খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি রবিবার পর্যন্ত মুলতবি

খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি রবিবার পর্যন্ত মুলতবি

ঢাকা, ৪ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাদন্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা আপিলের শুনানি আগামি রবিবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তাকে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন প্রমুখ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

শুনানিতে এ জে মোহাম্মদ আলী বিচারিক আদালতের রায়ের ২৫৫ পৃষ্ঠা থেকে ৩০০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়ে শোনান এবং সেখান থেকে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি আদালতকে বলেন, ‘১৯৯৩ সালে কুয়েতের আমিরের কাছ থেকে টাকা আসে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে। এই টাকা একটি প্রাইভেট ব্যাংক থেকে অন্য একটি প্রাইভেট ব্যাংকে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে আদান-প্রদান হয়। যা সরকারি কোনো কার্যক্রমের মধ্যে ছিলো না। অথচ দুদক চেক প্রদানের বিষয়ে দুই জায়গায় দু’টি তারিখ দেখিয়েছে। ’

এরপর মোহাম্মদ আলী এই মামলার অন্যতম সাক্ষী ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকীর সাক্ষ্যের অংশ পড়ে শোনান এবং লর্ড ডেনিমের উদাহরণ দেন। তিনি আদালতকে বলেন, ‘এই মামলা যথাযথভাবে দায়ের করা হয়েছে কিনা সেটা দেখার বিষয়।’ এ পর্যায়ে আদালত এ জে মোহাম্মদ আলীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকীর সাক্ষ্য অংশে তো আপনার (খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তির অংশ) কিছু নেই।’ জবাবে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি (খালেদা জিয়ার অভিযোগ) তো কোথাও নেই, তারপরও তো আছি।’

এরপর এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতের কাছে শুনানি করতে সময় চান। তখন আদালত বলেন, ‘ঠিক আছে, আপনাদের রবিবার পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। যেখানে যেখানে আপনার (খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি দেখানোর) বিষয় আছে, সেখানে সেখানে বলবেন। এ পর্যায়ে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাকে তো সবই বলতে হবে। এরপর আদালত এ মামলার কার্যক্রম রবিবার ৭ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করেন।

এর আগে গত ১২, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৯, ৩০, ৩১ জুলাই, ৮ ও ১৩ আগস্ট এবং আজ বৃহস্পতিবারসহ মোট ১৬ দিন বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালাস চেয়ে কারাদন্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিলসহ মোট চারটি আবেদনের ওপর শুনানি হবে। বেগম খালেদা জিয়ার আপিল ছাড়াও এ মামলা শুনানির অপেক্ষায় থাকা আরো তিনটি আবেদন হলো, বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে করা দুদকের আবেদন (রিভিশন), একই মামলার ১০ বছরের কারাদন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমদের করা পৃথক দুটি আপিল।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদন্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই আছেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৫৩৯ঘ.)