সেনাবাহিনীর দখলে মালদ্বীপ পার্লামেন্ট

সেনাবাহিনীর দখলে মালদ্বীপ পার্লামেন্ট

ঢাকা, ৪ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : মালদ্বীপের পার্লামেন্ট ভবন দখলে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। পার্লামেন্ট ভবন সিলগালা করার পর একই সঙ্গে দেশটির বিরোধীদলীয় দুই সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আদেশ অমান্য করায় প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনকে অভিশংসন করতে যাচ্ছে মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীদলীয় ৯ নেতার বিরুদ্ধে সরকারের আনা সন্ত্রাসের অভিযোগ নাকচ করে সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রত্যাখ্যান করায় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশ ঘিরে দেশটিতে গভীর রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের দেয়া আদেশ বাস্তবায়নে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের এটর্নি জেনারেল ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ এনে রবিবার তার পদত্যাগের দাবিতে সংসদ সচিবালয়ে পিটিশন দিয়েছেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা।

সর্বোচ্চ আদালত প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের অভিশংসনে প্রচেষ্টা নিয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন রাষ্ট্রের এটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অনিল।

রবিবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অনিল বলেন, গভীর সংকটে পড়তে যাচ্ছে মালদ্বীপ। টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় তার সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রধান উপস্থিত ছিলেন।

মালদ্বীপের এটর্নি জেনারেল জানান, সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের আদেশ জারি করতে পারেন বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমি সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানিয়েছি, এ ধরনের একটি অবৈধ আদেশ মানা উচিত হবে না তাদের।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, তিন দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট বিরোধীদলীয় ওই ৯ নেতার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তাদের মুক্তির নির্দেশ দেয়। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না। বিরোধীদলীয় ওই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন মালদ্বীপে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদ। তিনি বর্তমানে নির্বাসনে বসবাস করছেন বৃটেনে। মুক্তির নির্দেশ দেয়া আরো একজন বিরোধী নেতা এখন নির্বাসনে রয়েছেন। বাকি সাতজনকে রাখা হয়েছে মালদ্বীপের সবচেয়ে বড় জেলখানায়।

এদিকে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের প্রশাসন আদালতের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করায় দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বন্দিদশা থেকে মুক্তি দিতে আদালতের আদেশের পর রাজধানী মালেতে বিরোধীদলীয় সর্মথকরা উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।

বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট মোহামেদ ইয়ামিন তার পুলিশ প্রধানকে বরখাস্ত করেন। এরপর যে ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ প্রধান হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন, তাকে বরখাস্ত করেন শনিবার। একই সঙ্গে মাফুশি জেলখানার পরিচালকও শনিবার পদত্যাগ করেন। বিরোধীরা মনে করছে এর মাধ্যমে সরকার সহিংসতা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।

এটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অনিল রবিবার জাতীয় সব প্রতিষ্ঠান ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক ইউনিটকে সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে শামিল না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। রাজধানী মালেতে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।

সেনাবাহিনীর প্রধান আহমেদ শিয়াম বলেছেন, মালদ্বীপ সংকটে পড়বে আর তা দেখে বসে থাকবে না নিরাপত্তা বাহিনী। তিনি বলেন, আমরা এটর্নি জেনারেলের বৈধ আদেশ অনুসরণ করব এবং বেআইনি কোনো নির্দেশ মানতে বাধ্য হব না।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/১৯০৮ঘ.)