একমাত্রা দাবি হওয়া উচিত নিরপেক্ষ সরকার

তড়িঘড়ি আরপিও সংশোধন করে আইনকে অস্ত্রে পরিণত করতে চাচ্ছে সরকার: সুজন

তড়িঘড়ি আরপিও সংশোধন করে আইনকে অস্ত্রে পরিণত করতে চাচ্ছে সরকার: সুজন

ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : তড়িঘড়ি করে আরপিও সংশোধনীর মাধ্যমে সরকার আইনকে অস্ত্রে পরিণত করতে চাচ্ছে বলে সন্দেহ পোষণ করছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা মনে করছেন, বিদ্যমান আইন প্রয়োগের প্রতি নির্বাচন কমিশনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। তার ওপর ইভিএম ব্যবহারের প্রতি নির্বাচন কমিশন উৎসাহ দেখাচ্ছে। এজন্য তারা দ্রুত আইন সংশোধন করছে। এতে করে মনে হচ্ছে আইনটি অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টা চলছে।

রবিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্ট নাগরিকরা এসব কথা বলেন। সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

তড়িঘড়ি করে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের যে সংশোধনী প্রস্তাব ভেটিং এর জন্য আইন মন্ত্রণালযে পাঠানো হয়েছে তার সমালোচন করে সুষ্ঠু ও কার্যকর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মূল প্রবন্ধে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে সুজন। প্রস্তাবে বলা হয়, আইনে না ভোটের বিধানের পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে, মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিলের বিধান সংযোজন করতে হবে, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনের ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা ও আয়কর বিবরণী দাখিলের বিধান সংযোজন করতে হবে।

এছাড়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতিটি দলের তৃণমূল পর্যায়ের সদস্যদের সম্মতির ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রার্থীকে দিয়ে একবটি প্যানেল তৈরি এবং এই প্যানেলের মধ্য থেকেই কেন্দ্র কর্তৃক মনোনয়ন চূড়ান্তকরণের বিধান সংযোজন করতে হবে, রাজনৈতিক দলের সকল স্তরের কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও নিয়মিত অপডেট করার বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করতে হবে।

লিখিত প্রবন্ধে সুজন আরো জানায়, রাজনৈতিকজ দলের সকল কমিটিতে ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বিধানটি বিবেচনায় রেখে মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সংখ্যক নারীকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রদানের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করতে হবে, হলফনামার ছকে পরিবর্তন আনতে হবে, হলফনামার তথ্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক যাচাই বাচাই এর বিধান বাধ্যতামূলক করা এবং অসত্য ও বিভ্রাত্যমূলক তথ্য প্রাদনকারীদের শাস্তির আওতায় আনার বিধানটির প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

পাশাপাশি নির্বাচনী ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীদের পোস্টার ছাপানো, হলফনামার তথ্য ভোটারদের মাঝে বিতরণ, প্রার্থী পরিচিতি সভা আয়েঅজন ইত্যঅদি বিধান সংযোজনসহ বিবিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রতি জোর দেয় সুজন।

২০১৭ সালের এসব প্রস্তাবসহ নতুন আরো কিছু বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে সুজন। সুজন জানায়, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও কার্যকর করে গড়ে তুলতে কমিশনারদের নিয়োগে আইন প্রণয়ন করতে হবে, ভোটার তালিকা প্রণয়নে গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিতে হবে, সীমানা পুনর্নিধারণে নির্বাচন কমিশনকে ভূমিকা পালন করতে হবে বলে সুজনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাবেক এমপি এস এম আকরাম, গণসংহতি আন্দোলনেসর সমন্বয়ক জোনায়েত সাকি প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৪৪৩ঘ.)