যাওয়ার আগে সরকার একটা মরণ কামড় দেবে: ব্যারিস্টার মঈনুল

যাওয়ার আগে সরকার একটা মরণ কামড় দেবে: ব্যারিস্টার মঈনুল

ঢাকা, ১৭ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর ক্ষমতাসীন সরকার ভয় পেতে শুরু করেছে মন্তব্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেছেন, সরকার জানে এবার কাজটা এতো সহজ হবে না। কিন্তু তারা যাবার আগে একটা মরণ কামড় দেবে।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে মুভমেন্ট ফর জাস্টিস এর আত্মপ্রকাশ ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের উদ্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, গণতন্ত্র মানে মারামারি কাটাকাটি নয়, সুস্থ্য রাজনীতি করেন। নির্বাচনের মাধ্যমে যেই ক্ষমতায় আসবে সেই আসুক।

মইনুল হোসেন বলেন, জনগণের ভোটে হবে না তো কার ভোটে ক্ষমতায় থাকবেন। বর্তমান সরকার কার ভোটে ক্ষমতায় আছে? আমি মনে করি আমাদের সিভিল সার্ভিস, আমাদের পুলিশ, সকলকে সচেতন হতে যে, তাদের ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে।

মইনুল বলেন, স্বাধীন দেশে আজকে কেন আমাদের পুলিশ পিটাবে। পাকিস্তানী পুলিশ আমাদের পিটিয়েছে, মানছি। সে সময় আমার বাবাকে ২২টা বেত্রাঘাত, ২২ বছর জেল দিয়েছিল। আজকে বাংলাদেশে কেন আমাকে ভয় দেখাবে? কথা বলতে পারবো না। আমার পুলিশ কেন আমাকে ভয় দেখাবে? সে কি স্বাধীন দেশের পুলিশ নয়? আমি যেমন স্বাধীন দেশের নাগরিক, পুলিশও স্বাধীন দেশের নাগরিক। সকলেই স্বাধীন দেশের নাগরিক।

তিনি বলেন, এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় আমাদের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য। আমি মনে করি এটা জাতীয় ঐক্য। মামলা দিয়ে রাজনীতি করা, সেটা পাকিস্তানে ছিল না। পাকিস্তানের আমলে রাজনীতিবিদদের সম্মান করা হতো। কিন্তু এখন অল আর ক্রিমিনালস। আমি বলছি না, যে ক্ষমতায় যায়, অপজিশনকে ক্রিমিনাল কেস দেয়। এ রকম কখনও দেখিও নাই। আইনে তো থাকলেই হলো। প্রয়োগ করার দরকার নাই এবং এই আইনটা ভাঙার জন্য আমাদের চিফ জাস্টিসকে অপমান করে, ভয় দেখিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে। এটা কোন কথা হলো। পাকিস্তান আমলেও তো চিফ জাস্টিসকে দেশত্যাগ করান নাই স্বৈরশাসকরা।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কড়া সমালোচনা করে মইনুল হোসেন বলেন, আমার বন্ধু জাফরুল্লাহ সাহেব একটা ভুল করেছে, ক্ষমাও চেয়েছে। আমি তাকে বলেছি এই আর্মি নিয়ে কথা বলেছো কেন? রাজনীতি করো, রাজনীতি নিয়েই থাকো। সে একজন মুক্তিযোদ্ধা, সে বলে আমার আর্মি, কেন বলতে পারব না? আমি বললাম- ঠিক আছে বলো। যাই হোক এক ভুল হয়েছে, সে দুঃখ প্রকাশ করছে। এরপরে যা হলো, আমি নিশ্চই বিশ্বাস করি না এটা আর্মি চিফের চিন্তা-ভাবনা। এটা একটা স্বাধীন দেশ। একটা ভুলভ্রান্তি তো হইতেই পারে। সেই জন্য দেশদ্রোহী মামলা দিতে হবে, এটা কি ঠিক?

‘এটা কেমন কথা, কেমন কথা হলো, সেটাই কষ্ট লাগে। আজকে মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রদ্রোহী হয়ে গেল? একটু সমালোচনা করেছে। এটা যেহেতু আমাদেরই সামরিক বাহিনী, একটু আধটু ভুলভ্রান্তি হতেই পারে।’

দেশে আইনের শাসন নেই উল্লেখ করে মইনুল হোসেন বলেন, রাজনীতি করে তারা এখন আইনের শাসন বোঝে না। তারা শুধু জানে টাকা পয়সা-লুটপাট করতে। এটা হয়েছে গণতন্ত্রে নেতৃত্বের সংকটের কারণে। সব রাজনীতির নির্বাস হলো জাস্টিজ ফর দ্যা পিপল। বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে জাস্টিজ হয় না। আজকে দেশে যা হচ্ছে তা ভয়াবহ।

সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক সানাউল হক নীরুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আ ব ম মোস্তফা আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৯৫০ঘ.)