জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা শুরু

সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা দাবি

সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা দাবি

ঢাকা, ১৩ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : সরকারের পদত্যাগ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’।

শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এই ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। সংবাদ সন্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিএনপিও অংশ নিয়েছে।

জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের ৭ দফা দাবি হলো:

১. অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকার প্রধানের পদত্যাগ। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি।

২. গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইভিএম বাদ দিয়ে ইসি পুনর্গঠন।

৩. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।

৪. কোটা সংস্কার, নিরাপদ সড়ক চেয়ে যে আন্দোলন হয়েছে সেই আন্দোলনে আটকদের মুক্তি দাবি ও মামলা প্রত্যাহার। পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার।

৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করতে হবে।

৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য দেশীয় ও আন্তজার্তিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের নিশ্চয়তা দেওয়া। পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ রাখতে হবে।

৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

ড. কামালের ঘোষিত ১১টি লক্ষ্য হলো-

১. মুক্তিসংগ্রামের চেতনাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক নির্বাহী ক্ষমতা অবসানের জন্য সংসদে, সরকারে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ, ন্যায়পাল নিয়োগ করা।

২. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ও সৎ-যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক কমিশন গঠন করা।

৩. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা।

৪. দুর্নীতি দমন কমিশনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত করা হবে। দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি কঠোর হাতে দমন ও দুর্নীতির দায়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা।

৫. বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারত্বের অবসান ও শিক্ষিত যুবসমাজের সৃজনশীলতা ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাকে একমাত্র যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা।

৬. জনগণের মৌলিক মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষক-শ্রমিক ও দরিদ্র মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সরকারি অর্থায়নে সুনিশ্চিত করা।

৭. জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতি ও দলীয়করণ থেকে মুক্ত করা।

৮. বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা আনা, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সুষম বণ্টন ও জনকল্যাণমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা।

৯. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গঠন এবং প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা ও নেতিবাচক রাজনীতির বিপরীতে ইতিবাচক সৃজনশীল এবং কার্যকর ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা।

১০. ‘সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’-এই নীতির আলোকে পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা।

১১. প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও সমরসম্ভারে সুসজ্জিত, সুসংগঠিত ও যুগোপযোগী করা।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৯০০ঘ.)