শুভ বড়দিন আজ

শুভ বড়দিন আজ

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : আজ ২৫ ডিসেম্বর। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন। এই দিনে খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টি-কর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতে প্রভু যিশুর এই ধরায় আগমন ঘটেছিল।

অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্টধর্মানুসারীরাও যথাযথ ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবেন।

আজ সরকারি ছুটির দিন। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। আবহমানকাল ধরে এ দেশে সব ধর্মের মানুষ পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে আরো সুদৃঢ় করতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুণ্যদিন উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়সহ জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে ঔদার্য এবং মানবতার মহান ব্রতে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের কল্যাণ ও উন্নয়নে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, বড়দিন দেশের খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিকে আরো সুদৃঢ় করবে।

শুভ বড়দিন উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জা‌নি‌য়েছেন বিএন‌পি চেয়ারপারসন বেগম খা‌লেদা জিয়া। তি‌নি বলেন, সত্য, ন্যায় ও করুণার পথপ্রদর্শক মহান যিশুখ্রিস্ট এদিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বিশ্বের সকল খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীর কাছে তাই এ দিনটি অত্যন্ত মহিমান্বিত ও মর্যাদাপূর্ণ।

বেগম খা‌লেদা জিয়া ব‌লেন, সকল ধর্মের মর্মবাণী শান্তি ও মানবকল্যাণ। যুগে যুগে মহামানবগণ মানুষের সৎ পথে চলার দিশারী হয়েছিলেন। মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন ন্যায় ও কল্যাণের পথে চলতে। মহান যিশুখ্রিস্টও একইভাবে তার অনুসারীদের সৎকর্ম ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ করে গেছেন।

বাণী‌তে তি‌নি ব‌লেন, শুভ বড় দিন একটি সার্বজনীন ধর্মীয় উৎসব। আর প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবের অন্তর্লোক হচ্ছে সম্প্রীতি, সহাবস্থান ও শুভেচ্ছা। কারণ মানুষ হিসেবে আমাদের কর্তব্য দেশ, সমাজ ও মানুষের কল্যাণে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়া।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন, হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার হলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের অন্যায় অবিচার প্রতিরোধে ব্রতী হওয়া সকলের কর্তব্য। মহামানবদের জীবন দর্শন যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পারলেই মানবকল্যাণে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব। আর তাহলেই স্রষ্টার সন্তষ্টি অর্জনে আমরা সক্ষম হবো। আমি বড়দিনের সকল কর্মসূচির সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।

বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক স্বপন রোজারিও জানিয়েছেন, সকাল থেকে বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিস্টান পরিবারে কেক তৈরি হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। দেশের অনেক অঞ্চলে কীর্তনের পাশাপাশি ধর্মীয় গানের আসর বসবে। রাজধানীর তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জায় বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। গির্জা ও এর আশপাশে রঙিন বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচুর জরি লাগিয়ে গির্জার ভেতর সুসজ্জিত করা হয়েছে। ভেতরে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি।

বড় দিন উপলক্ষে গির্জার মূল ফটকের বাইরে বসে মেলা। মেলার দোকানগুলোতে বড়দিন ও ইংরেজি নতুন বছরের কার্ড, নানা রঙের মোমবাতি, সান্তা ক্লজের টুপি, জপমালা, ক্রিসমাস ট্রি, যিশু-মরিয়ম-যোসেফের মূর্তিসহ নানা জিনিস বিক্রি হতে দেখা যায়।

বড়দিন উপলক্ষে বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও এবং মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বড় দিন ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের জন্য আনন্দ বার্তা বয়ে আসুক এই কামনা করেছেন নেতৃদ্বয়।

এদিকে বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্যপরিষদের সভাপতিত্রয় নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, প্রশান্ত কুমার বড়ুয়া, উইলিয়াম সমাদ্বার ও সাধারণ সম্পাদক রমেন মন্ডলও পৃথক বার্তায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়সহ সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/০০২১ঘ.)