সিএসআইএস'র আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন

‘রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতায় বিশ্ব অলস দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা’

‘রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতায় বিশ্ব অলস দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা’

ওয়াশিংটন থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, ১৯ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ): রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর অভিযানের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, রাখাইনে যে নৃশংসতা চলছে বিশ্ব কেবল তা অলস দাঁড়িয়ে দেখতে পারে না। মিয়ানমারের রাখাইনের নৃশংসতায় যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশটির নাগরিকদের নেতৃত্বদানকারী অংশের সরকার অং সান সূচির সঙ্গে আমি যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। রাখাইনে যা ঘটছে তার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীকেই আমরা দায়ী করবো।

বুধবার ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটিজিক ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস)’র আয়োজনে আগামী একশ বছরে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্পর্ক শীর্ষক আলোচনায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

গত ২৫ অগাস্ট থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গ্রামে গ্রামে ওই অভিযানে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মত অপরাধের অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ছয় লাখে।

টিলারসন বলেন, মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের নিয়ে যে একটি সমস্যা আছে তা ওয়াশিংটন জানে। কিন্তু সেনাবাহিনীকে অবশ্যই সুশৃঙ্খল থাকতে হবে এবং সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে সংযমের পরিচয় দিতে হবে।সে সঙ্গে ওই এলাকায় যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে, যাতে আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেতে পারি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেসব অভিযোগ এসেছে, তা যদি সত্যি হয়, তাহলে কাউকে না কাউকে এর দায় নিতে হবে।মিয়ানমারের ভবিষ্যতকে তারা কোন পথে ঠেলে দিতে চায়, তা এখন তাদের সেনা নেতৃত্বের ওপরেই নির্ভর করছে।

টিলারসন বলেন, ওয়াশিংটন মিয়ানমারকে একটি উদীয়মান গণতন্ত্রের দেশ হিসেবেই দেখে। কিন্তু সেখানে সামরিক-বেসামরিক ক্ষমতা ভাগাভাগির যে মিশ্র সরকার রয়েছে, তার জন্য এই রোহিঙ্গা সঙ্কট একটি অগ্নি পরীক্ষা।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সচেষ্ট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অন্য শরীকদের সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে কাজ করছি। এটা নিয়ে জাতিসংঘও তৎপর রয়েছে। সংস্থাটি নির্দেশনা অনুসারে আমরা কাজ করছি।

আক্রান্ত এলাকায় অবাধ ত্রাণ বিতরণের সুযোগ করে দেবার আহবান জানিয়ে টিলারসন বলেন, সহিংসতায় আক্রান্ত এলাকায় চরম মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় রেড ক্রস, রেড ক্রিসেন্ট এবং জাতিসংঘ সংস্থাসমূহের অবাধ প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে।

অভিযান পরিচালনায় মিয়ানমার বাহিনীকে সংযত ভূমিকা নেবার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আক্রান্ত অঞ্চলে অবশ্যই অবাধ প্রবেশাধিকার দিতে হবে, তাহলেই বুঝা যাবে আসলে কি ঘটেছে। সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি রিপোর্টকে উদৃত করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে যে নিউইয়র্ক টাইমস যে লেখা প্রাকাশ করেছে তা অত্যন্ত মর্মস্পর্শী।

আলোচনায় ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে দেশটির সাথে আগামী একশ বছরকে সামনে রেখে সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিশ্লেষণ তুলে ধরেন ট্রাম্প প্রশাশনের গুরুত্বপূর্ণ এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

(জাস্ট নিউজ/জিইউ/১৮০০ঘ)