জলবায়ু পরিবর্তন খবরে এসেছে ২.৬০ শতাংশ

জলবায়ু পরিবর্তন খবরে এসেছে ২.৬০ শতাংশ

ঢাকা, ২০ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের মানুষের উৎকণ্ঠার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনে প্রতিক্রিয়া চলমান থাকলেও বিদায়ি বছরে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক খবর প্রকাশিত হয়েছে মাত্র ২.৬০ শতাংশ।

রাজধানীর ডিআরইউর সাগর রুনী মিলনায়ত‌নে নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেইঞ্জ বাংলাদেশ ট্রাস্ট আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক এক রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে এমন চিত্র উঠে আসে।

বাংলাদেশের পাঁচটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্ট পর্যালোচনায় এ রিপোর্ট তৈরি করে তারা।

রিপোর্টে বলা হয়, জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এম.এ. হক এবং তার সহযোগিরা বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকায় জলবায়ু বিষয়ক ১১৭টি রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। যার ৭৭ ভাগই সাধারণত প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী কেন্দ্রিক। বাকি ২৩ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন কার্যক্রম, এনজিও, কার্যক্রম, সিভিল সোসাইটি আয়োজিত বিভিন্ন কার্যক্রম।

যদিও বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নীতিমালা এবং কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছেন। যার মধ্যে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্রাটেজি এন্ড অ্যাকশন প্লান ২০০৯ অন্যতম।

রিপোর্টে বলা হয়, কোপেনহেগেন সম্মেলন এবং ২০১৫ তে প্যারিস সম্মেলন ও পরবর্তীতে ২০১৬ সালের নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে জলবায়ু পরিবর্তন আর্ন্তজাতিক মিডিয়ায় একটি কেন্দ্রীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছিল।

মিডিয়া এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ অবজারভেটরি জরিপে দেখা যায়, ২০০৯ সালের পর থেকে বিশ্বের ইংরেজি ভাষা-ভাষী প্রিন্ট মিডিয়াতে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কভারেজ কমে আসেছ।

গত প্রায় এক দশকে ২০০৮ সালের পওে ২০১১ সালেই আর্ন্তজাতিক সংবাদ মাধ্যম বৈশ্বিক উঞ্চায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কম আগ্রহ দেখিয়েছে এবং ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তিকে কেন্দ্র করে সংবাদ মাধ্যম জলবায়ু পরিবর্তন আবারও গুরুত্ব পেতে থাকলেও ২০১৬ সালের নবেম্বরের তুলনায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে নিউজ কভারেজ প্রায় ৭ শতাংশে নেমে আসে। আর তার পরিমাণ ২০১৬ সালের চেয়ে ২০১৭ সালে হয় ১২.৫ শতাংশ।

রিপোর্টে দেখা যায়, ২০১৭ সালে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ, বন ও পরিবেশ, নদী ও পানি সম্পদ, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে মাত্র ৬৪৫টি ও ৫৫৪টি।

বন ও পরিবেশ সংক্রান্ত একক খবর প্রকাশিত হয় মাত্র ১৭২, কৃষি ও খাদ্য বিষয়ক ১১৬টি, নদী ও পানি সম্পদ বিষয়ক ২৪০টি। আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয় প্রতিবেদন আরো কম। সর্বাধিক ৩৪টি মাত্র।

আলোচকরা বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংবাদ প্রকাশ কাঙিত মাত্রায় উন্নীত হয়নি জানিয়ে তিন দফা সুপারিশ করেছেন।

সকল পত্রিকা এবং সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এক বা একাধিক ফোকাল পারসনকে মনোনিত করা। প্রয়োজনে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিটও গঠন করা যেতে পারে।

পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ইস্যুতে কাজ করতে আগ্রহী সাংবাদিকদেও বিভিন্ন ফোরাম এবং এনজিওরা যৌথভাবে উদ্যোগ নিতে পারে।

অবিলম্বে বিসিসিএসএপি’র কর্মসূচিটি চালু করার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুকে গণমাধ্যমের মূলধারায় সম্পৃক্তকরণ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ বাংলাদেশ প্রেস ইস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহ আলগীর, বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের কর্ডিনেটর মিজানুর রহমান, সিনিয়র রির্পোটার নিখিল ভদ্র, সিনিয়র রির্পোটার রফিকুল ইসলাম, জনকণ্ঠের নগর সম্পাদক কাওসার রহমান, সমন্বয়ক মো. সাজেদুল ইসলাম প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১৮১০ঘ.)