জি-টোয়েন্টি সম্মেলন

হামবুর্গে বিশ্বনেতাদের আসর

হামবুর্গে বিশ্বনেতাদের আসর

হামবুর্গ থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, ৬ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : শুক্রবার জার্মানির হামবুর্গে শুরু হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রকদের শীর্ষ সম্মেলন বা জি-টোয়েন্টি সামিট। সম্মেলনের আলোচ্যসূচি জুড়ে রয়েছে সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য এবং শরনার্থী ইস্যু।

ইতোমধ্যে জি-টোয়েন্টির শীর্ষ নেতারা হামবুর্গ পৌঁছতে শুরু করেছেন। স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বহনকারী এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানটি হামবুর্গের মাটি স্পর্শ করে। হামবুর্গ এয়ারপোর্ট থেকে একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে সম্মেলন স্থলের দিকে রওনা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে জার্মানির উত্তরাঞ্চলের বন্দর নগরী হামবুর্গ। সম্মেলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শহরটিতে জড়ো হয়েছেন কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী। তারা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোগান বিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন।

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০ হাজারের মতো পুলিশ সদস্য নিয়োগ করেছে দেশটির প্রশাসন।

এদিকে, সম্মেলনের সাইডলাইনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যেকার সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে চলছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা।

শুক্রবার দুপুরে প্রথমবারের মতো এ দুই নেতার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে।

বৈঠকটি এমন একটি সময় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুমুল আকার ধারণ করেছে। তবে বিষয়টি আলোচনায় স্থান পাবে না বলে জানা গেছে।

সিরিয়ার যুদ্ধ এবং ইউক্রেন ক্রাইসিস আসন্ন ট্রাম্প-পুতিন আলোচনায় স্থান পাবে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পৃথক পৃথক বৈঠকের কথা রয়েছে।

বিশ্বের ২০টি ধনী এবং উন্নয়নশীল দেশের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

বিশ্ব নেতারা এমন এক সময়ে এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন, যখন তাদের মধ্যে মতবিরোধ তুঙ্গে। অতীতে জি-টোয়েন্টির কোনো সম্মেলনেই এই অবস্থা পরিলক্ষিত হয়নি।

এদিকে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান চাচ্ছেন হামবুর্গে জি-টোয়েন্টির পাশাপাশি তুর্কিদের অংশগ্রহণে সমাবেশ করতে, যা জার্মানি ইতোমধ্যে নাকচ করে দিয়েছে।

জলবায়ু ইস্যুটি আসন্ন জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে প্রাধান্য পাবে। এতে স্টিলের বাড়াবাড়ি রকমের উৎপাদনের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার যে ঘোষণা ট্রাম্প দিয়েছেন, তারও নড়চড় হবে না। জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল এই প্রসঙ্গে বলেছেন, যেহেতু প্যারিস চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তাই আমরা হামবুর্গে আলোচনা সহজ হবে এটা আশা করতে পারি না।

জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও যৌথ বাণিজ্য, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই, নারী নীতি, স্বাস্থ্যসেবা এবং শরণার্থী ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে এ সম্মেলনে। এসব বিষয়ে অবশ্য ঐকমত্যে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদী স্বাগতিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আঙ্গেলা ম্যার্কেল।

(জাস্ট নিউজ/প্রতিনিধি/একে/১৭৫০ঘ.)