আলোচনায় ওয়ান-ইলেভেন

ফের জনবিস্ফোরণের আশঙ্কা

ফের জনবিস্ফোরণের আশঙ্কা

ঢাকা, ২৯ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : রাজধানীর কুর্মিটোলায় ২ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনা ছিল নিছক একটি সড়ক দুর্ঘটনা। কিন্তু সেই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে যা হয়েছে তা সত্যিই অভাবনীয়। কেউ কল্পনাও করেনি এমনটি হতে পারে। স্বাধীনতার পর এত বড় ছাত্রআন্দোলন আর হয়নি। একযোগে সারা দেশের সব শিক্ষার্থীদের আন্দোলন- দেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম। এমনকি স্বাধীনতার আগেও এমন দৃষ্টান্ত বিরল। স্কুল থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও। একসঙ্গে রাস্তায় নামেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এমন আন্দোলন দেশে-বিদেশে নতুন ইতিহাস ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কিন্তু এই আন্দোলন সরকার বিরোধী ছিল না। ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমেছিল নিরাপদ সড়কসহ ৯ দফা যৌক্তিক দাবি নিয়ে। যা জাতীয় দাবিতে রূপ নেয়। স্কুলের কোমলমতি ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের আন্দোলনে কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকসহ সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সমর্থন জানান। দেশব্যাপী এই ছাত্র-গণআন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল। সরকার বিরোধী আন্দোলন না হলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মধ্যে এই আন্দোলন নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। বড় ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়। অনেকে বলেছেন, এর পেছনে বিএনপি জড়িত। সরকারের ভেতরেও এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও বিচার-বিশ্লেষণ হয়েছে। কীভাবে এই আন্দোলনের সূত্রপাত হলো? যা দ্রুতই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লো। এর পেছনে কারা জড়িত? কেউ বলছেন, এর সঙ্গে বিদেশি শক্তি বা কোনো গোয়েন্দা তৎপরতা জড়িত থাকতে পারে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারের মধ্যে এতটা ভয় ঢুকেছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মন্ত্রীদের বলতে বাধ্য হয়েছেন, আন্দোলন দেখে যারা ভয় পায় তাদের আমার সঙ্গে থাকার দরকার নেই। কেবিনেট বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ১৪ দলের বৈঠকেও আলোচনা হয়। সরকার ও সরকারি দলগুলোর মধ্যে পুরো বিষয়টি নিয়ে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে এখনো। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, কোনো না কোন ঘটনা থেকে যে কোনো সময় হঠাৎ আরও বড় ধরনের আন্দোলন হতে পারে। এলজিআরডি মন্ত্রী বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’ জবাবে বিএনপি নেতারা বলেছেন, ‘আমরা কোনো গোপন ষড়যন্ত্র করছি না। আমরা আওয়ামী লীগের পতন চাই। এটা ওপেনে চাই, গোপনে নয়।’ সেতুমন্ত্রী বলেছেন, ‘আবারও ওয়ান ইলেভেনের গন্ধ পাচ্ছি।’ এর জবাবে বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, ‘ওয়ান এলেভেনের গন্ধ পাচ্ছেন, ক্ষমতা হারানোর গন্ধ পাচ্ছেন না?’ আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নিজেদের তৈরি সংকটের কারণেই এক-এগারোর গন্ধ পাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।’

তবে রাজনৈতিক বিতর্কের বাইরে বিশ্লেষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, এই ছাত্র বিস্ফোরণের একটি যৌক্তিক কারণ আছে। তাহলো- কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। কোটা আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমন করা হয়েছে। এর ক্ষোভ ও রেশ ছিল নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে। এই আন্দোলনও সরকার সহিংস পন্থায় নির্মূলের চেষ্টা করেছে। এখন বিশ্লেষক, আওয়ামী লীগ ও আমলারা আশঙ্কা করছেন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলন যেভাবে জোর করে দমন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সফল হয়নি। বরং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভেতরে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। শুধু উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নয়, স্কুলগুলোতেও এর প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে! যার বড় প্রমাণ গত ৯ আগস্ট রাজধানীর ভিকারুননেছা স্কুলের ৩৫০ ছাত্রী পরীক্ষার খাতায় ‘ডব ধিহঃ লঁংঃরপব’ লিখেছে। শিক্ষাঙ্গণে এখনো স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসছে না। ঈদের আগ পর্যন্ত অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে স্কুলের অনেক ছাত্র-ছাত্রী। সবার মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সেই সাথে ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা ধরনের হয়রানির আতঙ্কও বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। যা নিয়ে অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ।


উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ঝিগাতলায় গাড়ির লাইসেন্স ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণের কাজ করার মধ্যেই ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন, যুব ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে একদল যুবক অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা সহকারে নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর চড়াও হয়। এতে আহত হন অর্ধশতাধিক স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। এখানে সাংবাদিকদের ওপরও ব্যাপক হামলা হয়। পরদিনও রামপুরা, বাড্ডা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলা হয়। এসব হামলায় অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের সঙ্গে সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা যৌথভাবে অংশ নেয়। এরপর চলে একের পর এক ধর-পাকড় ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন। তবে অবশেষে বিভিন্ন মহলের জোরালো দাবি এবং পরিস্থিতি আবারো অবনতির আশঙ্কায় গ্রেফতারকৃত অধিকাংশকেই ঈদের আগে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও স্বস্তি মিলছে না সরকারি দলে। যদিও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির পাশাপাশি কোটা সংস্কার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, এমনকি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে; তারপরও সরকারের প্রতি শিক্ষার্থীদের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। বরং ক্ষোভ যেন ভেতরে দানা বেঁধে আছে। মনে করা হচ্ছে, ‘কোটা’ এবং ‘নিরাপদ সড়ক’ দুই দফার আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল থাকলেও পরবর্তীতে আর এমন সুশৃঙ্খল হবে না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যরাও যুক্ত হবে। যে কোনো ঘটনা থেকে হঠাৎ বিক্ষোভ শুরু হয়ে সেটি সহিংস ও ভয়াবহতম জনবিস্ফোরণে রূপ নিতে পারে। এ ব্যাপারে সরকার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। একটি বড় ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে বলে সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে। আর এ কারণেই সরকারের মন্ত্রী ও নেতা-নেত্রীরা বর্তমান পরিস্থিতিকে ওয়ান-ইলেবেনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করছেন বার বার।

কোটা ইস্যু থেকে নিরাপদ সড়ক
কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামে ১৭১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটির আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। বাকি ১৭০ জন যুগ্ম আহ্বায়ক।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের তুলনায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে সৃষ্ট আন্দোলনের প্রকৃতি ও পরিধি ব্যাপক বিস্তৃতি পায়। কারণ, কোটা ইস্যুতে সংসদে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হয়েছে। এমনকি কোটা সংস্কার ইস্যুতে শিক্ষার্থীরা ‘প্রতারণার শিকার’ হয়েছেন বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন। কারণ, ‘কোটা থাকবে না’ এই ঘোষণার পর যখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যান, তখনই সরকার ইউটার্ন নেয়। ‘কোটা বাতিল কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এতে আদালত অবমাননার কথা আসতে পারে।’ এমন কথা বলে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ঝুলে যায়। উল্টো আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেয়া হয়েছে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে। তাদেরকে জামায়াত-শিবির ও ছাত্রদলের লোক এমনকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী বলে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়। একের পর মামলা হয় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। হামলা হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের ওপর। তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় তাদের। প্রকাশ্যে ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতন ও হামলার শিকার হন কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িতদের অনেকে। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পা ও মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে দেয়ার ঘটনাও ঘটে। সেই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানিতে অনেকের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, বাসা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কোটা আন্দোলনের নেতারা। বেশ ক’জন নেতাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোটা আন্দোলনের এক নেত্রী অভিযোগ করেছেন, ফেসবুকে তার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। সেখানে তার ছবি দিয়ে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারও চালানো হয়েছে। বিবিসিকে অজ্ঞাত স্থান থেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আন্দোলনের ওই নেত্রী বলেছেন, “এখন বাড়িতেও যেতে পারছি না। কারণ, বাসায় গেলে সেখান থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যেতে পারে। বিশ^বিদ্যালয়ের হলে থাকতেও ভয় পাচ্ছি। হল থেকেও পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। থানার লোকজনসহ সরকারি দলের স্থানীয় নেতারাও আমাদের পরিবারের ওপর নানাভাবে চাপ তৈরি করছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তারা খারাপ আচরণ করছে। ডিবির লোক পরিচয় দিয়ে তারা লোকজনকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা তো আর ডিবির লোকদের চিনি না। সাদা পোশাকে এসে তারা নিজেদেরকে ডিবির লোক বলে পরিচয় দেয়। আসলেই তারা ডিবির লোক, নাকি অন্য কেউ- সেটাতো আর বুঝতে পারি না। ধরে নিয়ে কী করে; কে জানে! ধরলে তো আর ছাড়েও না। তাদের জামিনও হয় না। তাই গৃহবন্দীর মতো অবস্থা।” নিরাপত্তাহীনতার কারণে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলেও পুলিশ তা গ্রহণ করতে রাজি হয় না- এমন অভিযোগ করে কোটা আন্দোলনের এই যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, “আমার বাবা সরকারি চাকরি করেন। বলা হচ্ছে সরকারের খেয়ে, সরকারের পরে আপনার মেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। তো আপনার কি আর চাকরিতে থাকা উচিত! আপনার মেয়েকে যদি থামাতে না পারেন, তাহলে কেউ যদি ব্যবস্থা নেয়, বাবা হয়ে আপনি সেটা মেনে নিতে পারবেন কি না সেটা আপনার ব্যাপার। এসব বলে তারা বাবাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করারও হুমকি দিচ্ছে।”

কোটা সংস্কারের দাবিতে এই আন্দোলন শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৮ এপ্রিল রাতভর সহিংস বিক্ষোভের পর লাগাতার সারাদেশে এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে ‘কোটা পদ্ধতি বাতিল’ বলে ঘোষণা দেন। পরদিন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল বের করেন। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হয় আন্দোলনের নেতাদের একের পর এক গ্রেফতারের ঘটনা। এ সব ঘটনা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ দেশবাসীর মনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করে। স্কুল শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের সঙ্গে সেই ক্ষোভই যুক্ত হয়। যা এক ধরনের গণবিস্ফোরণে রূপ নেয় মুহূর্তেই। এমন আন্দোলন সঙ্গত কারণেই সরকারের কাছে ছিল অভাবনীয়। কারণ, তারা বারবার দেশের উন্নয়ন ও তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ নিয়ে ‘বিশে^ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল’ বলে দাবি করে আসছিল। তাদের দাবি, দেশের উন্নয়নে মানুষ আওয়ামী লীগের পক্ষে। বিএনপি-জামায়াত জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কিন্তু যখন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন দেখলো দেশবাসী, তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এর পেছনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি জড়িত। ’

বিশ্লেষকদের মতে, যদি এত বড় আন্দোলন বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধনে বা নেতৃত্বে হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের পক্ষে কারা? মূলত, এই আন্দোলনকারীরা রাজনীতি কী- তা ভালো করে বুঝেও না। বরং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে গণবিস্ফোরণ- কোটা সংস্কার আন্দোলন গায়ের জোরে দমন করার প্রতিফলন। এই আন্দোলনকেও একই পন্থায় দমন সরকারের জন্য নিজ পায়ে কুঠার মারার সমান। কারণ, এই মেধাবী তরুণ প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়েই স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। তাদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। কিন্তু বিষয়টি ক্ষমতাসীনরা ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখায় এ প্রজন্ম এখন আওয়ামী বিরোধী মনোভাব পোষণ করছেন। তরুণদের ভেতরে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ সমর্থক ও বুদ্ধিজীবীরাও অনেকে এখন তাদের পক্ষে নেই।


রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অহিংস আন্দোলনগুলো সহিংস পন্থায় নির্মূলের চেষ্টা সরকারের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি। আপতদৃষ্টিতে এতে সরকারকে সফল মনে হলেও ফের বড় ধরনের জনবিস্ফোরণের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে এসবের মধ্য দিয়েই। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও অহিংস থাকলেও পরবর্তী জনবিস্ফোরণের দৃশ্যপট সহিংস হওয়ার আশঙ্কা করছেন সবাই। সেই আতঙ্ক বিরাজ করছে সরকারের নানা মহলসহ আমলাদের মধ্যেও। জোর করে আন্দোলন বন্ধের রিয়্যাকশন কী হতে পারে তা একটি উদাহরণ দিয়ে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। তিনি তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ হচ্ছে চুলার ওপর ডেকচিতে ফুটন্ত পানির মতো, যাকে যত্নের সঙ্গে লালন করতে হয়। প্রয়োজনের সময় এর তাপ কমিয়ে দিতে হয়। আবার যদি এর ওপর ঢাকনি দিয়ে টাইট করে সিল করে দেয়া হয়, তাহলে এটা একটি বিস্ফোরকে পরিণত হয় যেতে পারে।’

সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কী?
গত ৬ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ছাত্রআন্দোলনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলেচিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘সড়ক পরিবহন আইন’ অনুমোদন নিয়ে আলোচনার সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রসঙ্গটি ওঠে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “এটা এমন কোনো আন্দোলন ছিল না যে এতো বিচলিত হতে হবে। ...ওই রকম কোনো পরিস্থিতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হয়নি। এতেই যারা বিচলিত হয়েছিলো তারা দুর্বল চিত্তের মানুষ। এতো দুর্বল চিত্তের মানুষ হলে চলে না। দুর্বল চিত্তের এই মানুষদের আমার সঙ্গে থাকার দরকার নেই, তারা না থাকাই ভালো।” এর পর ১৬ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

অপরদিকে, গত ৯ আগস্ট ১৪ দলের বৈঠকেও ব্যাপক আলোচনা হয়েছে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্রআন্দোলন নিয়ে। বৈঠকে আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন জোটের অনেক শীর্ষনেতা। তারা আবারও বড় ধরনের জনবিস্ফোরণের আশঙ্কার কথাও জানান। সেই আন্দোলন হিংসাত্মক হবে বলেই ধারণা করছেন ১৪ দলের নেতারা। এ জন্য তারা সরকারকে সচেতন থাকার পাশাপাশি এ ধরনের পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার আহ্বানও জানিয়েছেন। তোপখানা রোডে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শরিকরা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে তাদের ক্ষোভের কথা জানান। আইনে সর্বনিম্ন শাস্তি উল্লেখ না থাকাসহ বেশ কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকার কথাও বলেন শরিকরা। তারা আইনটি চূড়ান্ত করার আগে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। বৈঠকে জেপি’র মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, জাসদ সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া ও কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান নির্বাচনের আগে আরও বড় ধরনের আন্দোলনের আশঙ্কার কথা বলেন।

‘আগামীতে আরও অশুভ ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছি’
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলার সময় ৩, ৪ ও ৫ আগস্ট তিন দিনে অন্তত ৪৩ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তাদেরই একজন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪-এর সিনিয়র সাংবাদিক ফয়সাল হোসেন। যিনি আওয়ামী লীগের বিট কভার করেন। গত ৪ আগস্ট ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ের সামনে লাইভ ব্রডকাস্টের সময় তিনি এবং চ্যানেলের ক্যামেরাপারসন কৃষ্ণ সরকার হামলার শিকার হন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেছেন, “লাইভ চলাকালীন সময় আমার ক্যামেরায় লাথি মারে একদল যুবক। আমি এবং ক্যামেরাম্যান যখন ক্যামেরাটি রক্ষা করতে যাই, তখন তারা আমার ওপর আক্রমণ করে। আমাকে ২০/২৫ জন মিলে একপাশে নিয়ে যায় এবং ক্যামেরাম্যানকে ৫০/৬০ জন মিলে মারধর করে। এর কিছু অংশ লাইভে চলে আসে। এটা যখন তারা বুঝতে পারে তখন তারা ক্যামেরার ক্যাবল খুলে ফেলে এবং ক্যামেরাটি ভেঙে ফেলে।” তিনি মেরুদ-ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। ক্যামেরাপারসনকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

ফয়সাল হোসেনের মতো অন্তত ৪৩ জন সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমের অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থা ‘আর্টিকেল ১৯’। আহতদের মধ্যে চারজন নারী সাংবাদিকও রয়েছেন। আর্টিকেল ১৯ বলছে, তারা ৪৩ জন সাংবাদিক আহত হওয়ার হিসেব পেয়েছেন এবং সরাসরি তাদের সাথে কথা বলেছেন। প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক তাহমিনা রহমান বলছিলেন, এই পরিস্থিতি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।


এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেছেন, “সাংবাদিকদের ক্ষমতা সীমিত। আমরা প্রতিটা হত্যা, নির্যাতনের ঘটনায় প্রতিবাদ করেছি। সরকারের কাছে ধর্না দিয়েছি। অবস্থান ধর্মঘট করছি। অনশন পর্যন্ত করেছি বিচারের দাবিতে। কিন্তু এসব করেও দেখা যাচ্ছে বিচার খুব একটা হয় না।” সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে দোষীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছিল। আল্টিমেটাম শেষ হলেও একজন হামলাকারীকেও গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ বিষয়ে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেছেন, “যুক্তির বাইরে জিনিসটা চলে যাচ্ছে। নৈরাজ্যের দিকে চলে আসছে। আগামীতে আমি আরো অশুভ ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছি। যার একটা বিরাট উদাহরণ হল সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলা। বিশেষ করে নারী সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলা।” আর্টিকেল ১৯ বলছে, এবছর বাক-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ঘটনা ২০১৭ সালকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এদিকে, ছাত্রআন্দোলনে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ফটোসাংবাদিক ড. শহিদুল আলমকে গ্রেফতার ও রিমান্ডের প্রতিবাদে নিন্দার ঝড় বইছে। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “দামি দামি লেখক-সাংবাদিকরা অপরাধ করলে তাদের অপরাধ কী কারণে অপরাধ নয়? লেখার স্বাধীনতা আছে। কিন্তু লেখার মাধ্যমে দামি লেখক-সাংবাদিকরা দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, সে উপলব্ধি কি তাদের থাকবে না? উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে অন্যায় হয়ে যাবে?”

এছাড়া, ছাত্রআন্দোলন চলাকালে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সম্পাদকের বাসায় নৈশভোজ শেষে ফেরার সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা হয়। এসময় তার নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা দু’টি গাড়ি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। একই সময় হামলা চালানো হয় সুজন সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাসভবনেও। যার প্রেক্ষিতে সুজন সম্পাদক থানায় জিডি করেন। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষ করে রাষ্ট্রদূতের গাড়িবহরে হামলায় বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে নিন্দার পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয় সরকারের কাছে। যা সরকারের জন্য বিব্রতকর অবস্থা তৈরি করে। তবে এসব ঘটনা সরকারকে উৎখাতে বিদেশিদের ইন্ধনের অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে।

‘দ্রুতই পরিবর্তন হবে’
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার দ্রুতই পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল বলেছেন, “১৯৮৯ সালে এরশাদ সরকারের আমলে ব্রিটিশ মন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন- তোমার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করে এসেছি। তিনি বললেন- আরো ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকবেন। আমি তখন বললাম, আমি তো তাকে ১৫ সপ্তাহও ক্ষমতায় দেখি না। তখন সেপ্টেম্বর মাস ছিল। আল্লাহর রহমতে ১৫ সপ্তাহের মধ্যেই আমরা মুক্ত হলাম। ১৯৯১ সালে আমি লন্ডনে গেলে ব্রিটিশ ফরেন মিনিস্টার আমাকে দেখে লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে বললেন- তুমি কীভাবে ভবিষ্যদ্বাণী দিলে- ১৫ সপ্তাহও এরশাদ ক্ষমতায় থাকবে না। আর সেটাই হল! তখন মনে মনে হেসে বললাম, মনের জোরে বলেছিলাম।” ড. কামাল বলেন, “বাঙালিদের মধ্যে একটা ব্যাপার আছে। অন্যায় যখন সহ্যসীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন আমরা দাঁড়িয়ে যাই, আর মেনে নেয়া যায় না। পরিবর্তন আনতে হবে। এটা একবার না। বারবার আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি বলেই পেরেছি। সেটা সেই আশির দশকেও পেরেছি। এর আগেও পেরেছি। এখনো পারার মতো সেই অবস্থা আছে।” গণফোরাম সভাপতি মনে করেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে চেষ্টা করলে ‘সরকার পরিবর্তন হবে এবং দ্রুতই হবে’। জাতীয় ঐক্য ইস্যুতে তিনি বলেছেন, “কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া হবে- এই নামটা বলার দরকার নেই। কীসের কামাল হোসেনের নেতৃত্ব? আপনি নিজেই একটা নেতৃত্ব। আপনারা সবাই একজন নেতা। নামটা বলার অর্থ কি? আমি মরে গেলে কি ঐক্য হবে না? তখন কি সবাই পরাধীন থাকবেন? আমি আপনাদের সহকর্মী হিসেবে যতদিন জীবিত আছি আপনাদের সঙ্গে থাকব।”

পর্দার অন্তরালে কী হচ্ছে?
কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি, মামলা প্রত্যাহার, নির্যাতন বন্ধসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন ছাত্র নেতারা। এদিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত যুক্তফ্রন্ট সারা দেশে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। ড. কামাল হোসেন আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। এই মহাসমাবেশে তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন। প্রধান বিরোধীদল বিএনপিও জাতীয় ঐক্যের জন্য মুখিয়ে আছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় ঐক্যের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেছে। তলে তলে সবকিছু পাকাপোক্ত হয়ে আছে। শিগগিরই যে কোনো ইস্যুতে আন্দোলন শুরু হলে সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামবে। যা মোকাবেলা করা হয়তো সরকারের জন্য সম্ভব নাও হতে পারে।

তবে এসব ঘটনা সবই দৃশ্যমান। সরকারের জন্য এর চেয়ে খারাপ খবর অপেক্ষা করছে পর্দার অন্তরালে। সরকারের মন্ত্রীদের আশঙ্কায় সেটিই প্রতীয়মান হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও এখন এমন একটা বিশ্বাস কাজ করছে, কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে এবং তা শিগগিরই। ইতিপূর্বে মনে করা হয়েছিল, নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করার পর পরিস্থিতি অবনতি ঘটবে। বিএনপি-জামায়াতের পরিকল্পনা সেরকমেরই ছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, তার আগেই অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে।
সৌজন্যে : (সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজে ২৭ আগস্ট ২০১৮ প্রকাশিত)

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/১৭২২ঘ.)