জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে গুতেরেস

‘রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার করতে হবে, এ অবস্থা চলতে পারে না’

‘রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার করতে হবে, এ অবস্থা চলতে পারে না’

ঢাকা, ২৯ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গাদের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে। ২৮ অক্টোবর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের প্রতি ইঙ্গিত করে এটাকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদকে সম্মিলিতভাবে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এই সমস্যা অনাদিকাল চলতে পারে না। রাখাইনে যতক্ষণ পর্যন্ত মিয়ানমার সহায়ক পরিবেশ তৈরি না করছে, সেখানে স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গারা ফেরত যাবে না।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে মিয়ানমার কাজ করতে দিচ্ছে না।

গত মাসে বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে আমি যে ভয়াবহ ঘটনার কথা শুনেছি, সেটি আমি জীবনে ভুলতে পারবো না।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিলম্বের জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করে, দ্রুত এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে দেশটির ওপর চাপ বাড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনায় তিনি বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা ও গণধর্ষণের বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিশেষ বিবেচনার দাবি রাখে।

জাতিসংঘ স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পরদিন মঙ্গলবার এ বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনায় বসে নিরাপত্তা পরিষদ। আলোচনায় অংশ নিয়ে মিয়ানমারের সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সত্যিকারের পুনর্মিলনের জন্য রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা ও গণধর্ষণকারীদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি বলে মন্তব্য করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন, নিঃসন্দেহে গুরুতর অপরাধ। কমিটির প্রতিবেদন এবং তাদের সুপারিশ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার দাবি রাখে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। সম্মানজনক উপায়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে কালক্ষেপণের কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

পরিষদে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ঘটা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত কেট ব্লানচেট। বলেন, রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষায় বিশ্ববাসী ব্যর্থ হয়েছে। জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত কেট ব্লেনচেট বলেন, ‘সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। রোহিঙ্গারা তীব্র সঙ্কটে ভুগছে। তাদের অনেক সাহায্য সহযোগিতা দরকার। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের সব মৌলিক অধিকার হরণ করে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে। তাদের জন্য নিরাপদ প্রত্যাবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হলেই তারা ফিরে যাবে। এ জন্য তাদের নাগরিকত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

(জাস্ট নিউজ/একে/১২৫০ঘ.)