ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। উৎপাদন শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে খনির ১৩১৪ নম্বর ফেস থেকে পরীক্ষামূলকভাবে খনি থেকে এ কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কয়লা খনির ১৩১৪ নম্বর ফেসের টানেল নির্মাণের কাজ শেষ করার পর শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টা থেকে উত্তোলন শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই ফেস থেকে ৫২৯ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যে এক হাজার থেকে ১৫০০ টন উত্তোলন হবে। তবে কয়েকদিন পর থেকে ২ হাজার থেকে ২২০০ টন কয়লা উত্তোলন করা যাবে।
এদিকে, কয়লা উত্তোলন শুরু হলেও এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তাই কবে নাগাদ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ফের শুরু হবে এ ব্যাপারে কিছুই জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে, কয়লা উত্তোলন শুরুর খবরে খনি কর্তৃপক্ষ, পিডিবি, পেট্রোবাংলার কর্মকর্তা পর্যায়ে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুন খনির উৎপাদনশীল ১২১০ নম্বর কোল ফেসের উৎপাদনযোগ্য কয়লার মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৬ জুন থেকে খনির কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। একই সময় খনির কোল ইয়ার্ড ও কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার মজুদ শূন্যের কোটায় নেমে আসে।
কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। ফলে উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লো-ভোল্টেজ ও লোডশেডিং সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে।
এরইমধ্যে গত ১৯ জুলাই খনির ইয়ার্ড থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা উধাও হওয়ার ঘটনাটি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদ, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
খনির কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়। খনির এই চার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ ১৯ কর্মকর্তার নামে দুর্নীতি দমন আইনে ২৪ জুলাই পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে বিসিএমসিএল এর ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিছুর রহমান।
মামলাটি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকা'র উপ-পরিচালক শামসুল আলম। দুদক খনির সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ও আমিনুজ্জামান এবং মামলায় অভিযুক্ত ১৯ কর্মকর্তাসহ ২১ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
গত ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দুদক কয়লা খনির সাবেক ও বর্তমান ৩০ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
(জাস্ট নিউজ/একে/১৮৩৫ঘ.)