গার্মেন্টে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করছে এইচ অ্যান্ড এম

গার্মেন্টে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করছে এইচ অ্যান্ড এম

ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ঢাকার গার্মেন্টে কমপক্ষে একজন নারীর ওপর যৌন হয়রানির তদন্ত করছে তৈরি পোশাকের জায়ান্ট হিসেবে পরিচিত ক্রেতা সংস্থা এইচ অ্যান্ড এম।

তারা বলেছে, যেকোনো প্রকারই হোক যৌন হয়রানি এইচ অ্যান্ড এম-এর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সম্প্রতি বাংলাদেশে গার্মেন্ট শ্রমিকদের ওপর যৌন নির্যাতনের রিপোর্ট প্রকাশ হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এমন রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে একজন নারী শ্রমিক অভিযোগ করেন তাকে হোটেলের কক্ষে পর্যন্ত ব্যবহার করেছেন তার বস। ম্যানেজার ও সুপারভাইজারদের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এরই প্রেক্ষিতে অনলাইন পিআরআই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে ‘অ্যাক্রোস ওমেনস লাইভস’ রিপোটিংয়ে বেশ কিছু নারীর সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয়। তারা যেসব গার্মেন্টে কাজ করেন সেখানকার কর্ম পরিবেশ জানাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। উদ্দেশ্য ছিল তারা যেখানে কাজ করেন তা অগ্নিনির্বাপণ ও ধসে পড়ার ক্ষেত্রে কতটা নিরাপদ তা নিয়ে।

ওই রিপোর্টের ভাষ্য অনুযায়ী আমরা যেসব শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলেছি তাতে তারা বলেছেন তাদের কর্মক্ষেত্র সুসজ্জিত। কিন্তু একজন নারী বলেছেন ভিন্ন কাহিনী। তার বয়স মাত্র ১৯ বছর। তিনি এমন একটি কারখানায় কাজ করেন, যেখান থেকে পোশাক কেনে এইচ অ্যান্ড এম।

ওই যুবতী বলেছেন, তাকে একজন ম্যানেজার যৌন হয়রান করেছেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন তার সহকর্মীদের আরো অনেকে কারখানায় এমন নির্যাতনের শিকার হন। সম্প্রতি হলিউড মুঘল হিসেবে পরিচিত হারভে উইন্সটনের যৌন কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনলাইনে হ্যাসট্যাগ মি টু নামে একটি প্রচারণা শুরু হয়েছে। এমনই এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ১৯ বছর বয়সী ওই যুবতী এ অভিযোগ করেছেন। মি টু হ্যাসট্যাগের অধীনে সারা বিশ্ব থেকে নারীরা তাদের ওপর যৌন নির্যাতন চালানোর বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলছেন। তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। তবে যেসব নারী সবার জন্য পোশাক তৈরি করেন তারাও কি ‘মি টু’ বলবেন এটা ভেবে বিস্মিত হতে হয়। এ বিষয়ে এইচ অ্যান্ড এম-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা জবাবে একটি বিবৃতি দিয়েছে।

তাতে বলা হয়েছে, যেকোনো ধরনের যৌন নির্যাতন এইচ অ্যান্ড এম-এর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়টি আমাদের টেকসই প্রতিশ্রুতিতে (সাসটেইন্যাবলিটি কমিটমেন্ট) এটা পরিষ্কার করে বলা আছে। আমরা যেসব সরবরাহকারীর সঙ্গে কাজ করি তাদেরকে এই নীতিতি মেনে তাতে স্বাক্ষর করতে ও মেনে চলতে হয়। আমাদের সঙ্গে যেসব কারখানা কাজ করে সেখানে যেকোনো রকম যৌন হয়রানিতে থাকতে হয় শূন্য সহনশীলতা। এক্ষেত্রে যে কারখানার কথা বলা হচ্ছে তারা আমাদের ‘ওয়ার্কপ্লেস ডায়ালগ প্রোগ্রামের’ অংশ। সেখানে সমস্যা, শ্রম আইন ও অন্যান্য বিষয়ে সমাধানের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সব শ্রমিকের প্রতি কর্মক্ষেত্রে সম্মান প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যখন যৌন হয়রানির মতো গুরুত্বর অভিযোগ আনা হয় আমাদের নজরে তখন আমরা তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিই এবং আমাদের রুটিন অনুযায়ী এ বিষয়ে যাচাই করি। তবে এই বিশেষ ঘটনার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারি নি। ঢাকায় আমাদের যে টিম আছে তারা অব্যাহতভাবে এ অভিযোগ তদন্ত করছে। এ বিষয়ে আরো তদন্ত করা হবে এবং বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১৫১৩ঘ.)