ইসি মাহবুব তালুকদারকে নিয়ে কিছু ঘটার আশঙ্কা বিএনপির

ইসি মাহবুব তালুকদারকে নিয়ে কিছু ঘটার আশঙ্কা বিএনপির

ঢাকা, ১৮ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : একতরফা নির্বাচনের গোপন মাস্টারপ্লানের বিরোধিতা করায় সরকার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের পদত্যাগ দাবি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, আমার আশঙ্কা হচ্ছে এক তরফা নির্বাচনের বিরোধিতা করায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে নিয়ে সরকার কখন কি ঘটাবে।

বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তারা সরকারের কাছে পরাধীন থাকতে চাচ্ছেন। সরকার যেটা চাইছে সেটাই বলছে তারা।

তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে দিতে হবে এ কথা কোন কমিশনার বললে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কিছু তো দেখছি না। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা মন্ত্রীরা এখন বলছেন এটা চাওয়া সংবিধান সম্মত না। এর আগে প্রধান বিচারপতির কি অবস্থা করেছেন তা জাতি দেখেছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিদের নিশ্চিহ্ন করার রায় ২১ আগস্টের রায়। এই নিশ্চিহ্ন প্রক্রিয়ার অন্যতম টার্গেট বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কোন রকম সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়াই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আক্রোশমূলক এই রায়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির অন্যতম অগ্রনায়ককে প্রহসনের বিচারে সাজা দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা এই রায়ের মাধ্যমে মূল দু’টি লক্ষ্য পূরণ করতে চাচ্ছেন-শেখ হাসিনার শাসনামলে চারিদিকে যে নৈরাশ্যের ছবি মানুষ অবলোকন করছে সেখান থেকে দৃষ্টি ফেরানো আর তারেক রহমানের ওপর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করে জিয়া পরিবারকে হেয় করা।

রিজভী আহমেদ বলেন, মঈন-ফখরুদ্দিন গংদের সহায়তায় ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে দেশনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের নিজ বাসভবন থেকে বের করে দেয়া, বিমান বন্দরসহ বিভিন্ন স্থাপনা থেকে শহীদ জিয়া ও বেগম জিয়ার নাম মুছে ফেলা, হত্যার উদ্দেশ্যে কাওরান বাজারে বেগম জিয়ার গাড়ীবহরে যুবলীগ-ছাত্রলীগের আক্রমণ, বালির ট্রাক দিয়ে চেয়াররপারসনের গুলশান কার্যালয় ও তাঁর বাসভবন অবরুদ্ধ করে রাখা, একের পর এক সাজানো মামলায় বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে ফরমায়েসী রায়ের মাধ্যমে সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা, সবই করা হয়েছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় জিয়া পরিবারকে হেয় করার জন্য।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন গতকাল কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন থেকে পূজামন্ডপ পরিদর্শন করে মোক্তারপুরে অন্য একটি পূজামন্ডপ সাওরাইট বাজারে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ক্যাডাররা রামদা, রড ও ভারী আগ্নেয়াস্ত্রসহ আক্রমণ করে এবং ৮টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এই আক্রমণে আবদুল্লাহ, সুমন, মো. জাহাঙ্গির, আশরাফ, মোতাল্লিব, সজিব, জয়ফুল ও নয়নসহ ১০ জন মারাত্মক আহত হয়। পরে আবদুল্লাহকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি।

এছাড়া, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা তেকানী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোকারম হোসেন মাস্টার, বিএনপি নেতা মো. বিপ্লব হোসেন, মো. শহীদ হোসেন, মো. সিয়াম হোসেন, মো. আপেল মাহমুদ, মো. আতিকুর রহমানসহ ১৭ জনকে একটি ইসলামী জলসা থেকে ফেরার পথে সোনাতলা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি সভাপতি এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকিরসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য, ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডের মিথ্যা অভিযোগে গায়েবী মামলা দায়ের করেছে।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আলতাফ হোসেন বিলালকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

টাংগাইলের জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম, জেলা যুবদলের নেতা মাসুদ তালুকদারসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে গতকাল মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

আমি দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হাসান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, দপ্তর সহ সম্পাদক মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৩০০ঘ.)