ফেসবুকে কোটা সংস্কারের পক্ষে কথা বলায় ধর্ষণের হুমকি

ফেসবুকে কোটা সংস্কারের পক্ষে কথা বলায় ধর্ষণের হুমকি

ঢাকা, ১৬ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : ফেসবুকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে কথা বলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। সোমবার সকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ধর্ষণের হুমকিদাতাদের শাস্তির দাবিতে অভিযোগপত্র জমা দেন। উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে।

অভিযোগপত্রে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ‘গত কয়েকদিন যাবৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি গ্রুপে আমাকে ধর্ষণের হুমকি প্রদানসহ অশালীন ভাষায় আমাকে এবং আমার পরিবারকে কটূক্তি করা হয়। তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন হামজা রহমান অন্তর (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, ৪১তম ব্যাচ)। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তাঁর অনুসারী ইশকাত হারুন আকিব (বাংলা বিভাগ, ৪৬তম ব্যাচ) আমাকে প্রস্টিটিউট ইঙ্গিত করে অশালীন ভাষায় গালি দেন। অপর অনুসারী জাহিদ হাসান ইমন (আইআইটি-৪৬, রিপিটার), মাসুদ রানা (মাইক্রোবায়োলজি-৩৯) ও রনি ভৌমিক (ফেসবুকে ব্যবহৃত নাম) অশালীন ভাষায় আক্রমণাত্মক কথা বলেন। তারা আমার চরিত্র হননের জন্য সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছেন।’

ওই ছাত্রী আরো লেখেন, ‘এমতাবস্থায় আমি আমার সম্ভ্রম ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমি হুমকিদাতা এই পাঁচজনকে প্রচলিত আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।”

এ বিষয়ে হামজা রহমান অন্তর বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার। আমি কাউকে ধর্ষণের হুমকি দেয়নি।’

প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘অভিযোগপত্র পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমরা অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাবো।’

এর আগে এক ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগে হামজা রহমান অন্তরকে ৬ মাসের বহিষ্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া হল ক্যান্টিনে চাঁদা দাবিসহ ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে এলাকায় নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চের মুখপাত্র ও দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মীদের সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা দফায় দফায় হামলা করেছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়নি। এ কারণে তারা আজ বেপরোয়া আচরণ করছে। তারই বহিঃপ্রকাশ হলো এমন ধর্ষণের হুমকি। এটা অত্যন্ত ন্যক্কাজনক ব্যাপার। প্রশাসনের উচিত অবশ্যই হুমকি দাতাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১১৩৫ঘ.)