সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ

‘২ হাজার মেয়ের ছাত্রত্ব বাতিল করে দেব’

‘২ হাজার মেয়ের ছাত্রত্ব বাতিল করে দেব’

ঢাকা, ২০ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত ছাত্রীদের ডেকে ছাত্রত্ব বাতিল, গোয়েন্দা নজরদারি ও মামলার হুশিয়ারি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রদীপ্ত ভবনের নিচে ডেকে এ হুশিয়ারি দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন ছাত্রীরা। ওই হুশিয়ারির একটি অডিওতে শোনা গেছে, অধ্যাপক সাবিতা ছাত্রীদের বলেছেন- অনেকে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দেয়। ইন্টেলিজেন্স সেল দেখবে যে, কারা কারা বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিচ্ছে। আই ডোন্ট ওয়ান্ট অ্যানি ইনভলভমেন্ট। এর পর এই হলে ছাত্রলীগ যদি গণ্ডগোল করে আমাকে বিচার দেবে। জেনারেল মেয়ে গণ্ডগোল করলে আমাকে বিচার দেবে।

তিনি বলেন, এখন থেকে হল সিট হল প্রশাসন দেবে। আর কোনো পয়েন্টে এর বাইরে আর কোনো সিট হবে না। হলে যদি আর কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে বা তোমরা কোনো পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা কর হলকে বিভ্রান্ত করার জন্য, তা হলে কিন্তু আমরা সরকারকে বলব...।

প্রাধ্যক্ষ আরো বলেন, আমার নলেজের বাইরে আমার ভিডিও যে আপলোড করে সেটা কিন্তু ক্রাইম, আজকে আমি বলে দিলাম- সেটা কিন্তু সাইবার ক্রাইম...আই ওয়ান্ট টু বি লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার।

এর পর তিনি ছাত্রীদের বলেন, কারও কিছু প্রশ্ন আছে? তখন ছাত্রীরা বলেন, ১১ এপ্রিল রাতে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভানেত্রী ইফফাত জাহান এশাকে কেন্দ্র করে যা যা ঘটেছে তাতে দুই হাজার ছাত্রী জড়িত ছিল।

তখন অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা বলেন, দুই হাজার মেয়ে কিছু করেনি। আমার সিসিটিভি ফুটেজে আছে কারা কারা করেছে। দুই হাজার মেয়ে স্বাক্ষর দাও, আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে দেব। আমি দুই হাজার মেয়ের ছাত্রত্ব বাতিল করে দেব। আমার শিক্ষকরা দেখেছেন, আমার সিসিটিভি প্রমাণ আছে ওরা মেরেছে। তোমরা যদি মেরে থাক, নাম লেখ।

তিনি আরো বলেন, ওদিন যেটা হয়েছে, সেটা অপপ্রচার। ওই মেয়ে যার পা কেটেছে সে নিজে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ওর শুধু পা-ই কাটা হয়েছে। এই মেয়েটাকে যে পরিমাণ মারা হয়েছে সেটা কি বিচারে মারা হয়েছে। যে মেয়ে ভয় পেয়েছে সে নিজে বলেছে। অডিওর শেষ পর্যায়ে শোনা যায় হল প্রাধ্যক্ষ প্রশ্ন করছেন, মোবাইল দিয়ে কি করছ?

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর মধ্যরাত পর্যন্ত হল কর্তৃপক্ষ একে একে অন্তত ২০ ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দেয়।

ছাত্রীদের স্থানীয় অভিভাবকরা সুফিয়া কামাল হল থেকে তাদের সন্তানকে এসে নিয়ে যান। ছাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের (অভিভাবক) কারো সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করে দেয়া হয়। ফলে অভিভাবকরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানকে ফোন করা হয়। ফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কল কেটে দেন তিনি। এর পর একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি আর কল রিসিভ করেননি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৩৫ঘ.)