মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে পদদলিত

নিহত ১০ জনের ৯ জনই হিন্দু ধর্মালম্বী

নিহত ১০ জনের ৯ জনই হিন্দু ধর্মালম্বী

চট্টগ্রাম, ১৮ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : সদ্য প্রয়াত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিনের কুলখানিতে পদদলিত হয়ে নিহত ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই হিন্দু ধর্মালম্বী এবং একজন বৌদ্ধ বলে জানা গেছে। এছাড়াও আহত হয়েছে আরো অর্ধ-শতাধিক।

প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, নগরীর রিমা কমিউনিটি সেন্টারে হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ অমুসলিমদের জন্য আলাদাভাবে মেজবানের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে সোমবার দুপুর ১টার পর প্রচণ্ড ভিড় তৈরি হয়। এক পর্যায়ে হুড়োহুড়ি করে ঢোকার সময় পদদলিত হয়ে কৃষ্ণপদ, সুজিত দাশ, শুভাশিষ তালুকদার, ঝন্টু, রবিন দাশ, উজ্জ্বল চৌধুরী, দুলাল, কনক দাশ, সুমন দাশ ও আশিষ বড়ুয়াসহ ১০ জন নিহত হয়।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুতে আজ চট্টগ্রামের ১৪টি কমিউনিটি সেন্টারে কুলখানি ও মেজবানের আয়োজন করা হয়।

বিশৃংখলা ও হুড়াহুড়ির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার। এ ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে সিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিল না। সবাই একযোগে ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে কমিউনিটি সেন্টারের ঢালুতে পড়ে যায় কয়েকজন। তাদের ওপর দিয়ে অন্যরা চলে যায়। পদদলিত হয়েই এ দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটেছে।

রীমা কমিউনিটি সেন্টারে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী যুবলীগ নেতা শিবু দাশ বলেন, ৭-৮ হাজার লোকের খাবারের আয়োজন করা হলেও সেখানে ১০-১৫ হাজার লোক অবস্থান করে। গেট খুলে দেয়া হলে সবাই হুড়াহুড়ি করে ঢোকার চেষ্টা করে। তাছাড়া প্রবেশ পথটি ছিল ঢালু। এ কারণে ধাক্কাধাক্কির মধ্যে অনেকেই পড়ে গিয়ে পদদলিত হন। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ যারা নন-বিফভোজী তাদের জন্য রীমা কমিউনিটি সেন্টারে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল।

এদিকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানি অনুষ্ঠানে এমন অনভিপ্রেত ঘটনায় অনেকটা হতভম্ব ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার (মহিউদ্দিন চৌধুরীর) বড় ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি হতাহতদের দেখতে চমেক হাসপাতালে ছুটে যান। হতাহতদের স্বজনদের সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এক পর্যায়ে তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক জানান, আহত ২০-২৫ জনকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসক ১০ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আরও ৩-৪ জন আশঙ্কাজনক বলেও চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান তিনি।

চমেক হাসপাতালের জরুরির বিভাগে নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। শোকবাহ দিনে আরেকটি শোকের খবর পেয়ে চমেক হাসপাতালে ছুটে আসেন মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।বাবার কুলখানি অনুষ্ঠানে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না তিনি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। শুক্রবার দুই দফা জানাজা শেষে নগরীর চশমা হিল এলাকার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯১০ঘ.)