পাইলট আবিদের পাশেই চিরনিদ্রাই শায়িত আফসানা

পাইলট আবিদের পাশেই চিরনিদ্রাই শায়িত আফসানা

ঢাকা, ২৩ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ইউএস-বাংলার পাইলট আবিদ সুলতানের কবরের পাশেই চিরনিদ্রাই শায়িত হলেন স্ত্রী আফসানা খানম। শুক্রবার বাদ আসর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টর জামে মসিজদে আফসানা খানমের জানাজার পর বনানী সামরিক কবরস্থানে আফসানাকে দাফন করা হয়।

এর আগে সকালে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানমকে বনানীতে স্বামীর কবরের পাশে দাফন করা হবে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন আফসানা মারা যান।

এ হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ বদরুল আলম এ খবর নিশ্চিত করেন।

স্বামী পাইলট আবিদ সুলতানের মৃত্যুর খবরে গত ১৮ মার্চ স্ট্রোক করেন আফসানা খানম। এরপর থেকেই হাসপাতালটির আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে গত তিন দিন তিনি লাইফসাপোর্টে ছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার আফসানা ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ বলে শোনা যাচ্ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসকরা বলেছিলেন- তা এখনও সম্পূর্ণভাবে বলা যাবে না। তবে তার পরিস্থিতি অবনতির দিকে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার মতো অবস্থায়ও নেই।

এদিন অধ্যাপক বদরুল আলম বলেন, আজকের পরিস্থিতি ও গত কয়েক দিনের তুলনায় খারাপের দিকে। বিশেষ করে ওনার কিডনি ফাংশন কিছুটা কমে আসছে। সেই সঙ্গে অন্যান্য প্যারামিটারও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, চিকিৎসা চালিয়ে যাব, যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি ভেন্টিলেশন সাপোর্ট নিতে পারেন।

তিনি বলেন, কিডনির যে আউটপুট বলি আমরা, সেটি ক্রমান্বয়ে কমছে। ওনার অবস্থা অবনতির দিকে। কিন্তু ভেন্টিলেশন উইথড্র করা বা সব সাপোর্ট উইথড্র করার মতো নয়। আগামীকালও চিকিৎসকরা যারা জড়িত, তা দেখবেন। আফসানার চিকিৎসায় গঠিত ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ বলেছেন, আফসানার ডায়াবেটিস ছিল। স্বামীর মৃত্যুতে তিনি মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত ছিলেন।

গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইউএস-বাংলার বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে ক্রুসহ ৫১ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর বিমানটির প্রধান পাইলট আবিদ আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পর দিন সকালে কাঠমান্ডুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।

আবিদের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি স্ত্রী আফসানা। স্বামীকে হারিয়ে কখনও বাকরুদ্ধ কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন- তার স্বামী মারা যাননি, সবাই মিথ্যা কথা বলছেন, আবিদ ফিরে আসবে, আবিদ তাকে সঙ্গে না নিয়ে একা চলে যেতে পারে না- এমন প্রলাপ বকতেন তিনি। স্বামীর শোকে মনস্তাত্ত্বিক চাপে রবিবার নিজ বাসায় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হন। এরপর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।

এরপর গুরুতর অবস্থায় আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আফসানাকে।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯৩০ঘ.)