘটবে না। কারণ এই দুটি আসনে খুব সামান্য ব্যবধানে জাতীয় পার্টি এগিয়ে আছে।

সার্বিক পর্যালোচনায় জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ৩০০ আসনের মধ্যে এককভাবে বিএনপি-২৪৯, আওয়ামী লীগ-২, জামায়াত-৭, জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-৮, বিজেপি (পার্থ)-১, জেপি (মন্জু) -১, এলডিপি-১, ড. কামাল হোসেন-১, আ.স.ম রব-১, মান্না -১, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী-১টি আসন পেতে পারে। জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৮-২৮ বছর বয়সী তরুণ ভোটারদের প্রায় ৮৫ ভাগই সরকার পরিবর্তনে পক্ষে মত দিয়েছেন। ৫ বছর পর পর জাতীয় নির্বাচন হলেও আগামী নির্বাচনটিকে ১০ বছর পর হচ্ছে বলে ধরে নেয়া যায়।

তাই আগামী নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেয়া ভোটারের সংখ্যা স্বাধীনতা উত্তর সবচেয়ে বেশি। এই তরুণ ভোটারদের বড় অংশটাই ক্ষমতাসীনদের জন্য সবচেয়ে বড় কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে। কেন তরুণদের মনে পরিবর্তনের ইচ্ছা বা সরকার বিরোধী মনোভাব?

জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়- পিলখানা হত্যাযজ্ঞ, অব্যাহত গুম-খুন, শেয়ার বাজার লুট, পদ্মাসেতু কেলেঙ্কারি, হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, এটিএম বুথে অভিনব চুরি, সরকারের ছত্রছায়ায় নারায়ণগঞ্জে সেভেন মার্ডার ভোটারদের মনে সরকার বিরোধী মনোভাব গড়ে তুলেছে। ডেসটিনির গ্রাহকরা মনে করেন ডেসটিনি তার কমিটমেন্ট অনুযায়ী তাদের লভ্যাংশ দিয়ে আসছিলো। কিন্তু সরকার দূরভিসন্ধিমূলক ডেসটিনির কার্যক্রম বন্ধ করে তাদের সর্বশান্ত করেছে ও নিজেরা সেই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোট দিতে না পারার মনোবেদনা, বিশ্বজিৎ হত্যা, তণু হত্যা, খাদিজা নির্যাতনসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্তৃক সারাদেশে চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডে ভোটাররা তীব্র ক্ষুব্ধ। তবে হালের তুফান কর্তৃক ধর্ষণ ও মা-মেয়েকে নির্যাতন এবং সিদ্দিকুরের চোখ উপড়ানোর পূর্বেই এই জরিপ কার্য সম্পন্ন হয়েছিলো।

এ ধরনের ঘটনার বিরুপ প্রভাব ও নির্বাচন পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। এছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের আলেমদের হত্যা, ফেনীর চেয়ারম্যান আকরামকে পুড়িয়ে কয়লা বানানো বা নাটোরের চেয়ারম্যান বাবুকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা, নির্যাতনে শিশু রাকিব ও শিশু রাজনকে হত্যা, এমপি লিটন কর্তৃক শিশু সৌরভকে গুলি করে হত্যা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ ছাত্র আবু বক্করকে ছাত্রলীগ কর্তৃক হত্যা, কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশ ও মায়ের পেটে শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়াসহ আলোচিত ঘটনাগুলো আঞ্চলিকভাবে ভোটের রাজনীতিতে বেশ প্রভাব ফেলবে।

মসজিদে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার লাগিয়ে শোক দিবস পালনের বাড়াবাড়ি, শিক্ষার মান বিবেচনায় না নিয়ে গণহারে পাশ করিয়ে দেয়া, উন্নয়নের নামে লুটতরাজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অযোগ্য দলীয় শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একচেটিয়া দখল করে ছাত্রলীগের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম, গার্মেন্টস শিল্পে ধস ও জিএসপি সুবিধা বাতিল সচেতন ভোটারদের মনে বিরুপ ফলাফল পড়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। এছাড়া স্থানীয় নির্বাচনে জবরদখল, ব্যক্তি পর্যায় পর্যন্ত বাড়তি করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া, বিদেশী নাগরিক হত্যা হওয়ার মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা, জঙ্গি দমনের নামে ক্রমাগত নাটক তৈরী, নাস্তিক্যবাদকে প্রশ্রয় দান, রামুর বৌদ্ধ বিহারে হামলা ও গণতন্ত্রের সর্বনিম্ন স্পেস না থাকাকেও সচেতন ভোটাররা আমলে আনছেন।

চাল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন উর্ধগতি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধিকে সাধারণ ভোটাররা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারেনি বলে জরিপে দেখা যায়।

এছাড়া ৯৮ পরবর্তী এবারের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের সদিচ্ছার অভাবও বন্যাদূর্গত এলাকাগুলোতে সরকারকে নির্বাচনী মাঠে বেশ বেকায়দায় ফেলতে পারে। রানা প্লাজায় ১১০০ শ্রমিক নিহত হওয়া, তাজরীন গার্মেন্টস ট্র্যাজেডি, নিমতলীর হৃদয়বিদারক ঘটনাও ভোটের বাক্সে প্রভাব ফেলবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লষকরা মনে করছেন। মুন্সীগঞ্জ আঁড়িয়ালবিলে বিমান বন্দর, দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া কয়লা বিদুৎকেন্দ্র, সুন্দরবনঘাতী রামপাল কয়লা বিদুৎকেন্দ্র স্থাপন স্থানীয়ভাবে সরকারকে ভোটের রাজনীতিতে বেশ বেকায়দায় ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই ঢাকায় জলাবদ্ধতা উন্নয়নের নমুনাকে যমুনায় পরিনত করেছে। সোয়াইন ফ্লু ও বার্ড ফ্লু আতঙ্ক বিবেচনায় কম নিলেও ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়ার ভুক্তভোগীরা মশক নিধনে সরকারের অবহেলাকেই দায়ী করে থাকেন। ঢাকার সচেতন ভোটারগণ বিষয়গুলোকে ভোট বাক্সে ক্ষমা করবেন বলে মনে করেন না বোদ্ধারা।

সরকার কর্তৃক বিচার বিভাগ দখলের প্রকাশ্য নির্লজ্জতা, অবৈধ পথে মানব পাচার, ইয়াবা বদি, গম কামরুল, লতিফ সিদ্দিকীর হজ্জ নিয়ে কটূক্তি, প্রশ্নপত্র ফাঁস, সাগর-রুনী হত্যাকান্ড, প্রেসক্লাব দখল, মিডিয়ার টুটি চেপে ধরা তথা চ্যানেল ওয়ান, ইসলামী টিভি, দিগন্ত টিভি ও আমার দেশ বন্ধ করে দেয়া, আইসিটি এক্টের ৫৭ ধারার মতো কালো আইন ভোটারদের মনে দারুণভাবে প্রভাব ফেলেছে বলে জরিপে দেখা যায়।

আদালতকে ব্যবহার করে বিএনপির সিনিয়ির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে সরকারি নিষেধাজ্ঞায় ক্ষুব্ধ ভোটাররা।

গ্রামীণ ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক সরকার কর্তৃক দখল করে নেয়াকে ভোটাররা ভাল চোখে দেখেনি। তার উপর প্রফেসর ইউনূস, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, একে খন্দকারসহ স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের সম্মানিত ব্যক্তিদের নানাভাবে অসম্মানিত করায় দেশের মানুষের মনে গভীর দাগ কেটে আছে বলে জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়। তবে জরিপের ফলাফল যাইহোক সব দলের অংশগ্রহণে একটা নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশায় জাতি অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/একে/১২৩০ঘ.)