বিডিআর বিদ্রোহের সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি : মির্জা আলমগীর

বিডিআর বিদ্রোহের সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি : মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : তৎকালীন বিডিআর (বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন হল রুমে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত বিশেষ জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। দেশের জনগণের জানার অধিকার আছে কেনো সেই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। বরং যারা ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিতে চেয়েছিল যারা দেশের গর্বিত সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে দিতে চাইছিল তারা কারা? কেনো গোয়েন্দা বাহিনী ব্যর্থ হলো কেনো সিদ্ধান্ত নিতে কয়েক ঘন্টা কেটে গেলো তার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বের করা উচিত।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা সবাই দল ও ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষায় দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিচ্ছি। অথচ বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে অত্যন্ত পরিকল্পিত ও সচেতনভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। তাই আমরা যদি সে ষড়যন্ত্র বুঝতে না পারি তাহলে দেশকে রক্ষা করতে পারবো না।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তত নিজেদের বাচার রাস্তা তৈরি রাখতে বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আলাপ আলোচনার উদ্যোগ নিন। দাম্ভিকতা ছেড়ে দিয়ে সংসদ ভেঙ্গে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। সঙ্কট এড়িয়ে যাবেন না, এতে সঙ্কট আরো বাড়বে। নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে নির্বাচনকালিন সে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজ মুহূর্তে মুহূর্তে সংবিধানের দোহাই দেন অথচ বর্তমান সংবিধান যারা যেখানে তৈরি সেখানে ১৫৪ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত, তারা কী করে জনপ্রতিনিধি হয়? এসময় প্রধান বিচারপতির প্রক্রিয়াকে সাংবিধানিক গুরুতর সঙ্কট বলেও দাবি করেন তিনি।

শফিউল আলম প্রধানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা আলমগীর বলেন, প্রধান কখনো অন্যায়ের কাছে আপোস করেনি। আজ যখন স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি বর্তমান সময়ে দেশকে ধ্বংসের দিকে দাঁড় করিয়েছে সেখানে তার মতো নেতার উপস্থিতি খুব দরকার ছিলো।

বাংলাদেশে অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দিন আহমদ বলেন, আগামী নির্বাচন যতদ্রুত এগিয়ে আসছে ষড়যন্ত্র আরো জোরদার হচ্ছে।

তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে বেশকিছু শর্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। প্রায় ২৫০০০ হাজার বিরোধী দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ মামলা হয় তুলে নিতে হবে। একান্তু জরুরি না হলে নির্বাচনকালিন মামলা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। সহায়ক সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক যে নামেই হোক আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। কেননা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো তথাকথিত নির্বাচন আর হতে দেয়া হবে না। শুধু তাই নয় সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলাপ করে নির্বাচনকালিন সময়ে দায়িত্বরতদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ভাগ করে দিতে হবে। তাহলেই নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে।

জাগপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপকা রেহেনা প্রধানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সহসভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১৫২৫ঘ.)